ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ০৬ জুন ২০২৫, ২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

চাঁপাইনবাবগঞ্জে ভিজিএফের ভাগ-বাঁটোয়ারা দ্বন্দ্বে বঞ্চিত ৮ হাজার পরিবার

নিজস্ব সংবাদদাতা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ

প্রকাশিত: ১৯:১৯, ৫ জুন ২০২৫

চাঁপাইনবাবগঞ্জে ভিজিএফের ভাগ-বাঁটোয়ারা দ্বন্দ্বে বঞ্চিত ৮ হাজার পরিবার

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার গোবরাতলা ও চরবাগডাঙ্গা ইউনিয়নে ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যদের দ্বন্দ্বের কারণে আসন্ন ঈদুল আজহার আগে ভিজিএফের চাল পাচ্ছেন না প্রায় ৮ হাজার পরিবার।

স্থানীয় সূত্র ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, গোবরাতলা ইউনিয়নে ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম টিপুর সঙ্গে ৮ জন ইউপি সদস্যের বিরোধ চলমান। ভিজিএফের তালিকা প্রস্তুত ও ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে এ দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে একাধিকবার তালিকা জমা দিতে বলা হলেও চেয়ারম্যান তা দেননি।

অন্যদিকে, চরবাগডাঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহীদ রানা টিপু চারটি হত্যা মামলার আসামি হিসেবে গত বছরের ৫ আগস্ট থেকে পলাতক। তার অনুপস্থিতিতে প্যানেল চেয়ারম্যান ও সদস্যরা তালিকা প্রস্তুত করতে গেলে বাধা দেয় চেয়ারম্যানের অনুসারীরা। এতে ভিজিএফ চাল বিতরণ সম্ভব হয়নি। গত ঈদুল ফিতরের ক্ষেত্রেও একই জটিলতায় ৪০ দিন পর চাল বিতরণ হয়েছিল।

গোবরাতলার বাসিন্দা আরিফুল ইসলাম বলেন, সরকারের বরাদ্দ থাকা সত্ত্বেও ৪ হাজার ২০০ পরিবার এবার চাল পাচ্ছে না। এই চাল দিয়ে দরিদ্র মানুষজন ঈদের আনন্দ ভাগ করে নিতে পারত। চেয়ারম্যান-মেম্বারদের দ্বন্দ্বে তারা সে সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছে।

চরবাগডাঙ্গার বাসিন্দা তারেক রহমান বলেন, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা নিজেদের স্বার্থে সাধারণ মানুষের অধিকার কেড়ে নিচ্ছেন। ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে দ্বন্দ্ব থাকলেও এই চাল তো তাদের জন্য নয়, জনগণের জন্য।

গোবরাতলা ইউপির প্যানেল চেয়ারম্যান-২ ও ইউপি সদস্য রাফেজ মীর বলেন, চেয়ারম্যান-মেম্বারদের দ্বন্দ্বের কারণেই ঈদের আগে চাল বিতরণ সম্ভব হয়নি। তবে আশা করি, ঈদের পর তা বিতরণ করা হবে।

চরবাগডাঙ্গা ইউপির সংরক্ষিত মহিলা সদস্য শিল্পী বেগম বলেন, চেয়ারম্যান পলাতক থাকায় গত সাড়ে তিন বছরে কোনো সভা হয়নি, আমরা বেতন-ভাতাও পাচ্ছি না। ফলে আমরা কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছি না। এতে জনগণই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

এ বিষয়ে গোবরাতলা ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম টিপু ও চরবাগডাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান শাহীদ রানা টিপুর সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শাহিনুর আলম বলেন, বিষয়টি দুঃখজনক। তালিকা চাওয়া হলেও তারা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন। এতে দুটি ইউনিয়নের ভিজিএফ বিতরণ সম্ভব হয়নি। তবে বাকি ১২টি ইউনিয়নে নিয়মিতভাবে ৫৪ হাজার ৩০০ পরিবারের মধ্যে চাল বিতরণ করা হয়েছে।

 

সানজানা

আরো পড়ুন  

×