ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

শাহজাদপুরে সক্রিয় বালু সিন্ডিকেট

নিজস্ব সংবাদদাতা, শাহজাদপুর, সিরাজগঞ্জ

প্রকাশিত: ০১:০৭, ১৬ মার্চ ২০২৩

শাহজাদপুরে সক্রিয় বালু সিন্ডিকেট

উপজেলার পোতাজিয়া ইউনিয়নের গঙ্গাপ্রসাদ এলাকার কোল্ড স্টোরের পাশে জমি লিজ নিয়ে নদী খননের বালু বিক্রি

শাহজাদপুরে করতোয়া নদী খননের কাজ অসম্পূর্ণ থাকলেও সম্পূর্ণ হতে চলেছে স্তূপ করে রাখা নদী খননের শত কোটি টাকার বালু বিক্রি। আর অবৈধভাবে বালু বিক্রির জন্য বালু সিন্ডিকেট একদিকে নিয়েছে নয়া কৌশল, অন্যদিকে প্রশাসনের নমনীয়তা ও উদাসীনতায় নির্বিঘেœ একটি চক্র হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা। ফলে সরকার কোটি কোটি টাকা রাজস্ব হারালেও মাথাব্যথা নেই সংশ্লিষ্টদের। এদিকে, নদী খননের বালু লুট নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ শাহজাদপুরের সচেতন মহলে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা গেলেও বেপরোয়া বালু সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় আরও বেপোরোয়া হয়ে উঠেছে বালু সিন্ডিকেটের সঙ্গে সম্পৃক্ত অসাধু বালু ব্যবসায়ীরা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার পোতাজিয়া ইউনিয়নের গঙ্গাপ্রসাদ এলাকার কোল্ড স্টোরের পাশে অন্তত ১৫ বিঘা ফসলি জমি কৃষকদের কাছে থেকে কৌশলে লিজ নিয়ে স্তূপ করে রাখা হয়েছে প্রায় দুই কোটি সিএফটি নদী খননের বালু। সেখান থেকে প্রকাশ্যেই এক্সকেভেটর মেশিন (ভেকু) দিয়ে বালু তুলে নির্বিঘেœ একের পর এক ছুটে চলছে ড্রাম ট্রাক। প্রতিদিন ৩-৪ লাখ সিএফটি বালু এই পয়েন্ট থেকে লুট করে নিয়ে যাচ্ছে স্থানীয় প্রভাবশালী সোবহান এবং কামরুল।

বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে তাদের বালুর পয়েন্টের অফিসে গেলে সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে দ্রুত সটকে পড়ে তারা। পরে মুঠোফোনে সোবহানের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, স্থানীয় পরিবহন ব্যবসায়ী অরুণ খানের নির্দেশেই তারা বালু বিক্রি করছেন। জানতে চেয়ে পরিবহন ব্যবসায়ী অরুণ খানের মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি প্রতিবেদককে উল্টো প্রশ্ন করেন, আপনাদের কে বলেছে এগুলো নদী খননের বালু? মামলা করে তিনি জিতেই পয়েন্ট থেকে বালু বিক্রি করছেন।
এদিকে, উপজেলার হাবিবুল্লাহ নগর ইউনিয়নের দরগার চর, শ্রীফলতলা এলাকা ঘুরে দেখা যায়, নদী খননে বিভিন্ন পয়েন্টে স্তূপ করে রাখা বালু অধিকাংশ বিক্রি হয়ে গেলেও সম্প্রতি কয়েকটি বালুর পয়েন্ট টেন্ডার হয়। সেটাও কৌশলে মামলা করে স্থিতাবস্থা জারি করিয়ে সেটাও অমান্য করে রাতের অন্ধকারে লুট করছে একটি প্রভাবশালী চক্র। সন্ধ্যার পর থেকেই একের পর এক আলো জ্বালিয়ে ছুটে আসে ট্রাক। তারপর দানবের মতো শব্দ করে বালু ভর্তি করে ছুটে যায় নির্ধারিত গন্তব্যের দিকে। এই লুটপাটে স্থানীয় অসাধু বালু সিন্ডিকেট কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিলেও তা বন্ধের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নেই কোন মাথাব্যথা। 
এ ব্যাপারে শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাদিয়া আফরিন জানান, অবৈধভাবে যদি কেউ রাতের অন্ধকারে বালু বিক্রি করে থাকে তাহলে অবশ্যই খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বিষয়টি নিয়ে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী (শাহজাদপুর অঞ্চলের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) মোহাম্মদ ইমতিয়াজের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি এ বিষয়ে কোনো প্রকার মন্তব্য করতে রাজি হননি। পরে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘শাহজাদপুরের দায়িত্বপ্রাপ্ত হলেও বালুর বিষয়ে তাকে কোনো দায়িত্বে রাখা হয়নি।’

×