ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বালাসী-বাহাদুরাবাদ নৌপথ 

১৪৫ কোটির টাকা ব্যয়ে নির্মিত টার্মিনালে ভেড়ে না কোনো লঞ্চ

নিজস্ব সংবাদদাতা, গাইবান্ধা

প্রকাশিত: ২০:০৯, ২১ জানুয়ারি ২০২৩

১৪৫ কোটির টাকা ব্যয়ে নির্মিত টার্মিনালে ভেড়ে না কোনো লঞ্চ

লাসী-বাহাদুরাবাদ নৌপথ

যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ করতে গত বছরের এপ্রিলে চালু করা হয় ব্রহ্মপুত্র নদের বন্ধ থাকা বালাসী-বাহাদুরাবাদ নৌপথ। এ জন্য ফুলছড়ি উপজেলার বালাসী ও জামালপুরের বাহাদুরাবাদ ঘাটে ১৪৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয় দুটি টার্মিনাল। সেই নৌপথ এখন অনুপযোগী হয়ে বন্ধ হয়ে গেছে লঞ্চ চলাচল। ব্যয়বহুল টার্মিনালগুলো আসছে না কোনো কাজে।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উত্তরাঞ্চলের সঙ্গে ঢাকার সংযোগ ঘটাতে ১৯৩৮ সালে চালু করা নৌপথটি কয়েকটি ঘাট আর নদী ঘুরে নাব্যতা-সংকটের কারণে ২০০০ সালে বন্ধ হয়ে যায়। দীর্ঘ ২২ বছর বন্ধ থাকার পর ২০২২ সালের ৯ এপ্রিল এখানে পরীক্ষামূলকভাবে লঞ্চসেবা চালু করে বাংলাদেশে অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। 

নৌরুট সচল রাখতে উভয় পাশে দুটি টার্মিনাল নির্মাণ করা হয়। এ জন্য ২০১৭ সালে প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছিল ১২৪ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। পরে দুই দফায় প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে ১৪৫ কোটি ২৭ লাখ টাকা দাঁড়ায়। কিন্তু কয়েক মাস যেতে না যেতেই ২৬ কিলোমিটার নৌপথে বিভিন্ন সমস্যা দেখিয়ে লঞ্চ চলাচলের অনুপযোগী ঘোষণা করে বিআইডব্লিউটিএ।

বালাসীঘাট টার্মিনাল ঘুরে দেখা গেছে, টোল আদায়ের বুথ, বাস টার্মিনাল, ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশের ব্যারাক, পাইলট বিশ্রামাগার, অফিস, মসজিদ, খাবারের হোটেল, আনসার ব্যারাকসহ নানা স্থাপনা রয়েছে সেখানে। তবে অবকাঠামোগুলো জনমানবহীন পড়ে আছে।স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এই নৌপথে বড় লঞ্চ তো দূরের কথা, ছোট লঞ্চও চলাচল করতে পারছে না। 

যেখানে বড় বড় কার্গো জাহাজসহ ফেরিতে বাস-ট্রাক পারাপার হওয়ার কথা, সেখানে ছোট লঞ্চ দিয়ে শুধু যাত্রী পারাপার হওয়ায় সাধারণ জনগণের মধ্যে দেখা দিয়েছে হতাশা। নদীতে বেশি পানি না থাকার কারণে সেটাও আবার এখন বন্ধ। ছোট ছোট নৌকায় ঝুঁকি নিয়ে নদী পার হচ্ছে যাত্রীরা। ফুলছড়ির ঝিগাবাড়ি চরের বাসিন্দা জয়নাল বলেন, চকচকে বিল্ডিংগুলো করল বড় বড় নৌকা-লঞ্চ চলাচলের জন্য। কই কিছু তো দ্যাখছি না। ধাড়ত আরও কয়েকটা লঞ্চ ছিল, তাক নাকি বেচে দিছে শুননু।

এ বিষয়ে গাইবান্ধা জেলা নাগরিক মঞ্চের আহ্বায়ক এ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম বাবু বলেন, টার্মিনাল দুটি অযথা পড়ে আছে। ন্যুনতম কাজে আসছে না। এ রুটে লঞ্চ-ফেরি চলাচলের জন্য দীর্ঘদিন থেকে আন্দোলন করে আসছি। নাব্যতা-সংকটের দোহাই দিয়ে লঞ্চ চলাচল করা সম্ভব নয় বলে এখন দাবি করছে কর্তৃপক্ষ। যাচাই-বাছাই না করে কাজ করা হয়েছে দাবি করে সিরাজুল বলেন, যাঁরা এটা করেছেন, তাঁরা দায়িত্বশীল কাজ করেননি। প্রকল্প করার আগে সবকিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার দরকার ।

 

এমএস

×