ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ০২ জুন ২০২৫, ১৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ঈদুল আজহার এখনো এক সপ্তাহ বাকি

রাজধানী ছাড়তে শুরু করেছে নগরবাসী

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২৩:৩১, ৩১ মে ২০২৫

রাজধানী ছাড়তে শুরু করেছে নগরবাসী

রাজধানী ছাড়তে শুরু করেছে নগরবাসী

ঈদুল আজহার এখনো এক সপ্তাহ বাকি। তবে এর মধ্যে রাজধানী ছাড়তে শুরু করেছে নগরবাসী। তাই শনিবার রাজধানীর বিভিন্ন টার্মিনালে দেখা গেছে ঘরমুখো মানুষের ভিড়। এর মধ্যে সড়ক ও নৌপথের যাত্রীদের চাপছিলো কম। কিন্তু রেলপথের যাত্রীদের ভিড় বেশি দেখা গেছে। তবে বৃষ্টির কারণে তাদের কিছুটা ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে বলে যাত্রীরা জানান। 
গত ২১ মে যারা আন্তঃনগর ট্রেনের অগ্রিম টিকিট ক্রয় করেছিলেন। তাদের নিয়ে শনিবার শুরু হয়েছে রেলপথের ঈদযাত্রা। এ ছাড়া এবার ঈদে রেলওয়ের পক্ষ থেকে ৫ জোড়া বা ১০টি ঈদ স্পেশাল ট্রেন পরিচালনা করা হবে। পাশাপাশি আগামী সোমবার থেকে ঢাকায় পশু পরিবহনের জন্য তিনটি ক্যাটেল স্পেশাল ট্রেন সার্ভিস পরিচালনা করবে রেলওয়ে। এদিকে শনিবার রেলপথের ঈদযাত্রার সার্বিক ব্যবস্থাপনা সরেজমিনে পরিদর্শন করেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ফাহিমুল ইসলাম। এ সময় রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. আফজাল হোসেনসহ অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

রেলওয়ে কর্মকর্তারা জানান, যাত্রীদের নির্বিঘœ ঈদযাত্রা নিশ্চিত করতে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। প্রতিটি ট্রেন ঢাকায় আনা হয়েছে আগের রাতেই এবং নির্ধারিত সময়ে ছেড়ে যাচ্ছে। এ বিষয়ে কমলাপুর রেলস্টেশনের ম্যানেজার মো. শাজেদুল ইসলাম বলেন, শনিবার সকাল ১০টা পর্যন্ত ১২টি আন্তঃনগর এবং পাঁচটি লোকাল ও কমিউটার ট্রেন কমলাপুর স্টেশন থেকে ছেড়ে গেছে। 
এখন পর্যন্ত সব ট্রেন নির্ধারিত সময়ের ছেড়ে গেছে। আশা করছি আজকে সবগুলো ট্রেন নির্ধারিত সময়ে যাবে। স্টেশনে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে। টিকিট ছাড়া কোনো যাত্রীকে স্টেশনে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না এবং ট্রেনেও যেতে দেওয়া হচ্ছে না। সরেজমিনে রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ঘুরে দেখা গেছে, শনিবার সকাল থেকেই কমলাপুর স্টেশনে ছিল ঘরমুখো মানুষের ভিড়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ায় অনেকেই ঈদের ছুটি শুরু হওয়ার আগেই পরিবার নিয়ে গ্রামে যেতে দেখা গেছে। তাই প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদ উদ্যাপন করতে সকাল থেকে স্টেশনে হাজারো মানুষের পদচারণায় মুখর হয়ে। তবে স্টেশনে প্রবেশের ক্ষেত্রে যাত্রীদের কয়েকটি ধাপ পাড় হতে হচ্ছে।

স্টেশনের মূল গেটের আগের বাঁশ দিয়ে ভেড়িগেট তৈরি করা হয়েছে। যাতে করে টিকিটহীন কোনো স্টেশনে প্রবেশ করতে না পারে। এ জন্য কঠোর নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে তিন স্তরের চেকিং ব্যবস্থা চালু করেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। স্টেশনে টিকিটবিহীন প্রবেশ ঠেকাতে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী, রেলওয়ে পুলিশ ও আনসার সদস্যরা যৌথভাবে দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে। পরিবার ও প্রিয়জনদের সঙ্গে পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপন করতে বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। এর মধ্যে অধিকাংশই শিক্ষার্থী ও চাকরিজীবী, যারা ঈদের ছুটি কাটাতে নিজ নিজ বাড়িতে যেতে দেখা গেছে। ঈদযাত্রার প্রথম দিনে বৃষ্টির কারণে কিছুটা ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে বলে জানান তারা। কমলাপুর স্টেশনে স্ট্যান্ডিং টিকিটের অপেক্ষায় থাকা সুরুজ মিয়া জানান, অনেকক্ষণ ধরে দাঁড়িয়ে আছি। 
টিকিট পাচ্ছি না। একটু পর পাবো মনে হয়। ঝামেলা নেই। আগেভাগেই বাড়ি ফিরতে পারলেই ভালো। সাইদুর রাহমান নামের অপর এক যাত্রী জানান, মোহনগঞ্জগামী ট্রেন মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসে যাবেন তিনি। গত ঈদে বাড়ি যেতে পারিনি। তাই এবার ঈদের এক সপ্তাহ আগে রওনা দিয়েছেন। এখন অবশ্য গাড়িতে যাত্রীর চাপও কম। সব মিলিয়ে খুব স্বস্তিদায়ক ঈদযাত্রা হবে এবার।

চাঁপাইনবাবগঞ্জগামী বনলতা এক্সপ্রেসের যাত্রী রাদিয়া জান্নাতুল বলেন, পুরো এক বছর পর দাদুর বাড়িতে যাচ্ছি। সেখানে আমার চাচাত ও ফুফাত ভাই-বোনসহ অনেক আত্মীয় আছে। গ্রামে যাওয়ার মজাই আলাদা। সময় পাই না বলেই সব সময় যেতে পারি না। গ্রাম আমার খুব ভালো লাগে। নিজেদের বাগানের আম পাড়ব। পুকুরে গোসল করব। দারুণ সময় কাটবে। গ্রামের ঈদ মানেই স্পেশাল কিছু।

×