ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

মুন্সীগঞ্জে আলু তোলা শুরু, লোকসানের শঙ্কা

স্টাফ রিপোর্টার, মুন্সীগঞ্জ

প্রকাশিত: ০১:০১, ১৪ মার্চ ২০২৩

মুন্সীগঞ্জে আলু তোলা শুরু, লোকসানের শঙ্কা

জমিতে পুরুষ শ্রমিকের পাশাপাশি নারী শ্রমিকরা আলু উত্তোলনের কাজে ব্যস্ত সময় পাড় করছেন 

শ্রীনগরে জমিতে আলু  তোলা শুরু হয়েছে। আশানুরূপ ফলন হলেও আলুর কাক্সিক্ষত মূল্য ও এর পাইকার না থাকায় লোকসানের শঙ্কায় পড়েছেন স্থানীয় কৃষক। এর মধ্যে আলু সংরক্ষণের হিমাগারগুলোতেও এ বছর বস্তাপ্রতি ৩০-৪০ টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে। উপজেলায় এ বছর প্রায় ২ হাজার ৩শ’ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কৃষক মাঠে কর্মযজ্ঞ শুরু করেন।

জানা গেছে, প্রতি কানি (১৪০ শতাংশ) জমিতে আলু চাষে খরচ ধরা হচ্ছে ১ লাখ ৮০ হাজার থেকে ২ লাখ টাকা। সমপরিমাণ জমিতে আলুর উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হচ্ছে গড়ে ৪শ’ মণ। সব খরচ বাদে কৃষকের প্রতিমণ আলুর উৎপাদন মূল্য ধরা হচ্ছে ৫শ’ থেকে ৬শ’ টাকা করে। গেল ২ বছর কাক্সিক্ষত ফলন ও বাজার মূল্য না পাওয়ায় লোকসানের মুখে পড়েন। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক  লোকসান কাটিয়ে উঠতে এবারও লাভের আশায় আলু খেত করে লোকসানের শঙ্কা করছেন। খোলাবাজারে আলুর কেজি এখন বিক্রি হচ্ছে ১৮-২০ টাকা করে।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের মধ্যে বীরতারা, আটপাড়া, তন্তর, কুকুটিয়া ও ষোলঘর ইউনিয়নের খৈয়াগাঁও ও পূর্ব দেউলভোগে আলুর আবাদ করা হয়েছে। এরই মধ্যে চলতি জমিতে আলু উত্তোলন শুরু হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে এ অঞ্চলের আলু উত্তোলন শেষ হবে। এ অঞ্চলে বেশির ভাগ জমিতে ডায়মন্ড জাতের লাল ও সাদা আলুর আবাদ করা হয়েছে। ডায়মন্ড জাতের আলুর জমিতে আলু উত্তোলন ও সংরক্ষণের কাজে ব্যস্ত সময় পার করেছেন স্থানীয় কৃষকরা। বীরতারা এলাকার মোকলেছ মেম্বার (৭০), আবুল হোসেন নীলচাঁন (৬০), সালেপুরের আনোয়ার হোসেন (৫০) বলেন, আলু চাষে কানিপ্রতি প্রায় ২ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। এলাকা ভিত্তিক খরচ কিছুটা কম-বেশিও হতে পারে। কানিতে গড়ে ৪শ’ মণ আলু উৎপাদনের টার্গেট করছেন তারা। 
শ্রীনগর কোল্ডস্টোরেজ লিমিডেট ম্যানেজার শিশির আহমেদ জানান, গতবার হিমাগারে আলুর বস্তাপ্রতি ভাড়া ধরা হয়েছে ২২০ টাকা করে। ৩ দফা বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির কারণে শুধু বাড়তি বিদ্যুৎ বিল হিসেবে বস্তাপ্রতি ৩০ টাকা বেশি ধরা হচ্ছে। 
উপজেলা কৃষি অফিসার শান্তনা রানী জানান, স্থানীয়রা আলু উত্তোলন শুরু করেছেন। এ বছর উপজেলায় প্রায় ৬২ হাজার ৯শ’ টন আলু উৎপাদণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হচ্ছে। অন্য একটি প্রকল্পের আওতায় আলুতে ১০টি প্রদর্শনী রয়েছে।

বোয়ালমারীতে পেঁয়াজ চাষিদের কপালে চিন্তার ভাঁজ
সংবাদদাতা, বোয়ালমারী, ফরিদপুর থেকে জানান, ফরিদপুর জেলা পেঁয়াজ চাষের জন্য বিখ্যাত। আর কিছুদিন পরেই পুরোদমে শুরু হবে পেঁয়াজ তোলা। বোয়ালমারী উপজেলায় এবারও পেঁয়াজের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। গতবারের লোকসান পুষিয়ে এবার লাভের আশা যেন গুড়েবালি। মৌসুম শুরুর আগেই পেঁয়াজের তেমন দাম নেই। এ অবস্থা বজায় থাকলে লাভ তো দূরে থাক খরচও উঠবে না। কৃষকের কপালে তাই চিন্তার ভাঁজ। হতাশার পাল্লাও ভারি হচ্ছে। 
বোয়ালমারী উপজেলার দাদপুর ইউনিয়নের পেঁয়াজ চাষি গনি মিয়া বলেন, গত বছর প্রায় ছয় একর জমিতে হালি পেঁয়াজের চাষে সব মিলিয়ে প্রতি একর জমিতে ৭০ থেকে ৭৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ফলন ভালো হলেও দাম ভালো না পাওয়ায় বেশ লোকসানে পড়তে হয়। এবারও লাভের আশায় প্রায় পাঁচ একরের বেশি জমিতে পেঁয়াজের আবাদ করেছি। তাতে গতবারের মতো এবারও লোকসান গুনতে হবে।

এ বিষয়ে ফরিদপুরের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক জিয়াউল হক বলেন, এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় পেঁয়াজের উৎপাদন ভালো সম্ভাবনা রয়েছে। এবার ৩৫ হাজার ৮৭৬ হেক্টর জমিতে হালি পেঁয়াজের চাষ হচ্ছে। আশা করা যাচ্ছে ফলনও বাম্পার হবে।

×