ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

চর্চার অভাবে হারিয়ে যাচ্ছে আদিবাসীদের মাতৃভাষা

নিজস্ব সংবাদদাতা, নাটোর

প্রকাশিত: ২১:৩০, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

চর্চার অভাবে হারিয়ে যাচ্ছে আদিবাসীদের মাতৃভাষা

 নিজস্ব ভাষা ‘সাদরি’ শিক্ষা থেকে বঞ্চিতরা

নাটোর সদর উপজেলার দরাপপুর গ্রামের সাথী পাহান ও দীঘি মু-া মাতৃভাষা ‘সাদরি’ ভাষায় একে অপরের সঙ্গে কথা বলছিল। কিন্তু তারা ‘সাদরী’ ভাষায় কথা বলতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছিল না। কয়েকটি শব্দ শেষ না করেই লজ্জামিশ্রিত হাসি ফুঠে ওঠে তাদের চোখে-মুখে। মাতৃভাষা পুরোপুরি না জানার কারণে কথা বলতে গিয়ে থেমে যেতে হচ্ছিল তাদের। মাতৃভাষা বলতে গিয়ে বারবার বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত শব্দ উচ্চারণ করছিল তারা। 
আদিবাসী পরিবারগুলোতে বর্তমানে বাংলা ভাষার প্রভাব বেড়েছে। ছোট বেলা থেকেই পারিবারিক ম-লে মা-বাবার কাছ থেকে মাতৃভাষা না শেখার কারণে আজ তাদের এই অবস্থা। শুধু সাথী আর দীঘি নয়, বরং নাটোর জেলায় বসবাসরত অধিকাংশ আদিবাসী শিশুদের ক্ষেত্রে একই অবস্থা দৃশ্যমান। আদিবাসী শিশুরা চর্চার অভাবে ভুলতে বসেছে তাদের মাতৃভাষা। সরকারি-বেসরকারিভাবেও কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ায় হারিয়ে বসেছে আদিবাসীদের ভাষা-সংস্কৃতি।

জাতীয় আদিবাসী পরিষদের নাটোর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক কালিদাস রায় জানান, পারিবারিক ও সামাজিক পরিম-লেই শিশুরা মাতৃভাষা শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। মা-বাবারা  ছোটবেলা থেকেই শিশুদের বাংলা ভাষা শেখাচ্ছে। এ ছাড়া বিদ্যালয়েও বিঘ্নিত শিক্ষা কার্যক্রম ও শিক্ষক সমস্যার কারণে মাতৃভাষায় শিক্ষালাভ করতে পারছে না শিক্ষকরা। 
সমস্যা উত্তরণে পরিবার ও সরকারি-বেসরকারিভাবে উদ্যোগ নেওয়ার বিকল্প নেই। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. গোলাম নবী জানান, সাদরি ভাষার বই বিতরণ করা হয়েছে। কিন্তু সাঁওতালি ভাষার বই আসেনি। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) নাদিম সারওয়ার জানান, মাতৃভাষা রক্ষা করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মাতৃভাষা রক্ষায় শিক্ষক স্বল্পতা, প্রশিক্ষণ, নিরসনসহ লজিস্টিক সাপোর্ট যা প্রয়োজন সেগুলো বাস্তবায়নে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হবে। মাতৃভাষা রক্ষায় সরকারের যে দৃষ্টিভঙ্গি তার সঙ্গে সমন্বয় করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে আমরা বদ্ধপরিকর।

×