ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০৫ জুন ২০২৫, ২২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

দুর্ভোগের পথ, যেন সাক্ষাৎ মরণফাঁদ! 

আপেল মাহমুদ, কন্ট্রিবিউটিং রিপোর্টার, ঠাকুরগাঁও

প্রকাশিত: ০১:০২, ৪ জুন ২০২৫

দুর্ভোগের পথ, যেন সাক্ষাৎ মরণফাঁদ! 

ছবি: জনকন্ঠ

খানাখন্দে ভরা এবড়ো থেবড়ো রাস্তা। তবে, মাটির নয়, পিচের পাকা রাস্তারই এই হাল। রাস্তা জুড়ে অসংখ্য ছোটবড় গর্তে পথ চলা দায়। বর্ষায় সেই গর্তে পানি জমে পরিস্থিতি আরও বিপজ্জনক হয়েছে। জমা পানি ডিঙিয়ে রাস্তা পারাপার করা গেলেও গাড়ি চলাচল রীতিমতো কষ্টকর। 

ঠাকুরগাঁও সদরের কর্ণফুলী বাজার হয়ে কমলাডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটার রাস্তার এমনই বেহাল দশায় ক্ষুব্ধ এলাকার বাসিন্দারা। ওই রাস্তা মেরামতের দাবিতে বছর খানেক আগে এলজিইডি অফিসে জানালেও অবশ্য রাস্তার হাল ফেরেনি।

অপরদিকে রুহিয়া মনুর মিল থেকে রাজাগাঁও ইউনিয়ন পরিষদ পর্যন্ত প্রায় চার কিলোমিটার দীর্ঘ এই রাস্তার অবস্থা অনেক দিন ধরেই খারাপ। বহু জায়গায় পিচ, বোল্ডার উঠে গিয়ে মোরাম বেরিয়ে পড়েছে। আর একটু বৃষ্টি হলেই সব গর্ত জলে টইটম্বুর। সরু রাস্তায় যান চলাচল করা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে গাড়িচালকদের কাছেও। দীর্ঘদিন ধরে রাস্তাটির সংস্কার না হওয়ায় ক্ষুব্ধ এলাকার বাসিন্দারা।

স্থানীয় সূত্রের জানা গেছে, প্রায় পাঁচ বছর ধরে ওই রাস্তা একটু একটু করে ভাঙছে। কিন্তু প্রশাসন রাস্তা মেরামতের ব্যাপারে উদাসীন।

কর্ণফুলী থেকে কমলাডাঙ্গা ও মনুর মিল থেকে রাজাগাঁও ইউনিয়ন পরিষদ পর্যন্ত আশপাশের প্রায় ১৫-২০টি গ্রামের ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ প্রতিদিন নানা প্রয়োজনে এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করেন। 

ঘনিবৃষ্টপুর গ্রামের বাসিন্দা মহিরুল, সাদ্দাম, আল আমিন, মকবুল, স্বপন বলেন, “রাস্তার এই বেহাল দশা দেখে এলাকার প্রাপ্তবয়স্ক ছেলেমেয়েদের বিয়ের সম্বন্ধ আসতে চায় না। এক বছর এক দুই বছর না কমপক্ষে পাঁচ থেকে সাত বছর ধরে রাস্তা দুটির করুণ দশা। তবু রাস্তা সংস্কারে হুঁশ নেই প্রশাসনের।”

রাজাগাঁও ইউনিয়নের ঠাকুরবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা, রুহিয়া কলেজের ছাত্রী মাধবী রানী রায়, আসাননগর গ্রামের কলেজ ছাত্রী লিপি আক্তারের ক্ষোভ, "রাস্তার অবস্থা বেহাল, কলেজে পড়তে যেতে ভীষণ অসুবিধা হচ্ছে। পড়াশোনা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।"

চরম সমস্যার মধ্যে আমাদের যাতায়াত করতে হচ্ছে। ব্যাটারি চালিত অটো ও ভ্যান চালকদের ক্ষোভ, রাস্তা খারাপের জন্য প্রায় দিনই গাড়ির যন্ত্রাংশ ভাঙছে। 

বাদিয়া মার্কেট এলাকার আটো চালক দবিরুল ইসলাম বলেন, ১০০ টাকার ভাড়া মারতে যদি ৫০০ টাকা ভর্তুকি দিতে হয়।  সেজন্য ওই রাস্তায় কেউই আটো চালাতে ইচ্ছুক নয়। আমি অটো বিক্রি করে দিয়েছি এখন চাল মিলে কাজ করি।

কর্ণফুলী বাজারের কাঁচামাল ব্যবসায়ী মকবুল হোসেন বলেন, রাজাগাঁও ইউনিয়ন ঠাকুরগাঁওয়ের মধ্যে সবজি উৎপাদনের শীর্ষে, যাতায়াতের দুটি সড়কই চলাচলের অনুপযোগী হয়ে গেছে। কোন গাড়ি যেতে চায় না। 

সমাজসেবক আব্দুল মালেক মানিক ও জহিরুল ইসলাম বলেন, "ওই রাস্তার পিচ, বোল্ডার উঠে গেছে। রাস্তা মেরামতের প্রয়োজন।"

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা প্রকৌশলী মাবুদ হোসেন জানিয়েছেন, "কর্ণফুলী বাজার থেকে কমলাডাঙ্গা সড়কের টেন্ডার হয়েছে। কিছুদিনের মধ্যে কাজ শুরু হবে।"

Mily

×