স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশ থেকে মৌসুমি বায়ু বিদায় নেবে আর কিছু দিনের মধ্যে। এরপর শীতের আগমনী বার্তা শুরু হবে। কমে আসবে তাপমাত্রা। কিন্তু শরতে প্রকৃতি যেন আরও বেশি উষ্ণ হয়ে পড়ছে। তাপমাত্রা বাড়ছে। প্রখর হচ্ছে সূর্যতাপ। প্রচ- গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়ছে জীবনযাত্রা। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, দেশের ওপর বিরাজমান মৌসুমি বায়ু কম সক্রিয় অবস্থায় থাকার কারণে বৃষ্টিপাতের দেখা মিলছে না। তাপমাত্রা বেড়ে যাচ্ছে। তবে আগামী তিনদিনের মধ্যে বৃষ্টির প্রবণতা বাড়তে পারে বলে তারা জানিয়েছে। প্রকৃতিতে এখন বাংলা আশ্বিন মাস। এই মাসের বৈশিষ্ট্য হলো দিনে নরম হাওয়া আর রাতের বেলায় শিশির ঝরা। তাই কবি নজরুল লিখেছেন ‘আবার আশ্বিন হাওয়া, শিশির ছেঁচা রাত্রি। কিন্তু আশ্বিন আসলেও হাওয়া বা রাতে শিশির কোনটাই দেখা মিলছেন না। রাতে দিনে প্রচ- গরমে ঘুম হারাম হয়ে পড়ার জো। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট উষ্ণতার প্রভাব দেশজুড়ে স্পষ্ট অনুভব করা যাচ্ছে।
ঋতু বৈচিত্রের ধরণ অনুযায়ী বর্ষার অবসানের পর প্রকৃতি এক অপূর্ব শোভা বর্ধন করতে থাকে শরতকালে। এই সময় নীল আকাশে সাদা মেঘের ভেলা ভেসে বেড়ায়। তবে এই ঋতুর প্রথম মাস ভাদ্রে কিছুটা তাপমাত্রা বেড়ে যায়। আদ্রতাও সর্বোচ্চ পৌঁছে। শরতে ভোরবেলায় ঘাসের ডগায় শিশির জমে। শরতের শেষে রোদের তেজ আস্তে আস্তে কমতে থাকে। শুরু হয় শীতের আগমনী হাওয়া। প্রকৃতির এই বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী প্রকৃতি থেকে শরতের বিদায় গান শুরু হয়েছে। এরপরেই শুরু হবে শীতের আগমনী বার্তা। কিন্তু শরতের এই বিদায় বেলায় গরমে অতিষ্ট হয়ে পড়ছে সাধারণ মানুষ।
আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, এবার বর্ষায় কাক্সিক্ষত বৃষ্টি দেখা মেলেনি। পুরো বর্ষা জুড়ে ছিল প্রচ- গরম। এবার বর্ষার বিদায় বেলায় প্রকৃতি একই আচরণ করেছে। প্রতিবছর বর্ষায় বৃষ্টি না হলেও এর বিদায় বেলায় বেশ বৃষ্টির দেখা মিলত। এবার আবহাওয়ার চরিত্র যেন সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। শীতকালে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। বর্ষায় বৃষ্টির দেখা নেই। বৈশাখ শুরুর পর থেকে থেমে থেমে তাপপ্রবাহ অব্যাহত ছিল। তার রেশ যেন এখনও কাটছে না।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার ঢাকায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৫.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা আগের দিনের চেয়ে কিছুটা কম। এছাড়া একই দিনে দেশে সর্বোচ্চ রাজশাহীতে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৬.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অথচ এই সময়ে তাপমাত্রা এতবেশি থাকার কথা নয়।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, আগামী মাসের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে দেশ থেকে মৌসুমি বায়ু বিদায় নেবে। এই বায়ু বিদায় নেয়ার আগ পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন স্থানে বিচ্ছিন্ন বৃষ্টির দেখা মিলতে পারে। তবে ভারি বৃষ্টিপাতের কোন সম্ভাবনা নেই। এমনকি সাগরে কোন নিম্নœচাপ বা ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কাও নেই এই সময়ে। শীতের আগমনী হাওয়ার কারণে হয়ত তাপমাত্রাও কমে আসবে ধীরে ধীরে। তাপমাত্রা একবার কমে আসলে আর বাড়বে না। তখন হয়ত গরমের ভাব এমনিতেই কেটে যাবে।