ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১

সাতক্ষীরায় ১৫ দিনব্যাপী গুড় পুকুরের মেলা শুরু

মিজানুর রহমান, সাতক্ষীরা

প্রকাশিত: ২১:৩৭, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩

সাতক্ষীরায় ১৫ দিনব্যাপী গুড় পুকুরের মেলা শুরু

ঐতিহ্যবাহী গুড় পুকুরের মেলা উদ্বোধনের পর দর্শনার্থীরা

কিংবদন্তি আর প্রচলিত কাহিনী সমৃদ্ধ ঐতিহ্যবাহী গুড় পুকুরের মেলা বুধবার শুরু হয়েছে। শত শত বর্ষের স্মৃতিবিজড়িত এই মেলার ঐতিহ্য ধরে রাখতে আয়োজক কমিটি জেলা প্রশাসন ও সাতক্ষীরা পৌরসভা এবারও মেলার আয়োজন করেছে শহীদ আব্দুর রাজ্জাক পার্কে। ২০০২ সালে মেলা চলাকালে স্টেডিয়ামের সার্কাস প্যান্ডেলে ও সিনেমা হলে বোমা হামলার পর থেকে মেলার ঐতিহ্য হারাতে থাকে। বহিরাগত ব্যবসায়ীদের আসা কমতে থাকে। প্রায় ৩শ’ বছরের পুরনো এই মেলা উপলক্ষে ভাদ্র মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে সাতক্ষীরা শহরে সাজ সাজ রব পড়ে। ‘মনসা পূজা’ উপলক্ষে প্রতিষ্ঠিত সাতক্ষীরার এই গুড় পুকুরের মেলা গ্রাম বাংলার লোকজ ঐতিহ্যের সঙ্গে জড়িয়ে আছে। এ বছর ১৮ সেপ্টেম্বর মনসা পূজা অনুষ্ঠিত হলেও মেলা শুরু হয়েছে বুধবার। চলবে প্রায় ১৫ দিনব্যাপী। 
গুড় নেই, পুকুরও নেই। তবুও নাম গুড় পুকুরের মেলা।  কেন গুড় পুকুরের মেলা নামকরণ হয়েছে, এর সঠিক সমাধান না পাওয়া গেলেও শত শত বর্ষ ধরে সাতক্ষীরার কৃষ্টি আর ঐতিহ্যের বাহন হিসেবে এই গুড় পুকুরের মেলা পরিণত হয় হাজার হাজার মানুষের মিলন মেলায়। জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই আসেন এই মেলায় আনন্দ উপভোগ করতে। 
সাতক্ষীরার এই ঐতিহ্যবাহী গুড় পুকুরের নামকরণ নিয়ে প্রচলিত কিংবদন্তি রয়েছে অনেক। প্রচলিত কথা অনুযায়ী অনেকে বলেন, গুড় পুকুরের পুকুরটি ছিল গোলাকৃতি। এজন্য এর নাম গোল পুকুর থেকে পরিবর্তিত হয়ে হয়েছে গুড় পুকুর। আবার অনেকের মতে, একজন গুড় বিবি এই পুকুরটি খনন করেন। তাই এর নাম গুড় পুকুর। আবার সর্পাদেবী মনসাপূজার প্রসাদ ফেলতে ফেলতে পুকুরের পানি মিষ্টি হয়ে যাওয়ায় কালক্রমে পুকুরটির নামকরণ হয় গুড় পুকুর- এমন মতও প্রচলিত রয়েছে। লোকজ ঐতিহ্য নিয়ে যুগ যুগ ধরে প্রচলিত প্রায় তিনশ’ বছরের ঐতিহ্যমণ্ডিত এই গুড় পুকুরের মেলা প্রতিবছর ৩১ ভাদ্র থেকে শুরু হয়ে চলে প্রায় ১৫দিন থেকে এক মাস ধরে। ঐতিহ্যবাহী এই মেলার আকর্ষণ- বিভিন্ন স্থান থেকে আসা নার্সারি, কুটিরশিল্প, আর কাঠের তৈরি খাট-পালঙ্কসহ বিভিন্ন প্রকার আসবাবপত্র।

×