
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স
নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সমস্যায় জর্জরিত। ফলে কাঙ্খিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন স্থানীয়রা। উপজেলার ৯ ইউনিয়ন ও চাটখিল পৌর সভায় প্রায় সাড়ে ৩ লাখ জনসাধারণের চিকিৎসায় একমাত্র সম্বল ৫০ শয্যা বিশিষ্ট সরকারি এই হাসপাতাল। হাসপাতালটিতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের ১০ পদ থাকলেও ৭টি পদই শূন্য রয়েছে।
শনিবার (২০ মে) দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নারী-পুরুষ ও শিশু ওয়ার্ডে মিলিয়ে ৩০/৩৫ জন রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এসব রোগীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, জরুরি বিভাগের চিকিৎসকই এদের চিকিৎসা সেবা প্রদান করছেন। কোন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকায় যথাসময়ে চিকিৎসা পাচ্ছেন না ভর্তি রোগীরা।
আবার বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই রোগী নিয়ে হাসপাতালে আসলে চিকিৎসক না থাকায় জরুরি বিভাগ থেকে রোগী ভর্তি না করে জেলা সদরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এতে জনসাধারনের চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়।
হাসপাতালটির কোন সংস্কার কাজ দীর্ঘ দিন থেকে করা হয়নি। ফলে টয়লেট, মেঝে ও দেওয়ালের রং উঠে গেছে। এতে শেওলার পাশাপাশি জীবাণুর আক্রমণ বেড়ে গেছে। এছাড়া হাসপাতাল এলাকায় প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকায় রোগী ও রোগীর স্বজনদের সঙ্গে কয়েকটি অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে।
চাটখিল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. খন্দকার মোশতাক আহমেদ জানান, হাসপাতালটিতে কোন স্টোর রুম নেই। ফলে প্রয়োজনীয় ঔষধ হাসপাতালের বারান্দায় রাখতে হয়। এতে চলাচলে ব্যাঘাত ঘটার পাশাপাশি বৃষ্টির পানিতে অনেক সময় ঔষধ নষ্ট হয়ে যায়। তাছাড়া হাসপাতালটিতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের ১০টি পদ থাকলেও মেডিসিন, ইএনটি, কার্ডিওলজি, চর্ম, চক্ষু, সার্জারি ও এনেসথেসিয়াসহ ৭টি পদই খালি পড়ে আছে দীর্ঘ দিন ধরে। কেবলমাত্র শিশু, গাহনী ও অর্থোপেডিক বিভাগের ৩ জন চিকিৎসক দিয়ে হাসপাতালটি পরিচালিত হয়ে আসছে।
চিকিৎসকের অভাবে স্থানীয়দের প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য সেবা প্রদান করা যাচ্ছে না বলেও স্বীকার করেন তিনি। এছাড়া হাসপাতালটির ল্যাব ও প্যাথলজিতে আধুনিক মানসম্মত কোন ডিজিটাল যন্ত্রপাতি না থাকায় সঠিক রোগ নির্ণয় করাও সম্ভব হচ্ছে না। বিরাজমান সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য সিভিল সার্জন সহ সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে বারবার অবহিত করা হলেও কোন সুফল পাওয়া যায়নি।
সেবা গ্রহন করতে এসে প্রয়োজনীয় সেবা না পেয়ে অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ৪ লাখ জনসাধারণের চিকিৎসায় একমাত্র সম্বল সরকারি এই হাসপাতালের দূরাবস্থা জনপ্রতিনিধিদের দৃষ্টিতে আসে না। তাই এলাকাবাসী হাসপাতালটিতে জরুরি ভিত্তিতে শূন্য পদে চিকিৎসক নিয়োগ, প্রয়োজনীয় সংস্কার, নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত এবং ল্যাব ও প্যাথলজিতে আধুনিক মানসম্মত ডিজিটাল যন্ত্রপাতি স্থাপনের জন্য স্বাস্থ্যমন্ত্রী সহ সংশ্লিষ্টদের কাছে দাবি জানিয়েছেন।
এসআর