
টঙ্গীতে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গাজীপুর জেলা শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক আকাশ খানের বিরুদ্ধে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবির একটি ভিডিও ভাইরাল হলে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে সংগঠনটির গাজীপুর জেলার ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক নাবিল আল ওয়ালিদ স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে টঙ্গী গাজীপুরের সকল থানা ও ওয়ার্ড কমিটির কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করা হয়েছে।
এ ঘটনায় ৬ জনকে অভিযুক্ত করে এবং অজ্ঞাতনামা ১০-১২ জনের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগীর পরিবার থানায় অভিযোগ করলে শুক্রবার রাতে টঙ্গী পূর্ব থানায় মামলা রেকর্ড হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওসি ফরিদুল ইসলাম।
থানায় দেওয়া লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ২৮ মে রাতে টঙ্গীর শেরে বাংলা রোড এলাকায় এক আওয়ামী লীগ নেতার ভাই আবদুল বাতেনের বাড়িতে প্রবেশ করে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের টঙ্গী পূর্ব থানার ১৮-২০ জন নেতাকর্মী। তারা ওই আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে চারটি মামলা থাকার কথা বলে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে এবং চাঁদা না দিলে পুলিশে ধরিয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। একপর্যায়ে তারা পরিবারের কাছ থেকে নগদ ২৫ হাজার টাকা আদায় করে এবং ১০০ টাকার স্ট্যাম্পে জোরপূর্বক স্বাক্ষর নেয়। তারা ২৯ মে’র মধ্যে ৫ লাখ টাকা পরিশোধের হুমকি দিয়ে চলে যায়।
২৯ মে সন্ধ্যায় ভুক্তভোগীর পরিবার থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে থানার কম্পাউন্ডে আকাশ খানের সঙ্গে দেখা হয়। তারা টাকা দাবির যৌক্তিকতা জানতে চাইলে আকাশ খান কোনো স্পষ্ট উত্তর না দিয়ে এড়িয়ে যান। এই ঘটনার একটি লাইভ ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয় এবং ব্যাপক সমালোচনার ঝড় ওঠে। গভীর রাত পর্যন্ত বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন সংগঠনের গাজীপুর জেলা নেতারা।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, টঙ্গী পূর্ব থানা চত্বরে কয়েক ব্যক্তি আকাশ খানকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন। তারা একাধিকবার জিজ্ঞেস করেন, “তোমরা আমাদের কাছে চারটা মামলার জন্য পাঁচ লাখ করে মোট ২০ লাখ টাকা চাঁদা চাওনি?” আকাশ খান ক্যামেরার সামনে নিরুত্তর থাকেন এবং নানা কথাবার্তা বলেন।
ভিডিওতে এক যুবককে সাক্ষাৎকার দিতে দেখা যায়, যিনি দাবি করেন, রাত ১২টার দিকে আকাশ খান তার বাড়িতে যান ভাড়া নেওয়ার অজুহাতে। তার সঙ্গে আরও কয়েকজন ছিল।
ওই যুবক বলেন, “আকাশরা বাড়িতে ঢুকেই আমাদের জানায়, আমার বাবা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেন এবং তার বিরুদ্ধে চারটি মামলা রয়েছে। এরপর তারা থানা-পুলিশের ভয় দেখাতে থাকে।”
ঘটনার বর্ণনায় তিনি আরও বলেন, “আমরা সমাধানের পথ খুঁজতে চাইলে তারা ২০ লাখ টাকা দাবি করে। একপর্যায়ে হাতে থাকা ২০ হাজার টাকা এবং ভাড়াটিয়াদের কাছ থেকে আরও ৬ হাজার টাকা তুলে দিলে তারা চলে যায়। যাওয়ার সময় বলে, পরদিন সকাল ১১টার মধ্যে ৫ লাখ টাকা প্রস্তুত রাখতে।”