ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১১ জুন ২০২৫, ২৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

দেশে হঠাৎ করেই বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা, পরীক্ষা করতেই পদে পদে ভোগান্তি

প্রকাশিত: ১১:২২, ১০ জুন ২০২৫; আপডেট: ১১:২৩, ১০ জুন ২০২৫

দেশে হঠাৎ করেই বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা, পরীক্ষা করতেই পদে পদে ভোগান্তি

ছবি:সংগৃহীত

বাংলাদেশে আবারও দেখা দিয়েছে করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি। বিশেষ করে রাজধানীর কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালগুলোতে বয়স্ক ও বহু রোগে আক্রান্ত রোগীদের ভর্তির সংখ্যা বাড়ছে। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নতুন ধরনের করোনাভাইরাসে মৃত্যুর ঝুঁকি কম হলেও প্রবীণ ও ক্রনিক রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য এটি গুরুতর হতে পারে। এমন প্রেক্ষাপটে তাঁরা আবারও টিকাদান কর্মসূচি চালুর পরামর্শ দিয়েছেন।

 

 

ঢাকার মহাখালী কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালের আইসিইউ বিভাগে বর্তমানে ভর্তি রয়েছেন তিনজন রোগী। তাঁদের সবার বয়স ৬০ বছরের ঊর্ধ্বে। দুজন পুরুষ ও একজন নারী, যাঁরা গাইবান্ধা, কুমিল্লা ও বরিশাল জেলার বাসিন্দা। স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে তাদের পরিচয় গোপন রাখা হয়েছে। স্বজনরা জানান, তারা কেউ ডায়াবেটিস, কেউ হৃদরোগ বা লিভারের জটিলতায় ভুগছিলেন। ঢাকার অন্য কোন হাসপাতাল ভর্তি না নেওয়ায় শেষ পর্যন্ত কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। একজন রোগীর স্বজন বলেন,

“জ্বর ছিল আট-নয় দিন। তারপর পায়খানা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। ভুলে যাচ্ছিল সবকিছু। পরীক্ষা করে দেখা যায় পজিটিভ। কিন্তু ওষুধ নাই, মেডিসিন নাই, এমন অবস্থায় সরাসরি এখানে নিয়ে আসতে হলো।”

 

 

করোনার উপসর্গ দেখা দিলে এখনো রোগীদের কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে রেফার করছেন বিভিন্ন হাসপাতালের চিকিৎসকরা। তবে করোনা পরীক্ষা করতে গিয়ে রোগীদের পদে পদে ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। বিভিন্ন জায়গায় পরীক্ষার ব্যবস্থা নেই বা সীমিত। জানা গেছে, বর্তমানে মাত্র দুটি ল্যাব—আইডিয়ার ও আরেকটি পরীক্ষাগার—চাহিদা অনুযায়ী পরীক্ষা করছে। অধিকাংশ হাসপাতালে এখনো নেই প্রয়োজনীয় রিএজেন্ট বা কিট।

 

 

স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, ৫ জুন পর্যন্ত দেশে নতুন করে একজন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। যদিও প্রতিদিনই আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। ২০২৫ সালের মে মাসে ১৪০৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১৩৪ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা জানান, বর্তমানে দেশে পাওয়া যাচ্ছে অমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের সাব-ভ্যারিয়েন্ট BA.2.86, যেটি আগের তুলনায় দ্রুত ছড়াতে সক্ষম।

 

 

বিশেষজ্ঞদের মতে, পূর্বের ভ্যাকসিনগুলো কার্যকর হলেও এর প্রতিরোধ ক্ষমতা সর্বোচ্চ ছয় মাস পর্যন্ত স্থায়ী ছিল। এর মধ্যে ভাইরাস নিজেকে রূপান্তর করে ফেলে, ফলে আগের টিকার কার্যকারিতা কমে যায়। এক জন বিশেষজ্ঞ বলেন,

“আপনি যে অংশের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছেন, ভাইরাস সেই অংশটাই পাল্টে ফেলেছে। ফলে নতুন ধরনের ভাইরাস আবারও সংক্রমণ ঘটাতে সক্ষম হচ্ছে।”

ভারতে ইতোমধ্যেই অমিক্রনের বিভিন্ন উপধরণ যেমন LF.7 এবং SFG চিহ্নিত হয়েছে। বাংলাদেশেও এমন নতুন ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন বিশেষজ্ঞরা।

 

 

সূত্র:https://youtu.be/byaNBp0Bgw0?si=VNVosbfe3DNpS_eI

ছামিয়া

×