ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

পাটি, পাখা আর নকশীকাঁথায় জীবিকা

প্রকাশিত: ০৫:৩৫, ১৬ জানুয়ারি ২০১৬

পাটি, পাখা আর নকশীকাঁথায়  জীবিকা

শীতল পাটি, তালের পাখা ও নকশী কাঁথার ওপর ভর করে এখনও ময়মনসিংহের অনেক নারী জীবন ও জীবিকা চালিয়ে যাচ্ছে। ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ের মশাখালি ইউনিয়নের বলদি পরিচিতি পেয়েছে হাত পাখার গ্রাম নামে। এখানকার অনেক পরিবারের জীবন ও জীবিকা পাখানির্ভর। একই উপজেলার নামা রওহা গ্রামের ঘরে ঘরে তৈরি হয় তালের পাখা। নিগুয়ারির কুরচাই গ্রামে তৈরি হচ্ছে শীতলপাটি। আর ময়মনসিংহ শহর ও শহরতলীর চুরখাই, সুতিয়াখালিসহ অনেক এলাকায় এখনও বাণিজ্যিকভাবে তৈরি হচ্ছে নকশী কাঁথা। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে এই নকশী কাঁথা যাচ্ছে ইউরোপ আমেরিকাসহ বিশ্বের নানা দেশে। নকশী কাঁথা শিল্পের ওপর ভর করে অনেক নারী হয়েছেন স্বাবলম্বী। বিশেষ করে দুস্থ বিধবা স্বামী পরিত্যক্তা কিংবা অসহায় নারীদের জীবন জীবিকা সচল রেখেছে এই নকশী কাঁথা। ময়মনসিংহের জেলা সদর থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরের উপজেলা গফরগাঁও। এই উপজেলা সদর থেকে আরও ১৪ কিলোমিটার দূরের গ্রাম বলদি। এই গ্রামের প্রতিটি ঘরে ঘরে তৈরি হয় হাতপাখা। সুতি কাপড়ের জমিনে সুই সুতো দিয়ে তৈরি নানা নকশা খচিত ফুল, পাখি ও প্রকৃতির ছবি এঁকে বানানো হচ্ছে হাতপাখা। রয়েছে সুতি কাপড়ের জমিনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু ও নৌকার ছবি। বলদি গ্রামের ঘরে ঘরে তৈরি এই হাতপাখা শিল্পের সঙ্গে জড়িত শত শত নারী কেবল পরিবারের সচ্ছলতাই আনছে না, অনেকে সমাজ ও পরিবারের বোঝা নামের অপবাদ দূর করে হয়েছে স্বাবলম্বী। অনেক পরিবারের স্কুল ও কলেজ পড়ুয়া মেয়েরা বাড়তি আয়ের জন্য অবকাশে তৈরি করছে হাতপাখা। শীতের সময় এই পাখার চাহিদা কমে গেলেও গরমে রয়েছে ব্যাপক। দেশের নানা প্রান্ত থেকে পাইকার এসে বারই গ্রাম থেকে হাতপাখা নিয়ে যায়। পরে ফেরি করে হাত পাখা বিক্রি করে দেশের নানা জায়গায়। বিশেষ করে ট্রেন, বাস ও লঞ্চে গরমের সময়ে হাতপাখার কদর অনেক বেশি। দামও তুলনামূলক অনেক সস্তা। শীতল পাটি ও তালের পাখা তৈরি করে ব্যস্ত সময় পার করছে কুরচাই ও নামা রওহা গ্রামের নারীরা। এক সময় জামালপুরের নকশী কাঁথার সুনাম ছিল দেশ বিদেশে। জামালপুর জেলার অসংখ্য দুস্থ নারী এ শিল্পের সঙ্গে জড়িয়ে ভাগ্যের পরিবর্তন আনতে সক্ষম হয়েছে। Ñবাবুল হোসেন ময়মনসিংহ থেকে
×