
ঈদের সকালে যখন শহর ও গ্রামে বাঁধভাঙা আনন্দে মেতে ওঠে মানুষ, চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে কোরবানির ধূপ-ধোঁয়া আর খুশির কলরব, ঠিক তখনও দেশের সীমান্তরেখায় একঝাঁক মানুষ দাঁড়িয়ে থাকে নীরব অথচ অটল প্রহরায়। তাঁরা বিজিবি—বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড, সীমান্তের নিরলস প্রহরী।
চামড়া পাচার, বিশেষ করে কুরবানির ঈদে, সীমান্তবর্তী অঞ্চলে একটি পুরনো দুর্ভাবনার নাম। কুরবানির পশুর চামড়া—যা দেশের অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান—তা যেন পাচার হয়ে দেশের সীমানা ছাড়াতে না পারে, সে দিকেই এবার কঠোর নজর বিজিবির।
এ যেন এক নিঃশব্দ যুদ্ধ। কাঁটাতারের এই পাশে যখন উৎসবের আমেজ, ওপাশে তখনও গোপনে সক্রিয় পাচারচক্র। কিন্তু তাদের প্রতিপক্ষে রয়েছে এক সুশৃঙ্খল, সতর্ক বাহিনী—যারা তাদের চোখ-মুখে দৃঢ় সংকল্প আর হাতে ধরা অস্ত্র নিয়ে পাহারা দিচ্ছে দেশের অর্থনৈতিক নিরাপত্তা।ঈদের দিনেও বিজিবির সদস্যরা ছিলেন ‘অতন্দ্র প্রহরী’। সীমান্তের প্রতিটি ইঞ্চিতে ছিল তাঁদের উপস্থিতি—টহল, নজরদারি, গোয়েন্দা কার্যক্রম—সব একত্রে যেন এক নিরাপত্তা বলয় গড়ে তুলেছে দেশের চারপাশে। এমনকি কঠিন পাহাড়ি অঞ্চল হোক কিংবা নদী সীমান্ত, বিজিবির চোখ এড়িয়ে যেন গাছের পাতাও নড়ে না।
শুধু চামড়া পাচার নয়, বরাবরের মতো এবারও বিজিবি পুশ-ইন প্রতিরোধে ছিল তত্পর। সীমান্তে অবৈধ অনুপ্রবেশ রোধে তাঁরা ছিলেন সর্বোচ্চ সতর্ক। একদিকে দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, অন্যদিকে আন্তর্জাতিক নিয়মনীতি—এই সূক্ষ্ম ভারসাম্য বজায় রেখে তাঁরা পালন করে চলেছেন তাঁদের দায়িত্ব।
এই অদৃশ্য লড়াইয়ে বিজিবির জয় মানে কেবল সীমান্ত সুরক্ষা নয়, বরং দেশের অর্থনীতির এক বড় চাকা ঘুরে যাওয়ার নিশ্চয়তা। তাদের এই সতর্কতা ও কর্তব্যপরায়ণতা—চুপচাপ, নিরব, কিন্তু প্রভাবশালী—আমাদের সবার জন্য এক নিঃশব্দ আশ্বাস।
ঈদের খুশির মাঝে তাঁদের এই নিঃস্বার্থ আত্মোৎসর্গ নিঃসন্দেহে জাতির জন্য গর্বের এক অধ্যায়।
রাজু