
পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলার চন্ডিপুর মালবাড়ি এলাকায় অতিরিক্ত মাল বহন করায় কয়লা বোঝাই একটি ট্রাকসহ বেইলি ব্রিজ ভেঙে খালে পড়ে গেছে। ফলে কলারন-সন্যাসী-মোরেলগঞ্জ-মোংলা-শরণখোলা রুটসহ গুরুত্বপূর্ণ একাধিক এলাকার সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ সম্পূর্ণরূপে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। গত শুক্রবার (২০ জুন) ভোররাত ৩টার দিকে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
ঘটনার তৃতীয় দিনেও রোববার (২২ জুন) পর্যন্ত শুরু হয়নি ব্রিজের সংস্কার কাজ। খালের নিচে ডুবে থাকা ট্রাকটি এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। এতে করে অন্তত ৬টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। বন্ধ রয়েছে যান চলাচল, ফলে হেঁটেও পারাপার সম্ভব হচ্ছে না।
স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক গিয়াস উদ্দীন হাওলাদার বলেন, “এই ব্রিজ দিয়েই প্রতিদিন শহরে যাই, ছাত্রছাত্রীরা স্কুল-কলেজে যায়। এখন কোনো বিকল্প পথ নেই। রোগী নিয়ে বের হতে হলে বড় বিপদে পড়তে হবে। এই ব্রিজই আমাদের একমাত্র ভরসা।”
স্থানীয় বাসিন্দা শামীম রিগান বলেন, “ব্রিজটি দীর্ঘদিন ধরেই ঝুঁকিপূর্ণ ছিল, কিন্তু সময়মতো সংস্কার হয়নি। আজ আমরা সেই অবহেলার ফল ভোগ করছি। যান চলাচল বন্ধ থাকায় রিকশা ও ভ্যান চালকরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।”
এইচএসসি পরীক্ষার্থী মো. তাওহীদুল ইসলাম জানান, “আজ একটা পরীক্ষা ছিল, অনেক ঘুরে অনেক দুরত্ব পার হয়ে যেতে হয়েছে। আগামী ২৬ তারিখেও পরীক্ষা আছে, ব্রিজটি এর আগে মেরামত না হলে বড় সমস্যা হবে।”
ঘটনাস্থলে কাজ করা শ্রমিক মিজান সরদার বলেন, “গতকাল সারাদিন কাজ করেছি, আজ এখনো কিছু করতে পারিনি। ট্রাকটি এখনও খালেই পড়ে আছে। ট্রাক মালিক বলেছেন, তারা তাদের নিজস্ব ক্রেন দিয়ে ট্রাক তুলবেন, কিন্তু এখনো কোনো অগ্রগতি নেই।”
ব্রিজ মেরামতের ঠিকাদার শাহ জামাল জানান, “আমরা ট্রাকটি তোলার অপেক্ষায় বসে আছি। এটি উঠলেই কাজ শুরু করতে পারবো।”
এ বিষয়ে পিরোজপুর সড়ক ও জনপদ (সওজ) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী তানভীর আহমেদ বলেন, “ব্রিজের ভাঙা অংশ এবং পানিতে ডুবে থাকা পাত সরানো হয়েছে। তবে ট্রাকটি এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। ট্রাক মালিক নিজস্ব ক্রেন দিয়ে তা তুলবেন। ট্রাক তোলা সম্ভব হলে এক সপ্তাহের মধ্যে ব্রিজটি মেরামত করা সম্ভব হবে।”
এদিকে দুর্ঘটনার পর থেকে পুরো এলাকাজুড়ে দেখা দিয়েছে আতঙ্ক ও চরম অসহায়ত্ব। এলাকাবাসীর একটাই দাবি যত দ্রুত সম্ভব ব্রিজটি সংস্কার করে যোগাযোগ ব্যবস্থা সচল করা হোক।
মিমিয়া