
চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে টানা তিন সপ্তাহের বেশি সময় ধরে চলছে তীব্র দাবদাহ। প্রচণ্ড খরতাপে পুড়ছে প্রকৃতি। সূর্যের রুদ্রতাপে তপ্ত কড়াইয়ের মতো তেঁতে ওঠেছে পথঘাট। এরই মধ্যে তাপমাত্রার পারদ ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁই ছুঁই। আর অসহনীয় এ গরমের মধ্যে বিদ্যুতের আসা-যাওয়া খেলার ভোগান্তিতে লাখো পরিবার। গড়ে দিনে-রাতে ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ থাকছে না। বিঘ্ন হচ্ছে হাটবাজার ও শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা। দিনে তাপমাত্রা বেশি হওয়ায় সবচেয়ে বেশি কষ্টে আছেন দিনমজুর ও খেটে খাওয়া মানুষগুলো। যদিও বিদ্যুৎ বিভাগের দাবি তাদের মূলত কোনো লোডশেডিং নেই, ফ্রিকোয়েন্সি সমস্যা ও ওভার লোডের কারণে এই অবস্থা।
চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ ফরিদগঞ্জ জোনাল অফিস সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ৬ লক্ষাধিক মানুষের বসবাসের এই উপজেলায়। ফরিদগঞ্জ জোনাল অফিস ও একই উপজেলার আওতাধীন কামতা জোনাল অফিস মিলিয়ে ১ লাখ ৪৫ হাজার বিদ্যুৎ গ্রাহক রয়েছে। ফরিদগঞ্জ জোনাল অফিসের ২১ মেগাওয়াটের চাহিদার তারা সবটুকুই পাচ্ছেন। অন্যদিকে কামতা জোনাল অফিস চাহিদা ১৩ মেগাওয়াটের বিপরীতে ওভার লোডের চাহিদার তুলনায় ৭/৮ মেগাওয়াট পাচ্ছেন। যদিও মাঠের বাস্তবতা ভিন্ন। দিনে-রাতে বিদ্যুতের আসা-যাওয়া চলছেই। কখনও কখনও এক ঘণ্টার মধ্যে অন্তত ৪/৫ বার আসা-যাওয়া করছে। গত ৩ সপ্তাহ ধরে পুরো উপজেলাজুড়ে বিদ্যুতের লোডশেডিং চলছে।
পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহক গাজীপুর গ্রামের বাসিন্দা মমিনুল ইসলাম বলেন, দিনে রাতে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আমরা ঠিক মতো ৫ ঘণ্টাও বিদ্যুৎ পাচ্ছি না। একটু বাতাস দেখলেই টানা কয়েক ঘণ্টা আমরা বিদ্যুৎ সেবার বাহিরে থাকতে হয়। যে বাতাসে লুঙ্গি ওড়ে না, সে বাতাসের ভয়ে বিদ্যুৎ চলে যায়।
শাহজাহান গাজী নামে পশ্চিম পোয়া এলাকার আরেক গ্রাহক বলেন, সারাদিনে কতবার বিদ্যুৎ যায়, তার হিসাব নেই। দিনে ৪ থেকে ৫ ঘণ্টাও আমরা বিদ্যুৎ পাচ্ছি না। লোডশেডিংয়ের কারণে বাচ্চাদের পড়ালেখার অনেক ক্ষতি হচ্ছে।
কলেজপড়ুয়া আব্দুর রহমান ও স্কুলপড়ুয়া তাওহীদুল ইসলাম বলেন, গরমের কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বাড়িতে কোথাও পড়তে বসতে পারি না। বিদ্যুতের সমস্যা দ্রুত সমাধান করা জরুরি।
পৌর এলাকার কাউসার আলম, ইকবাল হোসেন, শাহাদাত হোসেনসহ আরও কয়েকজন গ্রাহক বলেন, আর কত সহ্য করবো আমরা, বিদ্যুৎ একবার গেলে আর আসার নাম নেই। সাথী আক্তার, মোহছেনা বেগম, পিংকি আক্তারসহ কয়েকজন গৃহবধূ বলেন, আগে বিদ্যুতের লোডশেডিং হলেও আমাদের এমন কষ্ট হতো না। রাতের বেলা বিদ্যুৎ চলে গেলে বাচ্চারা গরমে কান্না শুরু করে দেয়। বাচ্চাদের সারা শরীর ঘামে ভিজে যায়। এভাবেই চলছে প্রতিদিন।
পল্লী বিদ্যুতের ফরিদগঞ্জ জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার সাইফুল আলম বলেন, গ্রাহকদের অভিযোগ আংশিক সত্য। তবে আমাদের বিদ্যুৎ ঘাটতি নেই। ফ্রিকোয়েন্সির কারণে বিদ্যুতের বারংবার শাটডাউন হচ্ছে।
প্যানেল