
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার সাতবাড়ীয়া গ্রামে মাত্র ৭ বছর বয়সে সম্পূর্ণ কুরআন হেফজ করে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে মুহাম্মাদ বিন আব্দুল্লাহ। প্রথম শ্রেণিতে পড়ুয়া এই ক্ষুদে শিক্ষার্থী মাত্র ৯ মাসে কুরআন হেফজ সম্পন্ন করেছে বলে নিশ্চিত করেছেন তার পরিবার।
মুহাম্মাদ সাতবাড়ীয়া ফায়ার সার্ভিস মোড় এলাকার মুফতি আব্দুল্লাহ বিন আমজাদ ও হাফেজা-আলেমা মাসুমা জান্নাত দম্পতির সন্তান। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে হেফজ শুরু করে সে এবং ২০২৫ সালের মে মাসে তা সম্পন্ন করে। মুহাম্মাদের মা ও নানি দুজনেই একজন হাফেজা ও আলেমা। তারা স্থানীয় মাছুমা জান্নাত মহিলা মাদরাসা পরিচালনা করেন।
হেফজ সম্পন্নের বিষয়ে মুহাম্মাদ জানায়, “প্রতিদিন ৫ লাইন করে মুখস্থ করতাম। একটি পৃষ্ঠা শেষ হলে তা রিভাইজ করতাম। দিনে ১ থেকে ৪ পৃষ্ঠা পর্যন্ত পড়তাম। আমার নানুমনি আমাকে পড়াতেন, সবচেয়ে বেশি অবদান তারই।”
মুহাম্মাদের মা বলেন, “ওর আড়াই মাস বয়সে মুখে প্রথম উচ্চারিত শব্দ ছিল ‘আল্লাহ’। তখন থেকেই হেফজের আগ্রহ জাগে। সাড়ে ৫ বছর বয়সে আরবি কায়দা শেখে এবং মাত্র ৬ মাসে নাজেরা সম্পন্ন করে। এরপর নানির তত্ত্বাবধানে হেফজ শুরু হয়।”
তার বাবা মুফতি আব্দুল্লাহ বলেন, “আমার স্ত্রী ৭ বছর বয়সে ১১ মাসে হেফজ সম্পন্ন করেছিল। আমাদের সন্তান দুই মাস আগেই হেফজ শেষ করে আমাদের গর্বিত করেছে। এটা আল্লাহর এক বিশেষ নিয়ামত।”
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, মুহাম্মাদের নানা হাফেজ মাওলানা মুফতি গোলাম কিবরিয়া একজন সম্মানিত ইসলামি ব্যক্তিত্ব। পরিবারে প্রায় ১৫ জন হাফেজ রয়েছেন।
নানী রাবেয়া বসরী বলেন, “মুহাম্মাদ অত্যন্ত মনোযোগী ও প্রখর মেধার অধিকারী। অল্প সময়ে এতো বড় সাফল্য সত্যিই বিস্ময়কর। আমরা চাই, সে বড় হয়ে কুরআনের আলো ছড়িয়ে দিক দেশ-বিদেশে। তাকে বিশ্বজয়ী হাফেজ হিসাবে দেখতে চাই। সবাই মুহাম্মাদের জন্য দোয়া করবেন।"
এই সাফল্যের মাধ্যমে মুহাম্মাদ কেবল তার পরিবার নয়, পুরো এলাকাবাসীর গর্ব হয়ে উঠেছে। এখন তার লক্ষ্য—একজন হাফেজ, আলেম ও মুফতি হিসেবে নিজেকে গড়ে তোলা।
রাজু