ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

টঙ্গীবাড়ির মোল্লা বাজার 

২৫২ মিটার সেতু নির্মাণে পৌনে ৫ বছর পার

নিজস্ব সংবাদদাতা, টঙ্গীবাড়ি, মুন্সীগঞ্জ

প্রকাশিত: ০০:৪২, ২১ মার্চ ২০২৩

২৫২ মিটার সেতু নির্মাণে পৌনে ৫ বছর পার

টঙ্গীবাড়ি, মুন্সীগঞ্জ : নির্মাণাধীন মোল্লা বাজার সেতু

মোল্লা বাজার সেতু ২০১৮ সালের ৬ জুলাই নির্মাণ শুরু হয়ে ২০২০ সালের ৫ ডিসেম্বর কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। তিনবার মেয়াদ বৃদ্ধি করে সেতু নির্মাণ শুরুর প্রায় পৌনে ৫ বছর পর উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার জানান কাজ চলছে। ৮টি পিলারের ওপর ৭টি স্প্যান বসিয়ে ২৫২ মিটার  দৈর্ঘ্য ও ১০ মিটার প্রস্থের সেতুটি ৩৩ কোটি ২৭ লাখ ৪২ হাজার টাকা ব্যয়ে ঢাকার সুরমা এন্টারপ্রাইজ নামক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করছেন।

সেতুটি নির্মাণ হলে মুন্সীগঞ্জ জেলা সদর, টঙ্গীবাড়ি বা লৌহজং উপজেলার মানুষ বেতকা হয়ে ঢাকার পোস্তগোলা পর্যন্ত ২৭ কিলোমিটার পথ ৩০ মিনিটে যেতে পারবে। বর্তমানে বঙ্গবন্ধু এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে বা মোক্তারপুর হয়ে ঢাকায় পৌঁছতে সময় লাগছে দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা। কেরানীগঞ্জ উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী কাজী মাহমুদুল্লাহ জানান, সেতুটি নির্মাণকাজে এখন গতি এসেছে। আজও ঢালাই চলছে। আশা করছি চলতি অর্থবছরের মধ্যে নির্মাণকাজ শেষ হবে।

সেতুর ৭টি স্প্যানের মধ্যে ৩নং স্প্যান বসানোর কাজ চলছে আর ৮টি পিয়ারের মধ্যে ৫টি পিয়ার নির্মাণ সম্পন্ন বাকিগুলোর মধ্যে নদীর ২টি, পশ্চিম পাড়ের ১টিসহ মোট ৩টির কাজ বাকি।  সেতুর পশ্চিম পাশে অ্যাপ্রোচ, সংযোগ সড়কের কাজ শুরুই হয়নি। তবে পূর্ব পাশে ১ বছর পূর্বে সামান্য বালি ফেলার পর এখন সেখানে কাজ বন্ধ রয়েছে। 
স্থানীয় বাসিন্দা নাজমুল হাসান মোল্লা জানান, মূলত প্রতিবছর বর্ষা মৌসুম শুরুর পূর্বে ১ থেকে দেড় মাস  সেতুর কাজের গতি আসে। বাকি সময় ৪-৫ জন শ্রমিক টুকুর টাকুর কাজ করে তো করে না।
উপজেলা এলজিইডি সূত্রে জানা যায়, সেতুর পশ্চিম পাশে জমি অধিগ্রহণ  সম্পন্ন হয়নি, করোনাকালীন কাজের গতি কমে যাওয়াসহ ঠিকাদারের গাফিলতিতে সেতু নির্মাণকাজ বিলম্বিত হচ্ছে।

আর ঠিকাদার সুরমা এন্টারপ্রাইজের আইয়ুব আলীকে সেতু এলাকায় পাওয়া যায়নি তার মুঠোফোনও বন্ধ। কর্মরত হেড রড মিস্ত্রি জানান, নক্সা বার বার পরিবর্তন হওয়ায় বিলম্বিত হয়েছে কাজ। এখনো পশ্চিম পাড়ে দ্বিতল ভবন রয়েছে সেতু নির্মাণের স্থানে তার কোনো সুরাহা হয়নি। সেতু নির্মাণস্থল মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলা সংলগ্ন কেরানীগঞ্জের কোন্ডা ইউনিয়নের মোল্লার হাট গিয়ে দেখা যায়, নদীর পূর্ব পাশে তিনটি পিলারের ওপর ২টি স্প্যান নির্মাণ করা হয়েছে।

নদীতে দুটি পিলার নির্মাণ ঢিলেঢালা চলছে। পশ্চিম পাশে ৩টি পিলার নির্মাণ হয়েছে ১টি স্প্যানের নির্মাণকাজ শেষের দিকে। আর ব্রিজের পশ্চিম পাশের শেষ স্প্যান সেখানে বসানো হবে তার নিচেই দ্বিতল একটি ভবনের অংশ রয়েছে। যা না ভাঙলে ব্রিজ নির্মাণ সম্পন্ন হবে না। নির্মাণাধীন সেতুর সামান্য দক্ষিণ পাশ দিয়ে মুন্সীগঞ্জ সদর, টঙ্গীবাড়ি, লৌহজং ও সিরাজদিখান উপজেলার প্রায় ১৫ লাখ মানুষ ঢাকায় যাতায়াত করে স্থানীয়ভাবে  তৈরি ১টি ফেরি ও ২টি ট্রলারের মাধ্যমে। স্থানীয়দের অভিযোগ, এই সেতু নির্মাণ এলাকার দুই পাড়েই দেশের শীর্ঘস্থানীয় একাধিক হাউসিং। তারা কম দামে জমি ক্রয়ের জন্য সেতু নির্মাণকাজে ষড়যন্ত্র করছে। আর ছোট একটি নদী দিয়ে লাখো মানুষ, পণ্য সামগ্রী ও যানবাহন পারাপারে রয়েছে টাকার ছড়াছড়ি। 
উপজেলা প্রকৌশলী আরও জানান, ব্রিজের পশ্চিম পাশের শেষ স্প্যানের নিচে থাকা দ্বিতল দালানটি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়াধীন। ব্রিজের নিচ দিয়ে মোল্লা হাটে যাতায়াতের জন্য একটি সড়ক ও থাকবে।

×