ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

পদ্মা রেল সেতু

শেষ স্লিপার এখন মাওয়ায়

স্টাফ রিপোর্টার, মুন্সীগঞ্জ ও নীলফামারী

প্রকাশিত: ২৩:৩৪, ২৮ মার্চ ২০২৩

শেষ স্লিপার এখন মাওয়ায়

পদ্মা রেলসেতুর শেষ পর্যায়ের কাজ চলছে

পদ্মা রেল সেতুর শেষ স্লিপার মঙ্গলবার প্রকল্প এলাকায় এসে পৌঁছেছে। এর আগে সোমবার সন্ধ্যায় ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে এটি পৌঁছে। সেখান থেকে খালাস করে মঙ্গলবার মাওয়ার প্রকল্প এলাকায় নিয়ে আসা হয়। এই অংশটি আজ সকালে কংক্রিটিং করার কথা রয়েছে। এদিকে পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে চলাচলের জন্য চীন থেকে আনা অত্যাধুনিক রেলকোচগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের ব্যবস্থাপক-১ ব্রিগেডিয়ার সাঈদ আহমেদ জানান, স্লিপারটি প্রকল্প এলাকায় পৌঁছেছে। বাকি ৭ মিটার রেলপথের ঢালাই হবে আজ। পুরো সেতুর পাথরবিহীন রেললাইন নির্মাণ শেষ করে শুধু এই স্লিপারটির জন্য ৭ মিটার কংক্রিটিং করা যাচ্ছিল না। চীন থেকে স্টিলের এই স্লিপারটি পৌঁছাতে বিলম্বের কারণে কিছু চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছিল। তবে তার অবসান ঘটেছে। দায়িত্বশীল প্রকৌশলীরা জানান, সেতুর মাঝামাঝি ৫ নম্বর মুভমেন্ট জয়েন্টের একটি স্টিলের স্লিপার নিয়ে চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছিল। তাই চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জরুরি ভিত্তিতে বিমানে করে স্লিপারটি নিয়ে আসে।
প্রকৌশলীরা জানান, মূল সেতুতে ১১ হাজার ১৪০টি স্লিপার স্থাপন হয়েছে। মুভমেন্ট জয়েন্টের স্টিলের স্লিাপারগুলো ছাড়া বাকি কংক্রিটের সব স্লিপার চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ফরিদপুরের ভাঙ্গা পুরনো রেল স্টেশনের পাশে স্লিপার ফ্যাক্টরি স্থাপন করে সেখানেই তৈরি করেছে এই স্লিপার। তবে বিশেষ তাপামাত্রায় মুভমেন্ট জয়েন্ট এবং স্টিলের স্লিপারগুলো তৈরি করে আনা হয় চীন থেকে।
রেলকোচ প্রস্তুত ॥ এদিকে পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে চলাচলের জন্য চীন থেকে আনা অত্যাধুনিক রেলকোচগুলো কমিশনিং (পরীক্ষা-নিরীক্ষা) কাজ চলছে নীলফামারীর সৈয়দপুর রেলকারখানায়। ইতোমধ্যে সৈয়দপুর থেকে এই কোচটি ঈশ্বরদী পর্যন্ত পরীক্ষামূলক রান সম্পন্ন করে সৈয়দপুরে পুনরায় ফিরিয়ে আনা হয়েছে।
মঙ্গলবার সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানা সূত্র জানায়, আমদানি করা কোচগুলো চীনের সিআরআরসি ট্যাকশন কো¤পানিতে তৈরি। স্বপ্নের পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে ওই কোচগুলো চলাচল করবে। এজন্য ১০০টি অত্যাধুনিক কোচ আমদানি করা হচ্ছে। এর মধ্যে ৪০টি কোচ ইতোমধ্যে দেশে এনে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় আনা হয়েছে। আধুনিক কোচগুলোত রাখা হয়েছে ল্যাপটপ ও মোবাইল চার্জের ব্যবস্থা। আসনগুলো ফোল্ডিং করা যায়। রয়েছে ডিজিটাল মনিটর ও ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা। টয়লেটগুলোতে রয়েছে হাই ও লো কোমড ব্যবস্থা।  প্রতিটি শোভন কোচে ৯২টি, এসি চেয়ারকোচ ও স্লিপার কোচে রয়েছে ৩৫টি করে আসন ব্যবস্থা।
সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার ক্যারেজসপের প্রধান ইনচার্জ মোমিনুল ইসলাম বলেন, চীন থেকে আমদানি করা কোচগুলোতে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের কারণে ভ্রমণ হবে আরামদায়ক। সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক (ডিএস) সাদেকুর রহমান বলেন, চীন থেকে আনা কোচগুলোর মধ্যে চার দফায় ৩০টি কোচ এ কারখানায় আনা হয়। আমরা সেই কোচগুলোকে নানাভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে প্রস্তুত করেছি। ইতোমধ্যে এসব কোচের ট্রায়াল রান সম্পন্ন করা হয়েছে।

×