
ছবিঃ সংগৃহীত
জমি কেনাবেচার পর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলোর একটি হলো নামজারি বা মিউটেশন। অনেকেই ধারণা করেন, এসিল্যান্ড অফিসে আবেদন করলেই নামজারি হয়ে যায়। কিন্তু প্রকৃত চিত্রটা এর চেয়ে অনেক জটিল এবং পদ্ধতিগত।
নামজারির মূল কাজটি করে ইউনিয়ন ভূমি অফিস, পৌর এলাকায় পৌর ভূমি অফিস বা সংশ্লিষ্ট ভূমি সার্কেল অফিস। এসিল্যান্ড (সহকারী কমিশনার, ভূমি) কেবল শুনানি পরিচালনা ও অনুমোদন দেয়ার দায়িত্ব পালন করেন।
নামজারির আবেদন করার আগে যেসব বিষয় যাচাই করে স্থানীয় ভূমি অফিস, তা তুলে ধরা হলো—
🔹 রেকর্ড যাচাই:
যিনি জমি হস্তান্তর করছেন, তার নামে সিএস, এসএ, আরএস, বিএস বা বিআরএস রেকর্ডে মালিকানা থাকতে হবে। প্রাথমিকভাবে এটি যাচাই করা হয়।
🔹 ওয়ারিশ সম্পর্কের প্রমাণ:
যদি হস্তান্তরকারী নিজে রেকর্ডিয় মালিক না হন, তবে তাকে রেকর্ডধারীর বৈধ ওয়ারিশ হতে হবে। এজন্য প্রয়োজন হয় ওয়ারিশ সনদ ও বণ্টননামা।
🔹 প্রকৃত দখলদারের যাচাই:
শুধু দলিল ও রেকর্ড থাকলেই হবে না— প্রকৃত দখল কার, সেটিও মাঠপর্যায়ে তদন্ত করে দেখা হয়। দখল না থাকলে নামজারি আটকে যেতে পারে।
🔹 জমির পরিমাণ যাচাই:
যদি হস্তান্তরকারী তার মালিকানার চেয়ে বেশি জমি হস্তান্তর করেন, তাহলে কেবল তার অংশটুকুই নামজারির আওতায় আসবে।
🔹 ওয়ারিশদের সম্মতি:
একাধিক ওয়ারিশ থাকলে, তাদের সম্মতি ছাড়া সম্পূর্ণ জমি হস্তান্তর করলে নামজারি বাতিল হতে পারে। তাই জমি কেনার সময় সকল ওয়ারিশের সম্মতি যাচাই করা জরুরি।
🔹 মামলা ও নিষেধাজ্ঞা:
জমি নিয়ে আদালত মামলার জেরে নিষেধাজ্ঞা, বা সরকারের দখল দাবি থাকলে নামজারি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে। এসব তথ্যও সংশ্লিষ্ট দপ্তর যাচাই করে।
সুতরাং, জমি কেনার সময় দলিল ও রেকর্ড যাচাইয়ের পাশাপাশি দখল, ওয়ারিশ, বিরোধ ও আইনি জটিলতার বিষয়গুলো নিশ্চিত হওয়া জরুরি। নামজারির ক্ষেত্রে সচেতন না হলে ভবিষ্যতে মালিকানা নিয়ে বড় ধরনের জটিলতায় পড়ার আশঙ্কা থাকে।
👉 পাঠকের জন্য পরামর্শ: জমি কেনার আগে অভিজ্ঞ আইনজীবী ও ভূমি অফিসের পরামর্শ গ্রহণ করে সকল প্রক্রিয়া নিশ্চিত হওয়া বুদ্ধিমানের কাজ।
আলীম