বাবা বিচার করায় প্রতিশোধে ছেলেকে বিষ ও এসিডে হত্যা করলো চোরচক্র

কুমিল্লায়  চুরির বিচার করায় প্রতিশোধ হিসেবে চোরচক্র বিচারকের কিশোর ছেলে হোসাইনকে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

জেলার  বুড়িচং উপজেলার শিকারপুর গ্রামে নির্মম এ ঘটনা ঘটে।   মুদি দোকানে চুরির ঘটনায় গ্রাম্য সালিশে বিচার করায় প্রতিশোধ হিসেবে  ওই কিশোরকে বিষ খাইয়ে ও এসিড দিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে অভিযুক্ত চোর ও তার ভাইয়ের বিরুদ্ধে।

এ ঘটনায় নিহত কিশোরের মা শাহানারা আক্তার বাদী হয়ে বুড়িচং থানায় দুইজনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।

নিহত কিশোর হোসেইন (১৪) বুড়িচং উপজেলার মোকাম ইউনিয়নের শিকারপুর গ্রামের বাসিন্দা ও স্থানীয় শিকারপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। সে গ্রাম্য বিচারক আবু তাহেরের ছেলে।

বুড়িচং থানার  ওসি আজিজুল হক বুধবার (১৮ জুন )বিষয়টি নিশ্চিত করেন। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়, গত ৩১ মে বিকেলে বিদ্যালয় ছুটির পর হোসেইন বাড়ি ফেরার পথে গ্রামের এক নির্জন স্থানে ডেকে নেয় সাইমুন  ও তার ভাই আলাউদ্দিন । এরপর তাকে বেঁধে জোরপূর্বক বিষ খাওয়ানো হয় এবং পাশবিকভাবে তার অন্ডকোষে ঢেলে দেওয়া হয় এসিড। এতে তার অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটে।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, প্রায় দুই মাস আগে একই গ্রামের মইনুল হোসেনের মুদি দোকানে চুরির ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত সাইমুনের বিরুদ্ধে চুরির  প্রমাণ মেলায় গ্রাম্য সালিশের বিচারক নির্যাতনের শিকার কিশোর হোসাইনের বাবা আবু তাহের তাকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে সাইমুন ও তার ভাই আলাউদ্দিন। বাবার বিচারকার্যে ক্ষুব্ধ হয়ে প্রতিশোধ হিসেবে নিষ্পাপ হোসেইনকে বেছে নেয়।  

গুরুতর অবস্থায় হোসেইনকে কুমিল্লা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। টানা ১৮ দিন আইসিইউতে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে বুধবার (১৮ জুন)  শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করে সে।

হাসপাতালের মেডিসিন কনসালটেন্ট (আইসিইউ) ডা. অরূপ কুমার রায় সাংবাদিকদের  জানান, "শিশুটির গলা ফুলে গিয়েছিল বিষক্রিয়ায়, শ্বাসকষ্টে ভুগছিল। তার অন্ডকোষ ঝলসে গিয়েছিল সম্পূর্ণ। সব চেষ্টা ব্যর্থ করে সে আজ মারা গেল।"

১৪ বছরের ছেলেকে হারিয়ে মূর্ছা যাচ্ছেন বাবা আবু তাহের ও মা শাহানারা। হাসপাতালে স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে পরিবেশ।

বুড়িচং থানার ওসি আজিজুল হক  জানান, "নিহতের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে দুইজনকে আসামি করে মামলা নেয়া হয়েছে। আসামিদের ধরতে অভিযান চলছে।"

কুমিল্লার জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাশেদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, "এই জঘন্য ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার জন্য পুলিশ সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছে।"