ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

অনিয়ম হলে তাৎক্ষণিক অ্যাকশন ॥ মোস্তফা

নিজস্ব সংবাদদাতা, রংপুর

প্রকাশিত: ২৩:৪৮, ২২ ডিসেম্বর ২০২২

অনিয়ম হলে তাৎক্ষণিক অ্যাকশন ॥ মোস্তফা

সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আগামী ২৭ ডিসেম্বর রংপুর সিটি নির্বাচন

সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আগামী ২৭ ডিসেম্বর রংপুর সিটি নির্বাচনে নৌকার পক্ষে রায় দেবে নগরবাসী। আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া বৃহস্পতিবার সকালে নগরীর শাপলা চত্বর এলাকায় গণসংযোগে এসে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। ডালিয়া বলেন, উন্নয়ন বঞ্চিত রংপুরবাসী তাদের ভাগ্যোন্নয়নে একজোট হয়েছেন। নির্বাচনী গণসংযোগে গিয়ে আমরা ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি।

এই গণজোয়ার ২৭ ডিসেম্বর নৌকার পক্ষে রায় দিবে বলে আমি মনে করি। গণসংযোগে উপস্থিত ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আবুল কাশেম, দিলশাদ ইসলাম মুকুল, জেলা আওয়ামী  লীগের আইন সম্পাদক জিয়াউর ইসলাম জিয়া, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মেহেদী হাসান রনি, মহানগর মহিলা লীগের ইসরাত আরা বর্ণাসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ।
অপরদিকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, নির্বাচনে অনিয়ম হলে তাৎক্ষণিক অ্যাকশন হবে। তিনি বলেন, নির্বাচনে ভোটগ্রহণ ও ফল ঘোষণায় কেউ কোথাও অনিয়মের চেষ্টা করলে তা প্রতিহত করা হবে। সদ্য সাবেক এই মেয়র বলেছেন, কেউ যদি ভোটে অনিয়ম করতে চায়, তবে সে বোকার স্বর্গে বাস করছেন। নগরীর ২২৯টি ভোটকেন্দ্রের কোথাও যদি অনিয়ম করার চেষ্টা করা হয়, তাহলে জাতীয় পার্টি তাৎক্ষণিক অ্যাকশন নেবে। প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে পাহারায় আমাদের শতাধিক কর্মী থাকবে।

তারা ভোটে অনিয়ম করতে আসা যে কোনো ধরনের অশুভ শক্তিকে প্রতিহত করবে। বৃহস্পতিবার দুপুরে নগরীর কাচারি বাজার গণসংযোগকালে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি। মোস্তফা বলেন, নির্বাচনে লাঙলের পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। বিগত নির্বাচনের চেয়ে আরও বেশি ভোটের ব্যবধানে রংপুরের মানুষ আমাকে নির্বাচিত করবে ইনশাআল্লাহ। তবে জনগণের রায় নিয়ে যেন কোনো ধরনের কারচুপি না হয় সেদিকেও তীক্ষè দৃষ্টি রাখছি।

কেউ অনিয়ম করলে অবস্থা অনুযায়ী তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, রংপুর সারাদেশের চেয়ে আলাদা একটি জায়গা। এখানকার মানুষ যেমন ঠা-া তেমনি গরম, আর গরম হলে তাদের থামানো যাবে না। আমি মনে করি কোনো ধরনের আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নেবে না নির্বাচন কমিশন। তারা সঠিক সিদ্ধান্তই নিয়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত করবে। তিনি উল্লেখ করেন, রংপুর সিটি করপোরেশনের বর্ধিত ওয়ার্ডে শতভাগ সেবা নিশ্চিতের আগে কর না নেয়ার যে নির্বাচনী ইশতেহার ছিল তা বাস্তবায়ন করেছি।

‘২০১৭ সালের নির্বাচনের আগে বর্ধিত ওয়ার্ডগুলোতে শতভাগ নাগরিকসেবা নিশ্চিত করার আগে করারোপ না করার যে ইশতেহার দিয়েছিলাম তা রেখেছি। আমরা এ পর্যন্ত ৭৫ ভাগ উন্নয়ন দিতে পেরেছি আরও ২৫ ভাগ বাকি। ১৮টি ওয়ার্ড ছাড়াই সর্বোচ্চ কর আদায় হয়েছে জানিয়ে বিদায়ী মেয়র বলেন, ১৫টি ওয়ার্ডের আদায়কৃত কর এর টাকা দিয়ে ৩৩ ওয়ার্ড চালিয়েছি।

এ জন্য কর আদায়কারী, কর নির্ধারণকারীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে কাজে লাগাতে হয়েছে। করদাতাদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে কর দেয়ার ব্যাপারে বলা হয়েছে। লিফলেট বিতরণ এবং প্রচার চালানো হয়েছে। ফলে কর আদায় বেড়েছে। মোস্তফা আরও বলেন, আমার কর্মই আমাকে ভালো ফল দিবে।
আগামী ২৭ ডিসেম্বর ৪ লাখ ২৬ হাজার প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে গণজোয়ারের প্রমাণ হবে। আমি মনে করি সেই দিন গণরায়ের প্রতিফলন ঘটবে। বিপুল ভোটের ব্যবধানে লাঙল বিজয়ী হবে। সাধারণ মানুষের উচ্ছ্বাস-উদ্দীপনাই বলে দিচ্ছে মানুষ শুধু মুখের বুলিতে নয়, কথা ও কাজে বিশ্বাসী। আমি গত পাঁচ বছরে উন্নয়নমূলক কাজের পাশাপাশি জনগণের প্রতিনিধি হিসেবে তাদের সঙ্গে থেকে আস্থাভাজন হতে পেরেছি। মানুষের ভালোবাসা, ভালোলাগা এবং আস্থা অর্জনটাই আমার বড় সম্পদ।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান ও মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক এস এম ইয়াসির, সিনিয়র সহ-সভাপতি লোকমান হোসেন, সহসভাপতি জাহেদুল ইসলাম, জেলা জাপার সদস্য সচিব হাজী আব্দুর রাজ্জাক, নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আইন সম্পাদক অ্যাডভোকেট সৈয়দ ফারুক আলম, জাপার কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হাসানুজ্জামান নাজিম প্রমুখ।
রংপুরে নির্বাচন কমিশনার রাশিদা সুলতানা ॥ নির্বাচন কমিশনার রাশিদা সুলতানা বলেছেন, রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করা হবে। নির্বাচনে যত ইভিএম দরকার তার থেকে দ্বিগুণ ইভিএম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ভোট চলাকালীন ইভিএমে কোনো সমস্যা হলে এক্সপাট রয়েছেন তারা তাৎক্ষণিক সমাধান করে দেবেন। ইভিএমে কারচুপির কোনো সুযোগ নেই বরং ইভিএমের মাধ্যমে একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব।

তিনি আরও বলেন, ভোট চলাকালীন ইভিএমে ভোট প্রদান সংক্রান্ত একটি কাগজের কপি লাইনে দাঁড়ানো ভোটারদের দেখানো হবে ভোট কিভাবে দিতে হবে। বৃহস্পতিবার দুপুরে রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন উপলক্ষে রংপুর সরকারি কলেজের অডিটরিয়ামে প্রিসাইডিং অফিসারদের সঙ্গ এক মতবিনিময় সভা শেষে তিনি এসব বলেন। রাশিদা সুলতানা বলেন, রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে আইনের কাঠামোয় যা যা দরকার সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে পুলিং এজেন্ট, প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ, মক ভোটের আয়োজন, ইভিএম  নিয়ে সচেতনতা সৃষ্টি, নির্বাচনে লেবেল ফিল্ড নিশ্চিতকরণ নিশ্চিতে কাজ করছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন চলাকালীন সময়ে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা তার ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করবেন। সেই সময়ে প্রশাসনের কেউ হস্তক্ষেপ কিংবা প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করলে আমরা নির্বাচন কমিশনকে জানাতে বলছি।

এরকম কিছু ঘটলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তাছাড়া নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে প্রয়োজন মোতাবেক সর্বোচ্চ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দায়িত্বে থাকবে। এসময় উপস্থিত ছিলেন রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা আব্দুল বাতেন, রংপুর বিভাগীয় কমিশনার সাবিরুল ইসলাম, মেট্রোপুলিশ কমিশনার নুরে আলম মিনা, জেলা প্রশাসক ড. চিত্রলেখা নাজনীনসহ অন্য কর্মকর্তারা।

×