ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

সাতক্ষীরা-১

শরিকদের ছাড় দিতে নারাজ আওয়ামী লীগ, তৎপর বিএনপি-জামায়াত

মিজানুর রহমান, সাতক্ষীরা

প্রকাশিত: ০০:১১, ১৪ এপ্রিল ২০২৩

শরিকদের ছাড় দিতে নারাজ আওয়ামী লীগ, তৎপর বিএনপি-জামায়াত

লৌকিক আচার-আচরণ, বিশ্বাস আর পৌরাণিকতায় সমৃদ্ধ সাতক্ষীরা জেলা

লৌকিক আচার-আচরণ, বিশ্বাস আর পৌরাণিকতায় সমৃদ্ধ সাতক্ষীরা জেলা। নানা কিংবদন্তির প্রবহমান ধারায় সজীব এখানকার ঐতিহ্য। বঙ্গোপসাগরের আঁচল ছোঁয়া সুন্দরবন, আর সুন্দরবনকে বুকে নিয়ে সমৃদ্ধ এখানকার প্রকৃতি, এমনকি অর্থনীতিও। সুন্দরবনের চোখজুড়ানো চিত্রল হরিণ, বিশ্ববিখ্যাত ডোরাকাটা বাঘ থেকে শুরু করে রাজা প্রতাপাদিত্যের জাহাজঘাটা, বিভিন্ন মুঘলীয় কীর্তি, অসংখ্য প্রতœতাত্ত্বিক নিদর্শন, পুরাকালের কাহিনী, জারি-সারি, পালাগান এসবের মধ্যেই সাতক্ষীরার মানুষের আত্মিক পরিচয় গ্রন্থ। এখানে জন্মেছেন কবি, সাহিত্যিক, শিল্পী, সুফি, দরবেশসহ বহু বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব, জন্মেছেন জীবন সংগ্রামে উদ্বুদ্ধ সাহসী মানুষ।

৮ম জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত সাতক্ষীরায় ৫টি সংসদীয় আসন ছিল। কিন্তু নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে নির্বাচন কমিশন ৫টির পরিবর্তে ৪টি আসনে বিন্যস্ত করে। ফলে সাতক্ষীরা-১ ও ২ আসন পূর্বের অবস্থানে থাকলেও বাকি তিনটি সংসদীয় আসন দুটি আসনে পরিণত হয়। সাতক্ষীরা-৩ আসনে আশাশুনি উপজেলার সঙ্গে যুক্ত হয় দেবহাটা উপজেলা ও কালিগঞ্জ উপজেলার চারটি ইউনিয়ন। অপরদিকে কালিগঞ্জ উপজেলার ৮টি ইউনিয়নকে শ্যামনগর উপজেলার সঙ্গে যুক্ত করে গঠিত হয় সাতক্ষীরা-৪ আসন। পাল্টে যায় ভৌগোলিক অবস্থান ও ভোটের হিসাব-নিকাশ। বর্তমানে সাতক্ষীরা জেলায় সংসদীয় আসন হচ্ছে চারটি।

আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সাতক্ষীরার চারটি আসনেই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের যেমন শক্তিশালী প্রার্থী রয়েছে, তেমনি শক্তিশালী প্রার্থী রয়েছে তাদের শরিক জাতীয় পার্টি, ওয়ার্কার্স পার্টি ও জাসদেরও। ঠিক একইভাবে আসনগুলোতে বিএনপির যেমন শক্তিশালী প্রার্থী রয়েছে, তেমনি নিবন্ধন বাতিল হওয়া জামায়াতেরও রয়েছে শক্তিশালী প্রার্থী।

বর্তমানে আসন চারটির সম্ভাব্য প্রার্থীরা প্রকাশ্যে ও গোপনে নিজ নিজ এলাকায় ইতোমধ্যে প্রচারে ব্যস্ত রয়েছেন। তবে, এই মুহূর্তে জেলাবাসীর কাছে সবচেয়ে আলোচ্য বিষয় শরিকদের জন্য সাতক্ষীরার কোন কোন আসন ছাড় দেবে আওয়ামী লীগ। যদিও মহোজোটের শরিক জাতীয় পার্টি বলছে এবার এককভাবে নির্বাচন করবেন তারা।
তালা ও কলারোয়া উপজেলা নিয়ে গঠিত সাতক্ষীরা-১ আসন। আসনটিতে বেশ জোরেশোরেই বইছে নির্বাচনী হাওয়া। চলেছে বিভিন্ন দলের প্রার্থীর প্রচার ও গণসংযোগ। কে পাবেন দলের মনোনয়ন এই বিষয়ে কোনো নিশ্চয়তা না থাকলেও মনোনয়নপ্রত্যাশী সকলেই বলছেন তারা কেন্দ্র থেকে গ্রিন সিগন্যাল পেয়েই মাঠে রয়েছেন। এবার আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের তালিকা অনেক দীর্ঘ। অন্যান্য দলের মনোনয়নপ্রত্যাশীর পাশাপাশি আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশীর সংখ্যা প্রায় অর্ধ ডজন। জেলা রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত নয় এমন অনেকের নামও রয়েছে আওয়ামী লীগ মনোনয়নপ্রত্যাশীর তালিকায়। 
তালা ও কলারোয়া দুটি উপজেলা নিয়ে গঠিত সাতক্ষীরা-১ আসনের আওতায় রয়েছে ২৪টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা। মোট ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ১৭ হাজার ৮৯১ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার রয়েছেন ২ লাখ ৪ হাজার ৮১৮ জন ও পুরুষ ভোটার রয়েছেন ২ লাখ ১৩ হাজার ৭৩ জন। 
সাতক্ষীরা-১ আসনটির বর্তমান সংসদ সদস্য হচ্ছেন ১৪ দলীয় জোটের প্রধান শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির মোস্তফা লুৎফুল্লাহ। ১৯৭৩, ১৯৮৬, ১৯৯৬ ও ২০০৮ সালে আসনটি ছিল আওয়ামী লীগের দখলে। ১৯৯১ সালে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, ১৯৮৮ সালে জাতীয় পার্টি এবং ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে ১৪ দলীয় জোট সমর্থিত ওয়ার্কার্স পার্টির প্রাথী জয়লাভ করেন।
২০০৮ সালের নির্বাচনে জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার শেখ মুজিবুর রহমান বিজয়ী হন জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি হাবিবুল ইসলাম হাবিবকে পরাজিত করে।

এই আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের তালিকায় এগিয়ে রয়েছেন টানা ১৩ বছর ধরে জেলা সভাপতির পদে থাকা সাবেক সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মুজিবর রহমান। তিনি বলেন, তৃণমূলের মতামতকে গুরুত্ব দিলে তিনি মনোনয়ন পাবেন বলে বিশ্বাস করেন । সংসদ সদস্য থাকাকালে এলাকার অনেক উন্নয়ন করেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, সাতক্ষীরা বাইপাস সড়ক নির্মাণে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। এ ছাড়া তালা ও কলারোয়ায় রাস্তা-ঘাট উন্নয়ন হয়েছে তার সময়ে। দলীয় মনোনয়ন পেলে তিনি পুনরায় এলাকার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন বলে জনকণ্ঠকে জানান। 
দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসনটি থেকে ওয়ার্কার্স পার্টির মোস্তফা লুৎফুল্লাহ ১৪ দলের মনোনয়নে নৌকা প্রতীক নিয়ে বিজয়ী হন। কিন্তু গত পাঁচ বছরের মূল্যায়নে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাকর্মীরা আর শরিকদের ছাড় নয়, আওয়ামী লীগের প্রার্থী করার দাবিতে সোচ্চার। এ কারণে ক্ষমতাসীনদের মধ্যে মনোনয়নপ্রত্যাশীর সংখ্যাও অনেক বেশি। 
স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মতে, বর্তমান সরকার টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতায়। ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাতক্ষীরা-১ আসন থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী জয়লাভ করলেও ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জোটের স্বার্থে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সরে দাঁড়ান, ১৪ দলীয় জোটের শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থীকে জয়ী করার পথ সৃষ্টি করে দেন। এরপর থেকে এ আসনটি আর ফিরে পায়নি আওয়ামী লীগ। 
তবে এবার সাতক্ষীরা-১ আসনে কোন শরিক দল নয় বরং আওয়ামী লীগের যে কোনো প্রার্থীকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়ার বিষয়ে গুরুত্ব দিচ্ছে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। কারণ হিসেবে তারা বলছেন, টানা তিন মেয়াদে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায়। আগের চেয়ে তরুণ প্রজন্মের অধিকাংশ ছেলেমেয়ে আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তাছাড়া, দীর্ঘ সময় আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকার কারণে তৃণমূল পর্যায়ে অনেক সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে।

যেটা সমাধানের জন্য একটা নির্দিষ্ট অবস্থান প্রয়োজন। তবে, ওখানকার উপজেলা ও জেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের কিছুটা বিরোধী, দ্বন্দ্ব রয়েছে। এ কারণে সাতক্ষীরা-১ আসনে দলের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে হলে এবার আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থীর কোনো বিকল্প নেই বলেই অভিমত স্থানীয় নেতাকর্মীদের।
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনে এখানে আওয়ামী লীগের শরিক দল ওয়ার্কার্স পার্টির অ্যাডভোকেট মোস্তফা লুৎফুল্লাহ নৌকা প্রতীক নিয়ে জয়লাভ করেন। সবশেষ ২০১৮ সালের নির্বাচনে জোটের একই প্রার্থী পুনরায় নৌকা নিয়ে জয়লাভ করেন। মহাজোটের শরিক হিসেবে টানা দু’বার বিজয়ী সংসদ সদস্য ওয়ার্কার্স পার্টির অ্যাডভোকেট মোস্তফা লুৎফুল্লাহ জনকণ্ঠকে বলেন, দু’দফা এমপি নির্বাচিত হয়ে তিনি এলাকায় জনগণের জন্য কাজ করেছেন। এবার জোটগত মনোনয়ন না পেলে তিনি দলীয়ভাবে নির্বাচন করবেন। ইতোমধ্যে তিনি দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের নিয়ে এলাকায় জনসভা করেছেন। 
সাতক্ষীরার চারটি সংসদীয় আসনের ভেতরে সাতক্ষীরা-১ (তালা-কলারোয়া) আসনে বিএনপি সাংগঠনিকভাবে অনেক শক্তিশালী। এ আসনে দীর্ঘদিন বিএনপি জয় না পেলেও আওয়ামী লীগের শরিক প্রার্থী নিয়ে দলীয় কোন্দল এবারের নির্বাচনে ভাগ্য খুলে দিতে পারে বিএনপির। এখানে বিএনপির সাবেক এমপি, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি, কেন্দ্রীয় বিএনপির প্রকাশনা সম্পাদক হাবিবুল ইসলাম হাবিব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কারাগারে। এ কারণে এই আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী কে হতে পারেন সে বিষয়টি নিয়ে এখনো দলের নেতা কর্মীরা নিশ্চিত নয়। তবে বিকল্প প্রার্থী হিসেবে তার স্ত্রী শাহানারা পারভীন নির্বাচনে অংশ নেবেন এমন প্রচার রয়েছে। 
এদিকে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাতক্ষীরার চারটি আসনে রাজনৈতিক সংগঠনগুলো যখন তৎপর তখন ব্যতিক্রম অবস্থানে জাতীয় পার্টি। টানা দুই মেয়াদে জাতীয় পার্টি দেশের প্রধান বিরোধী দলের ভূমিকায় থাকলেও সেই অর্থে সাতক্ষীরার শহর থেকে গ্রাম পর্যায়ে দলটি নিজেদের জায়গা ও কর্মী সমর্থক তেমন বাড়াতে পারিনি বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন।

এ আসন থেকে সর্বশেষ ১৯৮৮ সালের ৩ মার্চ অনুষ্ঠিত চতুর্থ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির মনোনয়নে সাতক্ষীরা-১ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন সৈয়দ দীদার বখত। সেবারের নির্বাচন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, কমিউনিস্ট পার্টি, ওয়ার্কার্স পার্টিসহ বাংলাদেশের অধিকাংশ প্রধান দলই বর্জন করে। ২০০০ সালে তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলে যোগদান করেন। 
কিন্তু বিএনপি থেকে সাতক্ষীরা-১ আসনের মনোনয়ন না পাওয়ায় তিনি লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টিতে যোগদান করেন। পরবর্তীতে তিনি পুনরায় জাতীয় পার্টিতে ফিরে আসেন এবং ২০১৯ সালের মে মাসে তাকে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য করা হয় এই আসনটিতে সাবেক সংসদ সদস্য ও প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করার সুবাদে এখনও বেশ জনপ্রিয় তিনি। এ কারণে জাতীয় পার্টি থেকে সাতক্ষীরা-১ আসনে সৈয়দ দীদার বখত যে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হবেন সেটা এক প্রকার নিশ্চিত বলা চলে। নির্বাচনে অংশগ্রহণ প্রশ্নে তিনি জানান, সময় ও পরিস্থিতি বলে দেবে তিনি নির্বাচন করবেন কিনা।
কলারোয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে তিনবার নির্বাচিত ফিরোজ আহমেদ স্বপন এবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন আশা করেন। ছাত্রলীগের রাজনীতি থেকে উঠে আসা এই তরুণ নেতা দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে আছেন। সাতক্ষীরার কলারোয়ায় শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা মামলার ১নং সাক্ষী হিসেবে তিনি বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখেন বলে জানান। দুটি উপজেলা নিয়ে গঠিত এই আসনে কলারোয়া উপজেলা থেকে তিনি একাই দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশা করেন, আঞ্চলিকতার টানেও তিনি অনেকটা এগিয়ে আছেন বলে তার বিশ^াস। 
এই আসনে তালা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ১৪ দল ও মহাজোটের তালা উপজেলার আহ্বায়ক শেখ নূরুল ইসলাম এবার দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার জন্য মাঠে রয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নুরুল ইসলাম দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি এই আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন লাভ করেন এবং দলীয় প্রতীক পাওয়ার পরও জোটের স্বার্থে তিনি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে তিনি দলীয় মনোয়ন পাওয়ার আশায় মাঠে কাজ করছেন বলে জানান। 
এই আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছেন- আওয়ামী যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মো. রফিকুল ইসলাম। তরুণ এই রাজনীতিক এবার সাতক্ষীরা-১ আসনে নৌকার হাল ধরতে মাঠে রয়েছেন। কেন্দ্রীয়ভাবে তিনি মনোনয়ন পাওয়ার জন্য চেষ্টায় রয়েছেন। দলীয় মনোনয়ন পেলে তিনি নৌকার হাল ধরে মাঠে থাকতে চান। 
এই আসনে সাবেক এমএলএ, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ স ম আলাউদ্দিনের কন্যা জেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক লায়লা পারভীন সেঁজুতি দলীয় মনোনয়ন প্রত্যশা করেন। তিনিও মাঠে কাজ করছেন। এখানে মনোনয়ন প্রত্যাশা করেন কৃষক লীগের জেলা কমিটির সাবেক সভাপতি বিশ^জিৎ সাধু। গত দুটি সংসদ নির্বাচনে তিনি দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশীদের তালিকায় ছিলেন। বিশ^জিৎ সাধু মনে করেন, দীর্ঘদিন মাঠের রাজনীতির সঙ্গে কাজ করে তিনি তৃণমূলের অনেক কাছে রয়েছেন। 
এই আসনে জাসদের জেলা সভাপতি ওবায়দুস সুলতান বাবলু এবার জোটের মনোনয়ন প্রত্যাশা করেন। তরুণ এই নেতা এলাকায় কাজ করছেন দীর্ঘদিন ধরে। তবে জোটগতভাবে তিনি দুইবার মনোনয়ন প্রত্যাশী হলেও তিনি জোটের মনোনয়ন বঞ্চিত হন। দ্বাদশ নির্বাচনে অংশ নিতে তিনি জোটের মনোনয়ন পাবেন এমনটি প্রত্যাশা করে জনকণ্ঠকে বলেন, মনোনয়ন না পেলে তিনি জাসদের দলীয় প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে নামবেন ।
এই আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশায় মাঠে রয়েছেন তরুণ নেতা জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ হোসেন। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাহী কমিটির সহ-সভাপতি, তালা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি ছিলেন। সাতক্ষীরা-১ আসনে তিনি আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশা করেন। এ ছাড়া এই আসনে বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি সরদার মুজিব মনোনয়ন প্রত্যাশায় মাঠে রয়েছেন। 
সাতক্ষীরা-১ আসনে জামায়াতের পক্ষ থেকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসনে জামায়াতের একক প্রার্থী হিসেবে কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য অধ্যক্ষ ইজ্জত উল্লাহর নাম ঘোষণা করেছে জামায়াতে ইসলামী। এর আগে সর্বশেষ ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তৎকালীন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আনসার আলী জামায়াতের প্রার্থী হিসেবে এ আসন থেকে জয়লাভ করেন। এরপর অনুষ্ঠিত কোনো সংসদ নির্বাচনে এ আসন থেকে জয় পায়নি জামায়াতে ইসলামী। তবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসনটি ফিরে পেতে গোপনে নির্বাচনী কার্যক্রম চালাচ্ছে জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীরা।

×