ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০১ মে ২০২৫, ১৮ বৈশাখ ১৪৩২

মধুমাসেই জিআই সনদ পেল দিনাজপুরের বিখ্যাত বেদানা লিচু

তাহমিন হক ববী

প্রকাশিত: ১৩:০৯, ১ মে ২০২৫

মধুমাসেই জিআই সনদ পেল দিনাজপুরের বিখ্যাত বেদানা লিচু

লিচুকে বলা হয় বিশ্বের সবচেয়ে রোমান্টিক ফল। প্রায় দুই হাজার বছর ধরে লিচু এই মর্যাদা ধরে রেখেছে। বলা হয়ে থাকে, বিশ্বে ফল চাষ নিয়ে লেখা প্রথম বইটি প্রকাশিত হয়েছিল ১০৫৬ সালে, আর সেটিও ছিল লিচু নিয়ে। যুগে যুগে রাজা-বাদশাহ থেকে রানী-বেগমদের মন জয় করতে এই ফল উপহার দিয়েছেন অনেকে। অষ্টম শতকে চীনের সম্রাট হুয়ান সাং দক্ষিণ চীন থেকে উত্তর চীনে লিচু বয়ে নিয়ে গিয়ে নিজের রানীর মন জয় করেছিলেন।

বাংলাদেশের প্রায় সব জেলাতেই লিচুর চাষ হয়, তবে উত্তরাঞ্চলের দিনাজপুরের লিচু স্বাদ, গন্ধ ও গুণে দেশের সেরা। বিশেষ করে দিনাজপুরের বেদানা লিচু দীর্ঘদিন ধরেই জনপ্রিয়। অবশেষে এই ঐতিহ্যবাহী লিচু পেয়েছে ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) সনদ।

দিনাজপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম আনুষ্ঠানিকভাবে বেদানা লিচুর জিআই সনদের সনদ গ্রহণ করেন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, বর্তমানে দিনাজপুরে ৫ হাজার ৫২০ হেক্টর জমিতে ৯ হাজার ৯৮টি লিচু বাগান রয়েছে। এ বছর জেলার লিচু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৪ হাজার ৬২৮ টন।

দিনাজপুরের বেদানা ছাড়াও মাদ্রাজি, বোম্বাই, হাড়িয়া, চায়না-টু, চায়না-থ্রি, কাঁঠালি ও মোজাফফরি জাতের লিচুও চাষ হচ্ছে। জেলার সদর উপজেলার মাসিমপুর, ঘুঘুডাঙ্গা ও উলিপুর, বিরলের মাধববাটি, করলা, রবিপুর, রাজারামপুর, রানীগঞ্জ, খানসামার গোলাপগঞ্জ, বীরগঞ্জের সনকা ও চিরিরবন্দরের কারেন্টহাট এলাকায় বাণিজ্যিকভাবে লিচু চাষ হয়। দিনাজপুর লাগোয়া নীলফামারীতেও চাষ হচ্ছে প্রচুর।

এই অঞ্চলের বেলে-দোঁআশ মাটি লিচু চাষের জন্য খুবই উপযোগী। ফলে স্থানীয় কৃষকদের আগ্রহও দিন দিন বাড়ছে। মাত্র দুই সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে আসবে মধুমাসের এই টসটসে, লাল-গোলাপি বেদানা লিচু। খোসা ছাড়িয়ে মুখে দিলেই লিচুপ্রেমীরা পাবেন অমৃত স্বাদ।

দিনাজপুরের বেদানা লিচুসহ সম্প্রতি আরও ২৪টি পণ্য জিআই সনদ পেয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে নরসিংদীর লটকন, মধুপুরের আনারস, ভোলার মহিষের দুধের কাঁচা দই, মাগুরার হাজরাপুরি লিচু, সিরাজগঞ্জের গামছা, সিলেটের মনিপুরি শাড়ি, মিরপুরের কাতান শাড়ি, ঢাকাই ফুটি কার্পাস তুলা, কুমিল্লার খাদি, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ছানামুখী, গোপালগঞ্জের ব্রোঞ্জের গয়না, সুন্দরবনের মধু, শেরপুরের ছানার পায়েস, সিরাজগঞ্জের লুঙ্গি, গাজীপুরের কাঁঠাল, কিশোরগঞ্জের রাতাবোরো ধান, অষ্টগ্রামের পনির, বরিশালের আমড়া, কুমারখালীর বেডশিট, মুন্সীগঞ্জের পাতীর, নওগাঁর নাকফজলি আম, টাঙ্গাইলের জামুর্কির সন্দেশ এবং ঢাকাই ফুটিকার্পাস তুলার বীজ ও গাছ।

বুধবার (৩০ এপ্রিল) বিশ্ব মেধাসম্পদ দিবস ২০২৫ উপলক্ষে শিল্প মন্ত্রণালয়ের পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্ক অধিদপ্তর আয়োজিত অনুষ্ঠানে এসব সনদ হস্তান্তর করা হয়। শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেন, “জিআই পণ্য দেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের ধারক। এসব পণ্যের যথাযথ বাজারজাতকরণ ও মূল্যায়ন নিশ্চিত করতে সরকার ও সংশ্লিষ্টদের সমন্বিত ভূমিকা প্রয়োজন।”

উল্লেখ্য, বাংলাদেশের প্রথম জিআই সনদপ্রাপ্ত পণ্য ছিল জামদানি শাড়ি। নতুন ২৪টি পণ্য যুক্ত হওয়ায় বর্তমানে দেশের মোট জিআই পণ্যের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৫টিতে।

নুসরাত

আরো পড়ুন  

×

শীর্ষ সংবাদ:

যেই সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত হবে তারা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে: আমীর খসরু
জামায়াত নেতারা রাজাকার হলে পাকিস্তানে গাড়ি বাড়ি থাকতো : শামীম সাঈদী
এনসিপির সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত সম্পৃক্ততা নেই- উমামা ফাতেমা
‘বাংলাদেশি’ সন্দেহে আটকদের অধিকাংশই ভারতীয় মুসলমান
ইয়েমেনে হামলা চালিয়েই সাগরে ডুবে গেল মার্কিন সর্বাধুনিক যুদ্ধবিমান
জামিন পেলেননা তারেক রহমানের খালাতো ভাই তুহিন
লন্ডনে আজ আর্সেনাল পিএসজি মহারণ
১৭ অভিনয়শিল্পীর নামে মামলা, তালিকায় আছেন নুসরাত ফারিয়া-অপু বিশ্বাস-ভাবনাসহ অনেকেই
১০০ টাকা মূল্যমানের প্রাইজবন্ডের ১১৯তম ড্র অনুষ্ঠিত হবে আগামীকাল
স্বর্ণের দাম, রেকর্ড উচ্চতা থেকে পতনের পথে
কুমিল্লায় পুলিশ-সেনাবাহিনীর চাকরির নামে প্রতারণা: দালালসহ ১৩ জন গ্রেফতার
১২ বছর বয়সী ছেলে শিক্ষার্থীকে বলাৎকারের অভিযোগে ৩ মাদ্রাসা শিক্ষক গ্রেফতার