
রাজধানীর নিউ ইস্কাটনের একটি প্রতিষ্ঠানের কার্যালয় আঙ্গিনায় গাছে ঝুলে থাকা গুচ্ছ গুচ্ছ কাঁঠাল
চলছে দেশি ফলের ভরা মৌসুম। সেই সুবাদে রাজধানীজুড়ে যেন বসেছে ফলের মেলা। তাই তো চলতি পথে নজরে পড়ছে জিভে জল আনা রকমারি রসালো ফল। আম-জাম থেকে কাঁঠাল, লিচু কিংবা লটকন, তালের শ্বাসসহ বাহারি ফলে সয়লাব ঢাকা শহর। যে কোনো বাজার থেকে ফলের দোকান, ফুটপাত থেকে মহল্লার অলি-গলিতে মিলছে বাহারি ফল। দামও নাগালে থাকায় নাগরিকরাও স্বাচ্ছন্দ্যে ফলের স্বাদ গ্রহণ করছেন। আর এসব ফলের সবটাই আসে ঢাকার বাইরে থেকে।
কারণ, অট্টালিকার ভিড়ে যেখানে আকাশ হারিয়ে যায় সেখানে ফলদ বৃক্ষের সন্ধান পাওয়া দুরূহ। মূলত রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, সাতক্ষীরা, দিনাজপুর, গাজীপুরসহ বিভিন্ন জেলায় উৎপন্ন ফলসমূহ চাহিদা মেটাচ্ছে ঢাকাবাসীর। আর দেশজ ফলের এই ভরপুর মৌসুমে বৃহস্পতিবার বিকেলে ব্যতিক্রমী দৃশ্যের দেখা মেলে ঢাকার নিউ ইস্কাটনে। এই অভিজাত এলাকার ৫০নং হোল্ডিংয়ের একটি ওষুধ কোম্পানির কার্যালয়ের বিস্তৃত প্রাঙ্গণের এক বৃক্ষে ঝুলছে একাধিক কাঁঠাল। গাছে নিচ থেকে ওপর পর্যন্ত ছেয়ে গেছে জাতীয় ফলে। একেবারে মগডাল থেকে গোড়া অবধি কাঁঠালের ছড়াছড়ি।
রাস্তার পাশের কার্যালয়টির দুয়ার খোলা থাকায় ওই পথে চলাচলকারীদের অনেকেই উৎসাহ নিয়ে দেখছেন বৃক্ষটি। আর যারা সেটি দেখছেন তাদের নয়ন যুগল আটকে যাচ্ছে গাছের গোড়ায়। সেখানে রীতিমতো পুষ্পগুচ্ছের মতো উঁকি দিচ্ছে কাঁঠালগুচ্ছ। সংখ্যাটি এতই বেশি যে গুনেও যেন শেষ করা যায় না। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শুধু গাছের গোড়ার সেই গুচ্ছেই এই মৌসুমে জন্মেছে ৩৬ কাঁঠাল। ব্যাপক পুষ্টিসমৃদ্ধ ফলটির অনেকগুলোই লেপটে আছের মাটির সঙ্গে।
সব মিলিয়ে গাছটিতে এবার ধরেছে ৮০টির বেশি ফল। সেগুলো পাকলেই প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা থেকে কর্মচারীরা পরম তৃপ্তি নিয়ে স্বাদ নিচ্ছেন কাঁঠালের। সুমিষ্ট হওয়ায় বড় কর্তারা আবার বাড়িতেও নিয়ে যাচ্ছেন। ২০০৪ সাল থেকে প্রতিবছরই গাছটিতে প্রচুর ফল ধরে। এ ছাড়া ওই আঙিনায় রয়েছে আম, জামরুল, বারোমাসি কামরাঙ্গা ও বিলম্বী ফলের গাছ। রয়েছে পুরো প্রাঙ্গণে সুবাস ছড়িয়ে দেওয়া বকুল ফুল গাছ। সব মিলিয়ে কংক্রিটের
এই নগরীতেও একখ- স্বস্তির সন্ধান দেয় ৫০ নং নিউ ইস্কাটন।
করোনা প্রতিরোধে প্রয়োজন সতর্কতা ॥ নতুন করে আবার চোখ রাঙাচ্ছে করোনাভাইরাস। ইতোমধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে ভাইরাসটির নতুন উপধরন। যদিও এবারের পরিস্থিতি ২০২০ সালের মতো ভয়াবহ নয়। তবে দেশের সর্বোচ্চসংখ্যক মানুষের বসবাস ঢাকায় হওয়ায় ঢাকাবাসীকে হতে হবে সচেতন। সচেতনতার মাধ্যমেই গড়ে তুলতে হবে প্রতিরোধ। প্রায় দুই কোটি মানুষের এই জনবহুল শহরে সুস্থ থাকতে হলে মেনে চলতে হবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ১১ দফা নির্দেশনা।
তাই জনসামগম এড়িয়ে চলার পাশাপাশি অবশ্যই মাস্ক পরিধান করতে হবে। হাঁচি বা কাঁশির সময় টিস্যু বা রুমাল দিয়ে নাক-মুখ ঢেকে রাখতে হবে। ঘন ঘন সাবান ও বা স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলতে হবে। অপরিষ্কার হাতে নাক, চোখ, মুখ স্পর্শ করা যাবে না। আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শ এড়িয়ে চলার পাশাপাশি ৩ ফুট দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। জ্বর, কাশি কিংবা শ্বাসকষ্ট হলে সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত ঘরে থাকতে হবে।
এই সতর্কতাসমূহ অবলম্বন নিজের সুরক্ষার পাশাপাশি অপরকে দেবে নিরাপত্তা। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ১ জানুয়ারি থেকে ১৮ জুন পর্যন্ত দেশে চার হাজার ২৭৭ জনের নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয়েছেন ৩৫৯ জন। শনাক্তদের মধ্যে মারা গেছেন সাতজন।
নীরবতা ভেঙে শিল্পাঙ্গনে সরবতা : ঈদুল আজহার লম্বা ছুটিতে রাজধানীর শিল্পাঙ্গনেও নেমে এসেছিল নীরবতা। নাট্যমঞ্চ থেকে প্রদর্শনালয় কিংবা সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মিলনায়তনÑ সবকিছুই ছিল বন্ধ। সেই বন্ধ্যত্ব ঘুচে পুনরায় সচল হয়েছে ঢাকা শিল্পভুবন। খুলে গেছে শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার তিনটি মিলনায়তন। সেখানে চলছে বিভিন্ন নাট্যদলের প্রদর্শনী। বৃহস্পতিবার নাট্যশালার মূল হলে মঞ্চস্থ হয়েছে শিল্পকলা একাডেমি প্রযোজিত নাটক ‘দেয়াল জানে সব’।
আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় নাট্যশালার এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে মঞ্চস্থ হবে নাট্যদল দৃশ্যপটের নাটক ‘সক্রেটিসের জবানবন্দী’। এদিন সন্ধ্যায় বেইলি রোডের মহিলা সমিতির নীলিমা ইব্রাহিম মিলনায়তনে মঞ্চস্থ থিয়েটারের দর্শকনন্দিত নাটক ‘লাভ লেটার’। ত্রপা মজুমদার নির্দেশিত পাঠাভিনয়ের প্রযোজনাটিতে অভিনয় করেছেন প্রখ্যাত দুই অভিনয়শিল্পী ফেরদৌসী মজুমদার ও রামেন্দু মজুমদার। এদিকে আজ থেকে ধানমন্ডির সফিউদ্দীন শিল্পালয়ে শুরু হচ্ছে ‘রঙ রেখা বর্ণে ছন্দেÑ কাটবে দিন মঙ্গলালোকে’ শীর্ষক প্রদর্শনী।
বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিল্পীদের সৃজিত শিল্পকর্ম সজ্জিত শিল্পায়োজনটি চলবে ২৩ জুন পর্যন্ত। শিল্পগুরু সফিউদ্দীন আহমেদের ১০৩তম জন্মবার্ষিকী উদ্যাপনের অংশ হিসেবে এই প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। এদিকে লালমাটিয়ার কলাকেন্দ্র গ্যালারিতে চলছে স্থপতি আবদুল্লাহ মোতালেব ও চিত্রশিল্পী ওয়াকিলুর রহমানের যৌথ প্রদর্শনী ‘আর্ট টেক্সচার’।