ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০১ জুন ২০২৫, ১৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

মীরসরাইয়ে খানাখন্দে ভরা ৭ কিমি জোরারগঞ্জ-মুহুরীপ্রজেক্ট সড়ক যেন মৃত্যুফাঁদ!

রাজিব মজুমদার, মীরসরাই, চট্টগ্রাম

প্রকাশিত: ১৩:২৬, ৩১ মে ২০২৫; আপডেট: ১৩:২৭, ৩১ মে ২০২৫

মীরসরাইয়ে খানাখন্দে ভরা ৭ কিমি জোরারগঞ্জ-মুহুরীপ্রজেক্ট সড়ক যেন মৃত্যুফাঁদ!

ছবি: জনকণ্ঠ

চট্টগ্রামের মীরসরাই উপজেলার ৭ কিলোমিটার জোরারগঞ্জ-মুহুরীপ্রজেক্ট সড়কটির বেহাল দশা দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য এক নিদারুণ দুর্ভোগে পরিণত হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন শত শত মানুষ যাতায়াত করেন, স্কুলের শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে মাছবাহী ট্রাকের চালক—সবার জন্যই এই পথ এখন মরণফাঁদ।


দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় সড়কের কার্পেটিং উঠে গিয়ে বিভিন্ন অংশে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে এই গর্তগুলো কর্দমাক্ত হয়ে পড়ে, তখন গর্ত বুঝে চলাচল করাও হয়ে ওঠে দুরূহ। দুর্ঘটনার ঝুঁকি থাকে প্রতিটি মোড়ে।


সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জোরারগঞ্জ-মুহুরীপ্রজেক্ট সড়কের মোট দৈর্ঘ্য ১২ কিলোমিটার। এর মধ্যে জোরারগঞ্জ বাজার থেকে ইছামতি মন্দির পর্যন্ত এক কিলোমিটার অংশ খানিকটা ভালো থাকলেও, বাকি ৭ কিলোমিটার একেবারেই চলাচলের অযোগ্য। সবচেয়ে বিপজ্জনক অবস্থা বিষুমিয়ারহাট থেকে আজমপুর বাজার পর্যন্ত প্রায় ২ কিলোমিটারে। সড়কের বিভিন্ন স্থানে পিচ উঠে গিয়ে ছোট-বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। বর্ষায় এই গর্তগুলোতে পানি জমে কাদা হয়, তখন দেখা যায় গাড়ি হঠাৎ ব্রেক করে, নিয়ন্ত্রণ হারায়। অনেক সময় গাড়ি বিকল হয়ে গর্তেই থেমে যায়। এছাড়াও সড়কের দুরবস্থার প্রভাব পড়েছে স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের ওপরও। অনেকেই সময়মতো স্কুলে পৌঁছাতে পারছে না। সকালবেলা সিএনজি বা স্কুলবাসে উঠলেও সড়কের কাদা আর গর্তের কারণে নির্ধারিত সময়ে পৌঁছানো প্রায় অসম্ভব।

স্থানীয় সিএনজি চালক দুঃখু মিয়া বলেন, “সড়কের অধিকাংশ স্থানে গর্ত। প্রায়ই গাড়ি উল্টে যায়। রাস্তায় গাড়ি নিয়ে বের হলে মনে হয় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাত্রা করছি।”

নিয়মিত যাত্রী কৃষ্ণ কর্মকার বলেন, “সংস্কার হলেও নিম্নমানের কাজে এক মাসের মধ্যেই সব আবার আগের মতো হয়ে যায়। সময়, ভাড়া দুই-ই বেড়ে যাচ্ছে।”

ট্রাকচালক আবুল হাশেম বলেন, “লোড গাড়ি গর্তে পড়ে আটকে যায়, সময় নষ্ট হয়, যন্ত্রপাতিও নষ্ট হয়। ঠিকঠাক রাস্তা থাকলে সময়মতো মালামাল পৌঁছানো যেত।

মোঃ ইউছুপ নামে এক অভিভাবক বলেন, “আমার ছেলে স্কুলে পৌঁছাতে দেরি করে। প্রায়দিনই বাস সময়মতো যেতে পারে না। শিক্ষকও রাগ করেন, অথচ দোষ তো ছাত্রের না।”


চট্টগ্রাম সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোসলেহ উদ্দিন  বলেন, “জোরারগঞ্জ-মুহুরী প্রজেক্ট সড়কসহ মোট ১৮ কিলোমিটারের জন্য দরপত্র প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। শিগগিরই কাজ শুরু হবে। জোরারগঞ্জ-মুহুরী প্রজেক্টের ৭ কিলোমিটার অংশটি ১৮ ফুট থেকে ৩৪ ফুট প্রশস্ত করে কার্পেটিংয়ের কাজ হবে।”


এছাড়াও মুহুরী প্রজেক্ট থেকে বেড়িবাঁধ হয়ে শিল্পজোনের বেজার গেট পর্যন্ত সড়কের বাজেটও অনুমোদন হয়েছে বলে জানান তিনি।

শিহাব

×