
সদর উপজেলার পূর্ব ইলিশা এলাকায় গমখেতে পোকার আক্রমণ
ভোলায় গমের ফলন ভালো হলেও তা পাকার আগেই খেতেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। খেতে সেচের অভাব ও পোকার আক্রমণে গমগাছ মরে যাচ্ছে। এক সপ্তাহ ধরে ভোলার ইলিশাসহ বিভিন্ন গমখেতের এ অবস্থা। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছে কৃষক।
কৃষকরা জানান, গেল বছর গমের দাম ভালো পাওয়ায় এ বছর বহু কৃষক গমের আবাদ করে। প্রথম দিকে গাছে গমের ফলন ভালো দেখা যায়। এতে করে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছিল। কিন্তু এক সপ্তাহ ধরে গমের শীষ মরে যাওয়ায় কৃষকের হাসি মলিন হতে শুরু করেছে। তাদের কপালে এখন চিন্তার ভাঁজ। ভোলা সদর উপজেলার পূর্ব ইলিশা, পশ্চিম ইলিশা, বাপ্তা ইউনিয়নসহ বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায়, কৃষকের বিস্তীর্ণ খেতে বাতাসে দুলছে গমের শীষ। দূর থেকে দেখলেই মনে হয় সোনালি রঙের গাছে গম যেন পেকে রয়েছে। কিন্তু বাস্তবে তা নয়।
পরানগঞ্জ এলাকার মোকাম্মেল হকসহ একাধিক কৃষক জানান, আর মাত্র দুই সপ্তাহ পর তাদের গম কেটে ঘরে তোলার কথা ছিল। এমন সময়ই গমের গাছগুলো গোড়া থেকে শুকিয়ে মরে গিয়ে সোনালি রং ধারণ করেছে। গমের থোরগুলো চিটা হয়ে গেছে। আবার কোনো কোনো খেতে গমের শীষে পোকার আক্রমণ নিয়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় দিন কাটছে কৃষকরা।
ভোলায় সদর উপজেলার ইলিশা ইউনিয়নের তালুকদার চরগ্রামের কৃষক মোহাম্মদ আলী জানান, এ বছর সরকারিভাবে ২০ কেজি গমের বীজ পেয়ে নিজে আরও ৪৮ কেজি গমের বীজ কিনে এক একর জমিতে গমের চাষ করেছেন। এতে তার প্রায় ২২ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। গমের ভালো ফলন এসেছে। কিছুদিন পরই গম ঘরে তোলার আশায় ছিলেন তিনি। কিন্তু এক সপ্তাহ ধরে তার গমের খেতে পোকার আক্রমণে অধিকাংশ গমের শীষ নষ্ট হয়ে গাছ মরে যাচ্ছে।
এ অবস্থায় তিনি গম নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছে। সদর উপজেলা কৃষি কর্মকতা এ এফ এম শাহাবুদ্দিন জানান,যারা দেরিতে গম আবাদ করেছে তাদের খেতে পানির অভাবে সেচ না দেওয়ায় গমের গাছ ও শীষ সাদা হয়ে যাচ্ছে। এর প্রতিকারে সেচ দেওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। ভোলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক হাসান ওয়ারিসুল কবির জানান, গমেখেতে তিনবার সেচ দিতে হয়। সঠিক সময়ে সেচ না দেওয়ায় কিছু কিছু খেতের গমের শীষ সাদা হয়ে নষ্ট হয়েছে। কিছু কিছু খেতে মাজরাপোকার আক্রমণ হয়েছে। তবে সেগুলো খুব কম। আমরা কৃষকদের সেচ দেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছি। তবে আর মাত্র দুই সপ্তাহ পর গম কাটা হয়ে যাবে।