
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (শাকসু) শিক্ষার্থীদের অধিকার, কল্যাণ ও গণতান্ত্রিক চর্চার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম। তবে ১৯৯৮ সালের পর গত ২৭ বছর ধরে শাকসু নির্বাচন না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা কার্যকর নেতৃত্ব এবং সংগঠিত কণ্ঠস্বর থেকে বঞ্চিত হয়ে পড়ছে।
বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রথম শাকসু নির্বাচন হয় ১৯৯১ সালে। পদার্থবিদ্যা, রসায়নবিদ্যা ও অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থীরা সরাসরি ভোট প্রদান করেন। ওই নির্বাচনে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ৭ জন, ছাত্রশিবিরের ১ জন এবং ছাত্র ইউনিয়নের ১ জন প্রার্থী জয়ী হন। সাধারণ সম্পাদক (জিএস) হিসেবে নির্বাচিত হন পদার্থবিদ্যা প্রথম বর্ষের ছাত্র মোহাম্মদ নূরুজ্জামান (জামান)।
প্রথম দুই শাকসুতে সহ-সভাপতি (ভিপি) পদ না থাকলেও তৃতীয় শাকসুতে এ পদ অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ওই নির্বাচনে ভিপি হন আব্দুছ ছালাম, এবং জিএস নির্বাচিত হন ছাব্বির চৌধুরী। পরবর্তী শাকসু নির্বাচনে ভিপি হিসেবে দেলওয়ার ইসমাইল টিটু, আশরাফুল আজিম রুবন ও কাবেরী নির্বাচিত হন। সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন কামরুল ইসলাম, বদরুদ্দোজা শাহীন ও মামুন।
১৯৯১ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত মোট ৬ বার শাকসু নির্বাচন হলেও এরপর গত ২৭ বছরে আর কোনো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। ফলে—
-
ছাত্রছাত্রীদের দাবি-দাওয়ার কার্যকর কোনো প্ল্যাটফর্ম নেই
-
বিশ্ববিদ্যালয়ে গণতান্ত্রিক পরিবেশ দিন দিন ক্ষয়িষ্ণু হয়ে পড়েছে
-
যোগ্য ও মেধাবী নেতৃত্ব গড়ে উঠছে না
-
সাংস্কৃতিক, ক্রীড়া ও সামাজিক কর্মকাণ্ডে শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্ততা কমে গেছে
-
শিক্ষা, আবাসন ও নিরাপত্তা ইস্যুতে শিক্ষার্থীদের পক্ষে কেউ শক্ত অবস্থান নিতে পারছে না
এ বিষয়ে শাকসুর প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক মো. নূরুজ্জামান জামান বলেন, “সুস্থ গণতান্ত্রিক পরিবেশে রাজনৈতিক চর্চা এবং যোগ্য নেতৃত্ব গড়ে তুলতে নিয়মিত শাকসু নির্বাচন অত্যন্ত জরুরি।”
তিনি আরও বলেন, “নিয়মিত ছাত্র সংসদ নির্বাচন একদিকে যেমন শিক্ষার্থীদের দাবি আদায়ের কার্যকর প্ল্যাটফর্ম তৈরি করে, অন্যদিকে এটি ভবিষ্যতের যোগ্য জাতীয় নেতৃত্ব তৈরিতে সহায়ক ভূমিকা রাখে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক উন্নয়ন এবং শিক্ষার্থীদের স্বার্থরক্ষায় শাকসু নির্বাচন পুনরায় চালুর বিষয়টি এখন সময়ের দাবি বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
মিমিয়া