ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৩ মে ২০২৫, ৩০ বৈশাখ ১৪৩২

গরু চোর সন্দেহে দুই ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা

নিজস্ব সংবাদদাতা, নড়াইল 

প্রকাশিত: ১২:৩২, ২৬ ডিসেম্বর ২০২২; আপডেট: ১৭:৪১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২২

গরু চোর সন্দেহে দুই ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা

নিহতদের লাশ উদ্ধার করেছে পৃুলিশ।

নড়াইল সদর উপজেলার বীড়গ্রামে গরু চোর সন্দেহে দুই ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) ভোর রাত সাড়ে ৩টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। 

পুলিশ খবর পেয়ে সকাল ৯টার দিকে নড়াইল-গোবরা সড়কের পল্লী বিদ্যুৎ স্টেশনের উত্তর পাশের শস্য ক্ষেতের মধ্য থেকে এবং দক্ষিণ পার্শ্বের মেহগনি বাগানের মধ্যে পড়ে থাকা মৃতদেহ দুটি উদ্ধার করে। ময়নাতদন্তের জন্য পরে লাশ দুটি নড়াইল সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়। 

নিহত একজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তিনি হলেন বাগেরহাট জেলার ফকিরহাট উপজেলার দাড়িয়া বারইডাঙ্গা গ্রামের গফুর শেখের ছেলে আসাদুল শেখ (৩৬)। অপর ব্যক্তির নাম-ঠিকানা জানা যায়নি। নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: মাহমুদুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান,গত এক মাসের মধ্যে বীড়গ্রামের সুশেন বিশ্বাসের ১টি, উজিরপুর গ্রামের রাম বিশ্বাসের ৫টি গরু চুরি করে নিয়ে যায় চোরেরা। ওই ঘটনার পর থেকে দুই গ্রামের লোকজন গরু চোর ধরতে নিয়মিত পাহারা দিত। সোমবার ভোর রাত সাড়ে ৩টার দিকে বীড়গ্রামের রেবো বিশ্বাসের বাড়ি চোরেরা গরু চুরি করতে গেলে বাড়ির মালিক চোর চোর বলে চিৎকার করতে থাকলে আশপাশের লোকজন সংঘবদ্ধ হয়ে চোরদের ধাওয়া দেয়। গ্রামবাসীর ধাওয়া খেয়ে চোর দলের ৩-৪ জন পালিয়ে যায়। 

এ সময় গরু চোর সন্দেহে আসাদুল শেখ ও অজ্ঞাত ব্যক্তিকে ধরে লোকজন গনপিটুনি দিয়ে নড়াইল-গোবরা সড়কের পল্লী বিদ্যুৎ স্টেশনের উত্তর ও দক্ষিণ পার্শ্বে ফেলে রেখে যায়। ঘটনাস্থলেই দুই ব্যক্তি মারা যান।  

বীড়গ্রামের সুশীল বিশ্বাসের স্ত্রী রচনা বিশ্বাস জানান, এক মাস এক সপ্তাহ আগে প্রথমে তার একটি গরু চুরি হয়েছে। এরপর একই গ্রামের হরিচানের গরু চুরি হয়েছে। এছাড়া মুশুড়িয়াসহ বিভিন্ন এলাকার মানুষের গরু চুরি হয়েছে। চোরেরা পিকআপ নিয়ে এসে গরু চুরি করে নিয়ে যায়।

উজিরপুর গ্রামের আমিরোন নেছা জানান, এলাকায় একের পর এক গরু চুরি হওয়ার কারণে এখন পাহারা দেয়া হচ্ছে। অধিকাংশ গরুর মালিক রাতে জেগে পাহারা দেয়। গত রাতে গরু চুরির ঘটনার পর গরুর মালিকের চিৎকারের সঙ্গে সঙ্গে লোকজন ঘর থেকে বেরিয়ে পড়েছে। এইসব চোরদের দিনের বেলায় ফেরী করতে এলাকায় দেখেছি।

স্থানীয় কলোড়া ইউপি চেয়ারম্যান আশীষ কুমার বিশ্বাস ও একাধিক ব্যক্তি জানান, ইউনিয়নের বীড়গ্রামসহ আশেপাশের গ্রামে দিনের বেলায় ফেরিওয়ালা সেজে এরা কম্বল, থালা-বাটি ও অন্যান্য মালামাল বিক্রি করে খোঁজখবর নিয়ে রাতের বেলা চুরি কাজে লিপ্ত হতো। বীড়গ্রামের সুশেন বিশ্বাসের ১টি, উজিরপুর গ্রামের রাম বিশ্বাসের ৫টি গরু চুরি করে নিয়ে যাওয়ার পর থেকে গ্রামের লোকজন পাহারা দেয়া শুরু করে।

নড়াইল সদর থানার ওসি মো. মাহমুদুর রহমান বলেন, নড়াইল সদর উপজেলার কলোড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় গরু চুরির ঘটনা ঘটছে। চোরদের ধরার জন্য এলাকাবাসীকে সচেতন করা হয়। অনেক এলাকায় পাহারা বসানো হয়। কলোড়া ইউনিয়নের বীড়গ্রামে গরু চুরির ঘটনায় এলাকাবাসী চোরদের ধরে গণধোলাই দিয়ে মেরে ফেলেছে। নিহত দুজনের মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নড়াইল সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। 

 

এসআর

×