ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার ৮ বছরেও চালু হয়নি

​​​​​​​পার্বত্যাঞ্চল প্রতিনিধি, খাগড়াছড়ি

প্রকাশিত: ২১:১৭, ৫ মার্চ ২০২৩

আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার ৮ বছরেও চালু হয়নি

.

নির্মাণের বছরেও পুরোপুরিভাবে চালু হয়নি খাগড়াছড়ির  দীঘিনালায় প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারটি।পার্বত্য  এলাকার মানুষের জন্য প্রাকৃতিক দুর্যোগে আগাম প্রস্তুতি নিতে বছর আগে প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার নির্মাণ করা হলেও পুরোপুরিভাবে কার্যক্রম শুরু করতে না পারায় সঠিক পূর্বাভাস না পাওয়ায় পাহাড়ি অঞ্চলের কয়েক লাখ মানুষ প্রাকৃতিক দুর্যোগে ঝুঁকিপূর্ণভাবে জীবনযাপন করছে। এদিকে স্থানীয়রা অপরিচ্ছন্নতা কর্তৃপক্ষের বেখেয়ালে যন্ত্রপাতি অকেজো হওয়ার অভিযোগ করলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জনবল সংকটকেই দায়ী করছেন।

সরেজমিন খাগড়াছড়ির দীঘিনালার পোমাংপাড়ায় অবস্থিত প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারে গিয়ে দেখা যায়, আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারে মেইন গেট তালাবদ্ধ। চারদিকে সুনসান নীরবতা। এসময় দ্বায়িত্বরত বেলুন মেকার  সুগতি চাকমার সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারে আসেন। তিনি জানান, অফিসে তিনিসহ মাত্র দুজন কর্মরত রয়েছেন। আরেকজন উচ্চ পর্যবেক্ষক মনিরুজ্জামান ছুটিতে। তিনি একাই দ্বায়িত্ব পালন করছেন।আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের কার্যক্রমের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন,’আশপাশে সেগুনবাগান থাকায় সিগন্যাল ঠিকমতো পাওয়া যায় না। এতে করে আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের কার্যক্রম পরিচালনা করতে অসুবিধা হচ্ছে।

আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালে উপজেলার পোমাংপাড়া এলাকায় প্রায় কোটি টাকা ব্যয়ে প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারটি নির্মাণ করে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। এখানে রয়েছে বাতাসের গতিবেগ, বৃষ্টিপাত, বায়ুচাপ তাপমাত্রা এবং বাতাসের দিক নির্ণয়ের আধুনিক যন্ত্রপাতি। তবে অফিসের চারপাশেই রয়েছে সেগুন বাগান। আর আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার থেকে ঢাকার প্রধান আবহাওয়া কেন্দ্রে তথ্য পাঠানোর কথা। সে অনুযায়ী সারাদেশের চাষের সুবিধার্থে অনুকুল আবহাওয়া এবং বৈরি আবহাওয়ার বার্তা জানানোর কথা কৃষকের মাঝে; যা কৃষিতে সুফল আনার কথা ছিল। তার কিছুই হয়নি।

আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্রে আরও জানা যায়, ‘বিশ্ব আবহাওয়া নীতিমালা অনুযায়ী আবহাওয়ার পূর্বাভাস সংক্রান্ত যন্ত্রপাতি থেকে ৩৩০ গজ দূরত্বে বাগান বা বৃক্ষ থাকলে সংকেত গ্রহণ প্রেরণে জটিলতা তৈরি হয়। কিন্তু আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের পাশেই সেগুন বাগান থাকায় কাজ করা যাচ্ছে না। সূত্র জানায়, ‘এই নিয়ে সেগুন বাগান মালিকের সঙ্গে কার্যকরী আলাপ না হওয়ায় তা ঝুলে রয়েছে।তবে অপরিচ্ছন্নতা কর্তৃপক্ষের   বেখেয়ালে যন্ত্রপাতি অকেজো হওয়ার পাশাপাশি এখানে ভুতুড়ে পরিবেশ বিরাজ করছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

স্থানীয় বাসিন্দা জাহিদুল ইসলাম বলেন, আবহাওয়া অফিসে যারাই আছেন তারা ঠিকঠাক দেখাশোনা করলে আশেপাশে জঙ্গল হয়ে যেতোনা। এখানে কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনায় ভুতুড়ে পরিবেশ বিরাজ করছে।স্থানীয় আরেক বাসিন্দা মো. হাসান বলেন, নির্মাণের পর থেকেই আবহাওয়া অফিসটিতে অপরিচ্ছন্নতা বেখেয়ালে যন্ত্রপাতি অকেজো হয়ে যাচ্ছে। এখানে জনবল বাড়ানোর পাশাপাশি ঠিকঠাক তদারকি দরকার।

বিষয়ে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের উপপরিচালক . সাদিকুল আলম বলেন, নির্মাণের পর থেকেই এই আবহাওয়া পর্যবেক্ষণারে জনবল সঙ্কট চরমে। আবহাওয়াবিদসহ কর্মকর্তা কর্মচারীর চাহিদা থাকলেও সেখানে মাত্র একজন উচ্চ পর্যবেক্ষক এক জন বেলুন মেকার দিয়ে অফিসের কার্যক্রম চালাতে হচ্ছে। আমরা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে জনবলের চাহিদাপত্র প্রেরণ করেছি।

×