ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

পরিবেশের ছাড়পত্র ছাড়াই ইট পুড়ছে

স্টাফ রিপোর্টার, বগুড়া অফিস

প্রকাশিত: ০০:৪৮, ২ মার্চ ২০২৩

পরিবেশের ছাড়পত্র ছাড়াই ইট পুড়ছে

অবৈধ ভাঁটিতে পোড়ানো হচ্ছে পুরোদমে ইট

বগুড়ার ইটভাঁটিরই লাইসেন্স নেই। পরিবেশ সংক্রান্ত ও জেলা প্রশাসনের ছাড়পত্র ছাড়াই চলছে প্রায় দুশ’ ইটভাঁটি।  অবৈধ এসব ইটভাঁটিতে ইট পোড়ানো চলছে কোনো প্রকার লাইসেন্স ছাড়াই। প্রায় দুবছর ধরে বগুড়ার কোনো ইটভাঁটি পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে ছাড়পত্র নেয়নি বা নবায়ন করেনি। জেলা প্রশাসনও ইট পোড়ানোর কোনো লাইসেন্স নবায়ন করেনি। 
অপরদিকে ইটভাঁটি চালানোর পূর্ব শর্ত হচ্ছে পরিবেশের ছাড়পত্র। পরিবেশ অধিদপ্তর বলছে তাদের ছাড়পত্র না থাকায় বগুড়ার কোনো ইটভাঁটির আর বৈধতা নেই। পরিবেশ অধিদপ্তর বগুড়া কার্যালয় থেকে বলা হয়েছে অবৈধ ইটভাঁটির বিরুদ্ধে তারা জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের এনফোর্সমেন্ট উইং অভিযান পরিচালানা করছে। এর মধ্যে জরিমানা ও ইটভাঁটি উচ্ছেদসহ তা বন্ধ করা হচ্ছে। 
পরিবেশ অধিদপ্তর বগুড়া অফিস জানায়, সাম্প্রতি বগুড়ায় কোনো ইটভাঁটির ছাড়পত্র দেুয়া হয়নি। ইট প্রস্তুত ও ভাঁটি স্থাপন নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধিত আইনের শর্ত অনুসরণ করে কোনো ইটভাঁটির পক্ষ থেকে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেওয়ার ও নবায়নের জন্য আবেদনও তারা পাননি। পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, সংশোধিত ইটপ্রস্তুত আইন অনুযায়ী কৃষি জমি, আবাসিক বাণিজ্যিক, পৌর এলাকা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ হাসপাতাল এলাকার ১ কিলোমিটারের মধ্যে কোনো ইটভাঁটি স্থাপন নিষিদ্ধ।

এ ছাড়া ইট তৈরির মাটি মজা পুকুর, খালবিল, নদী, হাওড়, পতিত জায়গা ছাড়া অন্য কোনো জায়গা থেকে মাটি কাটা যাবে না। জেলা প্রশাসন থেকে ইট পোড়ানোর লাইসেন্স ও ইটভাঁটির মাটি ব্যবহারের চুক্তিনামার অনুমোদন নিয়ে পরিবেশ ছাড়পত্রের নবায়নের আবেদনে থাকতে হয়। বগুড়ার ইটভাঁটিগুলো  স্থাপন নিষিদ্ধ এলাকার মধ্যে রয়েছে। পূর্বে ইটভাঁটিগুলো ইট পোড়ানো নিয়ন্ত্রণ আইনে পরিচালিত হতো। ২০১৩ সাালে ইট প্রস্তুত ও ভাঁটি স্থাপন আইন হলে সনাতন পদ্ধতির বেশিরভাগ ইটভাঁটি পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্রের বাইরে যায়। পরবর্তীতে ২০১৯ সালে সংশোধিত আইন হলে নতুন সংশোধিত শর্ত মেনে কোনো ইটভাঁটি পরিবেশের ছাড়পত্র নবায়ন করেনি।

পরিবেশ অধিদপ্তর বগুড়া কার্যালয়ের তথ্যানুযায়ী বগুড়ায় বর্তমানে ১৯৩টি ইটভাঁটি রয়েছে। তবে বর্তমান চালু থাকা কোনো ইটভাঁটির পরিবেশ ছাড়পত্র নেই অথবা নবায়ন করা হয়নি। পরিবেশ অধিদপ্তর বগুড়ার সহকারী পরিচালক ফারহানা আক্তার জানান, বগুড়ার কোনো ইটভাঁটিরই লাইসেন্স বা পরিবেশ ছাড়পত্রের নবায়ন নেই। এ কারণে বগুড়ার সকল ইটভাঁটিই অবৈধ। এসব অবৈধ ইটভাঁটির বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় অভিযান চলছে।

তিনি জানান, চলতি বছরের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে অবৈধ ইটভাঁটির বিরুদ্ধে ৭টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে ১৭টি ইটভাঁটির ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে উচ্ছেদ, জরিমানা ও ইটভাঁটি বন্ধ করে দেয়া রয়েছে। এর মধ্যে ৯টি বন্ধ ও ৪টি উচ্ছেদ করা হয়েছে। জেলা প্রশাসকের কার্যালয় জানিয়েছে তাদের তালিকায় বগুড়ায় ২৩৮টি ইটভাটি থাকলেও এখন আর নবায়ন হচ্ছে না। বগুড়া ইটভাঁটি মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান বাদল জানান, শুধু বগুড়ায় নয় সারাদেশে প্রায় সাড়ে ৮ হাজার ইটভাঁটি অবৈধ। তিনি স্বীকার করেন, বগুড়ায় কোনো ইটভাঁটির লাইসেন্স নেই।

×