
ছবিঃ সংগৃহীত
বিয়ের ঘটকালির উপহার হিসেবে লুঙ্গি দেওয়ার কথা বলে ৬৫ বছর বয়সী এক বৃদ্ধকে বাড়িতে ডেকে নিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে বর্বরভাবে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। বগুড়ার শেরপুর উপজেলার সুঘাট ইউনিয়নের সূত্রাপুর গোয়ালপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। গত রবিবার মারধরের শিকার ব্যক্তি মজিবর শেখ (৬৫) শেরপুরের ওমরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা।
ঘটনার পরদিন রাতে তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে মঙ্গলবার বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর ছোট ভাই নজরুল শেখ চারজনের বিরুদ্ধে শেরপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। পুলিশ জানায়, অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে এবং প্রাথমিক অনুসন্ধানে মারধরের সত্যতা মিলেছে।
স্থানীয় সূত্র ও অভিযোগে জানা যায়, গত ৯ জুন সুঘাট ইউনিয়নের সূত্রাপুর গোয়ালপাড়া গ্রামের জহুরুল ইসলামের মেয়ে সুমাইয়া খাতুনের (২১) সঙ্গে বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার ঘাসুরিয়া গ্রামের যুবক মুন্না (২৮)-এর বিয়ে হয়। ঘটক ছিলেন মজিবর শেখ। বিয়ের দিনই কনে শ্বশুরবাড়িতে যান।
বিয়ের পর থেকেই নবদম্পতির মধ্যে কলহ শুরু হয় বলে জানায় কনের পরিবার। এর জেরে ঘটককে দায়ী করে রবিবার সন্ধ্যায় ‘উপহার’ দেওয়ার নাম করে মজিবর শেখকে জহুরুল ইসলামের বাড়িতে ডেকে নেওয়া হয়। অভিযোগ রয়েছে, এরপর তাকে একটি গাছের সঙ্গে বেঁধে গরুর গোবর মাখানো স্যান্ডেল ও লাঠি দিয়ে এক ঘণ্টা ধরে মারধর করা হয়।
মজিবর শেখ বলেন, “কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই আমাকে বেঁধে পেটাতে শুরু করে। হাতে, পায়ে, মাথায় লাঠির আঘাত করে। এতটুকু বয়সে এমন লাঞ্ছনার শিকার হব, ভাবিনি।”
তার ছেলে সোনাউল্লাহ শেখ বলেন, “আমার বাবা কোনো পেশাদার ঘটক নন। তিনি বিনা পারিশ্রমিকে দুই পরিবারের মধ্যে সুসম্পর্ক তৈরি করেছিলেন। অথচ তাকে অপমান করে মারধর করা হয়েছে।”
এ বিষয়ে কনের বাবা জহুরুল ইসলাম বলেন, “বিয়ের পর মেয়েকে শ্বশুরবাড়িতে কেউ মেনে নিচ্ছে না। ঘটক বলেছিলেন ছেলে ও তার পরিবার ভালো। তাই আমাদের ক্ষোভ থেকেই একটু মারধর করা হয়েছে।”
শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঈন উদ্দিন বলেন, “এ ঘটনায় বুধবার একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
মারিয়া