ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

বেপরোয়াভাবে চলছে রেজিস্ট্রেশনবিহীন ১০ চাকার ৪০টি ডাম্পার ট্রাক

সংবাদদাতা, গোবিন্দগঞ্জ, গাইবান্ধা 

প্রকাশিত: ১৭:৫০, ১৪ জানুয়ারি ২০২৩; আপডেট: ১৮:২২, ১৪ জানুয়ারি ২০২৩

বেপরোয়াভাবে চলছে রেজিস্ট্রেশনবিহীন ১০ চাকার ৪০টি ডাম্পার ট্রাক

রেজিস্ট্রেশনবিহীন ডাম্পার ট্রাক 

আইন শৃঙ্খলা কমিটির উপদেষ্টার নির্দেশ উপেক্ষা করে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে পুলিশের সামনেই বেপরোয়াভাবে চলছে  রেজিস্ট্রেশন নম্বরবিহীন ১০ চাকার ৪০টি ডাম্পার ট্রাক। রাস্তাঘাটের ক্ষতিসাধনসহ সবসময়ই দুর্ঘটনার জন্ম দেয়া অবৈধ গাড়িগুলো পুলিশের সামনেই চলাচল করলেও কোন আইনি ব্যবস্থা না নেয়ায় গোবিন্দগঞ্জ থানা, হাইওয়ে থানা পুলিশ এবং ট্রাফিক পুলিশের ভূমিকা নিয়ে  নানা ধরণের অভিযোগ উঠেছে। 

একাধিক স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, প্রায় ২ বছর ধরে দক্ষিণাঞ্চল থেকে রেজিস্ট্রেশন নম্বরবিহীন ১০ চাকার ৪০টি ট্র্যাক একটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে গোবিন্দগঞ্জে আনা হয়। পরে এই সিন্ডিকেট গোবিন্দগঞ্জ থানা, হাইওয়ে থানা ও ট্রাফিক পুলিশ সাথে গোপন আলোচনা করে উপজেলার ৭০টি পয়েন্ট থেকে দিন-রাত বালু ও বিভিন্ন ফসলি জমির মাটি দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করে আসছে। 

এই ট্রাকগুলির বেপরোয়া চলাচল স্থানীয়দের দুভোর্গ ও দুর্ঘটনার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। হাইলোড করে বালু পরিবহণের সময় মাটি বালু পড়ে মহাসড়ক, আঞ্চলিক সড়ক ও গ্রামীণ সড়কে চলাচলের করে রাস্তাঘাট, ব্রীজ, কালভার্ট যেমন নষ্ট হচ্ছে তেমনি সড়কের পাশে বসবাসকারী ও সড়কে চলাচলকারী সাধারণ মানুষের চোখে মুখে ও বাড়ীতে বালু ঢুকে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে। স্থানীয়রা আক্রান্ত হচ্ছেন শ্বাসকষ্ট সহ নানা ধরণের অসুখে। আর বেপরোয়া চলাচলের কারণে প্রাণহানী ও পঙ্গুত্বে বরণ করার ঘটনা ঘটেছে ইতোমধ্যেই। এ বিষয়ে বারবার অভিযোগ করলেও অজ্ঞাত কারণে অবৈধ এই যানবাহনগুলো চলাচল বন্ধে পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসন কোন কার্যকর ভূমিকা দেখা যাচ্ছেনা বলে অভিযোগ উঠেছে।

এরমধ্যেই গত ৬ ডিসেম্বর রাত সাড়ে ১১টায় উপজেলা শহরের থানা মোড়ে মিলন নামের এক ফল ব্যবসায়ী বাড়ী যাওয়ার সময় বেপরোয়া ডাম্পার ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে মারা যান। ক্ষুব্ধ জনতা অবৈধ এসব ট্রাক চলাচলের প্রতিবাদে ঢাকা-রংপুর মহাসড়ক অবরোধ করলে পুলিশ ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিলে অবরোধ তোলা হয়। কিন্তু নম্বরবিহীন অবৈধ এই ডাম্পার ট্রাক এখনও বহাল তবিয়তে চলাচল করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। 

এ বিষয়ে গতমাসে উপজেলা আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভায় এই ডাম্পার ট্রাকগুলো চলাচলের ব্যপারে নানা ধরণের ক্ষতির বিষয় আলোচনা হয়। কমিটির প্রধান উপদেষ্টা গাইবান্ধা-৪ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য প্রকৌশলী মনোয়ার হোসেন চৌধুরী এই নম্বরবিহীন ট্রাক বন্ধে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার জন্য গোবিন্দগঞ্জ থানা, গোবিন্দগঞ্জ হাইওয়ে থানা এবং ট্রাফিক পুলিশকে নির্দেশ দেন। তারপরেও অবৈধ এই যানবাহন চলাচল অব্যহত থাকায় ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন স্থানীয়রা। 

গোবিন্দগঞ্জে কর্মরত ট্রাফিক পুলিশের ইন্সপেক্টর চন্দন রায় বলেন, তার কাছে এ ব্যাপারে আইন শৃঙ্খলা কমিটির কোন সিদ্ধান্ত আসেনি।

গোবিন্দগঞ্জ হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আমিনুল ইসলাম বলেন, সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নম্বরবিহীন দেখে ডাম্পার গুলি আটক করেছিলাম। কিন্তু পরবর্তীতে মালিকপক্ষ কাগজপত্র দেখিয়ে সেগুলো নিয়ে যায়। ট্রাকে নম্বর প্লেট লাগানোর আশ্বাস দেয়ায় গাড়ীগুলো ছেড়ে দিয়েছি। গ্রামীণ সড়কে ডাম্পার ট্রাক বন্ধ করার দায়িত্ব আমাদের নয়। এটা গোবিন্দগঞ্জ থানা পুলিশের দায়িত্ব।

গোবিন্দগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইজার আলী বলেন, ইউএনও মহোদয় ছুটিতে রয়েছেন। তিনি গোবিন্দগঞ্জে এলে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
 

এমএস

×