
ছবি:সংগৃহীত
সরকারি চাকরি সংশোধন অধ্যাদেশ ২০২৫-এর বিরুদ্ধে কর্মচারীদের আন্দোলনে সারাদেশেই প্রশাসনিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। সচিবালয়সহ বিভিন্ন দপ্তরে কাজকর্ম বন্ধ করে কর্মচারীরা এখন সরাসরি সরকারকেই হুমকি দিচ্ছেন দাবি আদায়ের জন্য।
চলমান অচলাবস্থা নিয়ে বিশ্লেষকরা বলছেন, অধ্যাদেশ অনুমোদনের আগে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর সঙ্গে আলোচনা করা হলে বর্তমান পরিস্থিতি এড়ানো যেত। অনেকেই মনে করছেন, সরকারি কর্মচারীদের শৃঙ্খলায় আনতে একটি কঠোর আইনের প্রয়োজন ছিল, তবে তা যেন হয় সংবিধানসম্মত ও সময়োপযোগী।
সচিবালয়ে কাজ বন্ধ রেখে আন্দোলনে নামা কর্মচারীরা দাবি জানাচ্ছেন সংশ্লিষ্ট সচিবদের পদত্যাগের। তিনদিনের ছুটি নিয়ে অনেকেই কাজ ছেড়ে আন্দোলনে অংশ নিচ্ছেন। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ইতোমধ্যে বৈঠকে বসেছে সরকার, তবে সমাধান এখনও অনিশ্চিত।
২৫ মে জারি হওয়া সংশোধিত চাকরি অধ্যাদেশে চার ধরনের কর্মকাণ্ডকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। এসব অপরাধের সাজা হিসেবে রয়েছে বরখাস্ত, অপসারণ, কিংবা পদগ্রেড কমিয়ে দেওয়া। এই ধারাগুলোকে দমনমূলক বলে আখ্যা দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।
জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞ মোহাম্মদ ফিরোজ মিয়া বলেন, “এই অধ্যাদেশে ১৯৭৯ সালের স্পেশাল প্রভিশন অর্ডিনেন্সের কিছু ধারা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু ভাষাগত দুর্বলতা এবং অস্পষ্টতা এমন কিছু শব্দ যুক্ত করেছে, যেগুলোর অপপ্রয়োগের আশঙ্কা প্রবল।” তিনি আরও বলেন, “এটি সংবিধানের ১৩৫ অনুচ্ছেদের সাথেও সাংঘর্ষিক।”
তার মতে, “যে বিশৃঙ্খলা এবং জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে তা নিয়ন্ত্রণে কঠোর আইন প্রয়োজন ছিল। কিন্তু সরকার সে আইনকে কঠোরের বদলে দমনমূলক বানিয়ে ফেলেছে।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. আলী রেজা মনে করেন, অংশীজনদের সাথে আলোচনা না করেই অধ্যাদেশ জারি করায় এ জটিলতা তৈরি হয়েছে। তার ভাষায়, “সরকারি কর্মচারীদের মত প্রকাশের একটা বৈধ পদ্ধতি আছে। কিন্তু তারা সচিবালয়ের কার্যক্রম একপ্রকার স্থবির করে দিয়ে দাবি আদায়ে নামছেন, যা ঠিক নয়।”
তবে তিনি ও অন্যান্য বিশ্লেষকরা একমত যে, রাষ্ট্র ও সমাজের স্বার্থে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে আইন প্রয়োজন। তবে সেটি যেন হয় আলোচনাপূর্ণ, যুক্তিসঙ্গত ও সময় উপযোগী।
সূত্র:https://youtu.be/pvgZM0ZUGCY?si=c6ZkynPLPHjbNTG7
আঁখি