ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৩ মে ২০২৫, ২৯ বৈশাখ ১৪৩২

ত্রিশালে নজরুল জন্মজয়ন্তী উদযাপনের দাবিতে মানববন্ধন, বিক্ষোভ ও স্মারকলিপি প্রদান

আবু রাইহান, ত্রিশাল (ময়মনসিংহ)

প্রকাশিত: ১৯:০৮, ১২ মে ২০২৫; আপডেট: ১৯:০৯, ১২ মে ২০২৫

ত্রিশালে নজরুল জন্মজয়ন্তী উদযাপনের দাবিতে মানববন্ধন, বিক্ষোভ ও স্মারকলিপি প্রদান

ছ‌বি: জনকণ্ঠ

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৬তম জন্মজয়ন্তী জাতীয় পর্যায়ে কবির বাল্যস্মৃতি-বিজড়িত ত্রিশালের নজরুল মঞ্চে উদযাপনের দাবিতে ‘আমরা ত্রিশালবাসী’ ব্যানারে মানববন্ধন, বিক্ষোভ ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।

সোমবার দুপুরে উপজেলার শতাধিক নজরুলপ্রেমী ঢাকা–ময়মনসিংহ মহাসড়কের নজরুল অডিটোরিয়ামের সামনে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন। পরে ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলমের মাধ্যমে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।

সম্প্রতি জাতীয় কবির ১২৬তম জন্মজয়ন্তী জাতীয় পর্যায়ে কুমিল্লায় পালনের ঘোষণা এলে ক্ষোভে ফেটে পড়েন কবির বাল্যস্মৃতি-বিজড়িত ময়মনসিংহের ত্রিশালের নজরুলপ্রেমীরা। মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা বলেন, কবির শৈশবের গুরুত্বপূর্ণ অংশ কেটেছে ত্রিশালে। কবির বাংলাদেশে আগমন ও তাঁর শিক্ষাজীবনের সূচনার সঙ্গে ত্রিশালের নাম ঐতিহাসিকভাবে জড়িত।

তাঁরা আরও বলেন, ত্রিশালের দারোগা রফিজউল্লাহ আসানসোলের সেই রুটির দোকান থেকে নজরুলকে নিয়ে এসে তৎকালীন দরিরামপুর (বর্তমানে সরকারি নজরুল একাডেমি) হাইস্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে ভর্তি করান। এখানেই তাঁর কবিত্ব প্রতিভা বিকশিত হয়। তিনি নামাপাড়া বিচুতিয়া ব্যাপারী বাড়িতে জায়গীর থেকে প্রায় দুই বছর লেখাপড়া করেন।

মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করেন, ত্রিশালের মানুষ কবির জন্য যা করেছে, তা চিরস্মরণীয়। এখানকার বেশিরভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নামকরণ করা হয়েছে নজরুলের নামে। কবির নামে প্রতিষ্ঠিত একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনেও ত্রিশালের মানুষের রয়েছে অসামান্য অবদান। অর্থ ও জমি দিয়ে অনেকেই সহযোগিতা করেছেন। এমনকি জাতীয় পর্যায়ে জন্মজয়ন্তী উদযাপনে ত্রিশালকে উপেক্ষা করা অন্যায় ও বৈষম্যমূলক। তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ত্রিশালে জাতীয় পর্যায়ে জন্মজয়ন্তী উদযাপনের ঘোষণা না এলে নজরুলপ্রেমী জনতা আরও বৃহত্তর আন্দোলনে যাবে। প্রয়োজনে অনির্দিষ্টকালের জন্য ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করা হবে।

ঘোষিত কর্মসূচিতে শিক্ষক, সুশীল সমাজ, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, শিক্ষার্থী, সাংস্কৃতিক সংগঠন, সাংবাদিকসহ ত্রিশালের সর্বস্তরের মানুষ অংশগ্রহণ করেন।

মানববন্ধন ও বিক্ষোভে ত্রিশাল প্রেসক্লাবের সভাপতি খোরশিদুল আলম মজিবের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন—উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আনোয়ার সাদাত, ত্রিশাল উন্নয়ন ফোরামের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আবদুল আউয়াল, জামায়াতের সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক মাস্টার, শুকতারা সংঘের সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মাসুদ শিহাব, তাঁতীদল কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল্লাহ আল মামুন সরকার, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মোশাররফ হোসেন, সাংবাদিক এটিএম মনিরুজ্জামান, সাংবাদিক রুকুনুজ্জামান সরকার রাহাদ, যুবদল নেতা মাহফুজুর রহমান কবীর, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মারুফ হাসান, মেহেদী হাসান, হাসান সরকারসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম বলেন, “ময়মনসিংহের ত্রিশালে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মজয়ন্তী জাতীয় পর্যায়ে পালনের জন্য স্মারকলিপি পেয়েছি। আমিও চাই, এখানে নজরুলের জন্মজয়ন্তী জাতীয়ভাবে উদযাপিত হোক।”

এম.কে.

×