
ছবিঃ সংগৃহীত
উত্তরাঞ্চলের অন্যতম বৃহৎ ও ঈশ্বরদী পৌর এলাকার ঐতিহ্যবাহী অরোনকোলা পশুহাট এবং ঈশ্বরদীর আওতাপাড়ার বৃহৎ পশুহাটে এবার প্রচুর সংখ্যক দেশি-বিদেশি উন্নত জাতের গরু, ছাগল ও ভেড়া উঠেছে। কিন্তু বিক্রেতাদের চোখে-মুখে দেখা যাচ্ছে হতাশার ছাপ। কারণ, হাটে ক্রেতার উপস্থিতি অত্যন্ত কম, ফলে আশানুরূপ বেচাকেনা হচ্ছে না।
প্রাণিসম্পদ অফিসের হিসাব অনুযায়ী, এ বছর ঈশ্বরদীতে মোট গরুর সংখ্যা ৭৩ হাজার ৫১৬টি। এর মধ্যে ষাঁড় ১৭ হাজার ৪৫২টি, বলদ ৩ হাজার ৮০৫টি, গাভী ২ হাজার ৭৫৪টি, মহিষ ৯১৫টি, ছাগল ৩৯ হাজার ৫২২টি, ভেড়া ৮ হাজার ৯১৩টি এবং গাঁড়ল ১৫৫টি। ঈশ্বরদীতে কোরবানির পশুর চাহিদা রয়েছে ৪২ হাজার ৫১০টি। উদ্বৃত্ত রয়েছে ৩১ হাজার ৬টি।
এর পরও প্রতি বছরের ন্যায় এবারও পাবনা জেলাসহ ঈশ্বরদীর নিকটস্থ জেলা-উপজেলা থেকেও বিভিন্ন প্রকার পশু আমদানি হচ্ছে এই দু’টি হাটে। কাজেই প্রতি হাটেই পশুর আমদানি বেশি এবং সে অনুযায়ী ক্রেতার সংখ্যা কম হওয়ায় বিক্রেতারা পড়েছেন বিপাকে।
ঈদুল আযহার আগে ঈশ্বরদীতে আর মাত্র দু’টি হাটবার রয়েছে। সময় যতই ঘনিয়ে আসছে, ঈশ্বরদীর এই পশুর হাটগুলো ততই জমে উঠতে শুরু করেছে। ক্রেতার সংখ্যাও বাড়তে শুরু করেছে। কিন্তু সে অনুযায়ী বিক্রি বাড়ছে না।
ঈশ্বরদীর অরোনকোলা ও আওতাপাড়া পশুহাটের চিত্র দেখলেই বোঝা যাচ্ছে যে পশুর মালিকদের লোকসান গুনতে হচ্ছে নানা কারণে। সরেজমিনে দেখা গেছে, হাটে ক্রেতার চেয়ে গরুর সংখ্যা অনেক বেশি। গরুর মালিকরা আশা নিয়ে দূর-দূরান্ত থেকে পশু নিয়ে এলেও কাঙ্ক্ষিত সংখ্যক ক্রেতা না থাকায় তাদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে।
গরুর মালিকদের অভিযোগ, গত বছরের তুলনায় এবার গরুর দাম তুলনামূলকভাবে কম। অন্যদিকে, হাটে যেসব ক্রেতা আসছেন, তারাও গরুর দাম নিয়ে দর কষাকষি করছেন এবং কম দামে গরু কিনতে চাইছেন। ফলে গরু বিক্রি করতে পারছেন না বিক্রেতারা। অনেক গরুর মালিক দু'দিন ধরে হাটে অবস্থান করেও গরু বিক্রি করতে না পেরে হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন।
এর অন্যতম দু’টি কারণ চিহ্নিত করেছেন গরুর মালিকরা। একটি হলো—গোখাদ্যের দাম বেশি। অন্যটি হলো—দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ ও তাদের সমর্থক যাদের হাতে টাকা রয়েছে, তাদের পলাতক থাকা।
স্থানীয়রা জানান, ঈশ্বরদীর অরোনকোলা ও আওতাপাড়া পশুহাট দু’টি উত্তরাঞ্চলের সবচেয়ে বড় পশুর হাটগুলোর মধ্যে অন্যতম। এই হাটে পাবনা, সিরাজগঞ্জ, কুষ্টিয়া, নাটোর, রাজশাহীসহ বিভিন্ন জেলা থেকে বিক্রেতারা পশু নিয়ে আসেন। কিন্তু এবার ক্রেতার অভাবে বেচাকেনা মন্দা হওয়ায় সবার মধ্যেই উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। গরুর মালিকরা আশা করছেন, ঈদের আগের হাট দু’টিতে ক্রেতার সংখ্যা বাড়বে এবং তাদের লোকসান কাটিয়ে লাভবান হতে পারবেন। তবে বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় অনেকেই শঙ্কায় রয়েছেন।
মারিয়া