ছবি: জনকণ্ঠ
পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে ঢাকা-বরিশাল নৌরুটে আজ মঙ্গলবার থেকে লঞ্চের বিশেষ সার্ভিস চালু হচ্ছে। রোটেশন পদ্ধতি ভেঙে এবার এই রুটে ১০ থেকে ১২টি লঞ্চ যাত্রী সেবায় নিয়োজিত থাকবে।
লঞ্চ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যাত্রীর চাপের ওপর নির্ভর করে লঞ্চের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। নৌযান মালিকদের আশা, ঈদের বিশেষ সার্ভিসে যাত্রীসংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়বে। তবে ঝড়ঝঞ্ঝার মৌসুম হওয়ায় কিছুটা শঙ্কাও রয়েছে। পদ্মা সেতু চালুর পর ঢাকা-বরিশাল নৌরুটে যাত্রী সংকট দেখা দেয়। যাত্রী কমে যাওয়ায় লঞ্চ মালিকরা রোটেশন অনুযায়ী মাত্র দুই-তিনটি লঞ্চ চালু রেখেছিলেন। তবে ঈদের সময় যাত্রী ভিড় পুরনো রূপে ফেরে। এবারও কোরবানির ঈদে যাত্রীর চাপ বাড়বে বলে সংশ্লিষ্টরা ধারণা করছেন।
সোমবার (২ জুন) বরিশাল নগরীর বিভিন্ন লঞ্চের বুকিং কাউন্টার ঘুরে দেখা গেছে, ঢাকা থেকে বরিশালে আসার টিকিটে কিছুটা সংকট রয়েছে। অনেকে আগাম টিকিট সংগ্রহ করছেন। তবে আগের মতো ভয়াবহ সংকট এখনও দেখা দেয়নি বলে জানিয়েছেন সুন্দরবন লঞ্চের কাউন্টার ম্যানেজার জাকির হোসেন।
যাত্রী মিলন তালুকদার বলেন, তাঁর ভাইয়ের পরিবার ঢাকা থেকে ঈদে বাড়ি আসছে, তাই আগেভাগে টিকিট বুকিং করতে এসেছেন। সুন্দরবন লঞ্চের মাস্টার মো. আলম ও কুয়াকাটা লঞ্চের মাস্টার মো. মানিক বলেন, দীর্ঘদিন ধরে যাত্রী সংকট থাকলেও ঈদই তাদের মূল ভরসা। রোটেশন ভেঙে ঈদের সময় লঞ্চ চলাচল বাড়লে যাত্রী ভিড়ও বাড়বে। অভ্যন্তরীণ লঞ্চ মালিক সমিতির মহাসচিব সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী জানান, আগে রোটেশন প্রথায় মাত্র দুটি লঞ্চ চলতো। এবার ঈদ উপলক্ষে রোটেশন তুলে দিয়ে লঞ্চ সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে।
ইতোমধ্যে লঞ্চ মালিক সমিতির সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে, ৩ জুন থেকে ঈদের বিশেষ সার্ভিস শুরু হবে। তবে এ সময় ভাড়া বাড়ানো হবে না। সরকারি নির্ধারিত রেটে সিঙ্গেল কেবিন এক হাজার, ডাবল কেবিন দুই হাজার ও ডেক ৪০০ টাকা রাখা হবে।
এছাড়া ঈদের তিন দিন আগে এবং তিন দিন পরে মালবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের এক সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। বরিশাল বিআইডব্লিউটিএ-এর নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী পরিচালক শহিদুল ইসলাম বলেন, কোরবানির ঈদে যাত্রীসেবা নিশ্চিতে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে সমন্বয় সভায় যাত্রীসেবা নিশ্চিত করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যাত্রীদের নিরাপত্তায় আনসার সদস্যদের পাশাপাশি ক্যাডেট সদস্যরাও স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করবেন। তিনি আরও জানান, এখন ঝড়ঝঞ্ঝার সময় হওয়ায় লঞ্চ চালকদের সতর্ক করার লক্ষ্যে নৌ-নিরাপত্তা দিবসে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বরিশাল নৌ-যাত্রী ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক আব্দুর রশিদ নিলু বলেন, ঈদের সময় যাত্রীরা যাতে স্বস্তিতে যাতায়াত করতে পারেন, সেদিকে প্রশাসন ও লঞ্চ কর্তৃপক্ষকে খেয়াল রাখতে হবে। বিশেষ করে ঝড়ঝঞ্ঝার এ সময়ে সতর্কতার সঙ্গে লঞ্চ চালানো জরুরি। এ বিষয়ে সংগঠনের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্টদের অবহিত করা হয়েছে।
শহীদ
