ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

পিয়াজের মূল্য হ্রাস পেয়ে স্বাভাবিক হয়েছে ॥ বাণিজ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০০:০৯, ১৫ জানুয়ারি ২০১৮

পিয়াজের মূল্য হ্রাস পেয়ে স্বাভাবিক হয়েছে ॥ বাণিজ্যমন্ত্রী

সংসদ রিপোর্টার ॥ সরকারের পক্ষ থেকে পিঁয়াজের মূল্য স্থিতিশীল করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। সরকারের নানা উদ্যোগ এবং নতুন পিঁয়াজ উৎপাদন শুরু হওয়ায় স্থানীয় বাজারে পিঁয়াজের মূল্য ক্রমশঃ হ্রাস পেয়ে স্বাভাবিক পর্যায়ে পৌঁছেছে। অন্যদিকে কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টি করে চালের মূল্য বৃদ্ধি করার অপচেষ্টা রোধকরণসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয় হতে সকল জেলা প্রশাসকদের নির্দেশনা প্রদান করা হয়। স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সোমবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে একাধিক প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ এ তথ্য জানান। সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য মোছাঃ সেলিনা জাহান লিটার প্রশ্নের জবাবে তোফায়েল আহমেদ জানান, বাংলাদেশে পিঁয়াজের বার্ষিক চাহিদা প্রায় ২২ থেকে ২৫ লাখ মেট্রিক টন। স্থানীয় উৎপাদনের ক্ষেত্রে প্রক্রিয়াজাতকরণ ঘাটতি বাদে প্রায় সাড়ে ১৭ লাখ মেট্রিক টন পিঁয়াজ উৎপাদন হয়। চাহিদার তুলনায় পিঁয়াজের দেশজ ঘাটতি প্রায় সাত লাখ মেট্রিক টন। এ ঘাটতি আন্তর্জাতিক বাজার হতে আমদানীর মাধ্যমে পূরণ করা হয়ে থাকে। তিনি জানান, বাংলাদেশে পিঁয়াজ আমদানীর মূল উৎস্য হচ্ছে ভারত। কিন্তু মে-জুন মাসে ভারতের পিঁয়াজ উৎপাদনকারী উত্তর প্রদেশ ও মহারাষ্ট্রে অনাকাক্সিক্ষত বন্যার কারণে উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় পিঁয়াজের মূল্য অস্বাভাবিকহারে বৃদ্ধি পায়। ফলে পিঁয়াজ রফতানিকারক দেশ ভারত প্রতি মেট্রিক টন পিঁয়াজের সর্বনিন্ম রফতানিমূল্য ৮৫০ মার্কিন ডলার নির্ধারণ করে। উক্ত মূল্যে বাংলাদেশী আমদানীকারকগণ পিঁয়াজ আমদানি করায় স্থানীয় বাজারে মূল্য অস্বাভাবিকহারে বৃদ্ধি পায়। এছাড়া বাংলাদেশেও এবছর দীর্ঘমেয়াদী বন্যার কারণে পিঁয়াজ উৎপাদনকারী এলাকায় স্থানীয়ভাবে মজুদকৃত পিঁয়াজের একটি বৃহৎ অংশ নষ্ট হওয়ায় স্থানীয় বাজারে পিঁয়াজের মূল্য বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। মন্ত্রী আরও জানান, সরকারের পক্ষ থেকে পিঁয়াজের মূল্য স্থিতিশীলকরণের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। মিনায়নমার ও তুরস্ক হতে পিঁয়াজ আমদানির ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। পিঁয়াজের বিপনন ব্যবস্থায় সরকারের নজরদারী বৃদ্ধি করাসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। সরকার দলীয় সংসদ সদস্য দিদারুল আলমের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ জানান, দেশের নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যসহ চালের বাজার স্বাভাবিক এবং জনসাধারণের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখার লক্ষ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় হতে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখা এবং বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনার জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দসহ সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তাগণের সমন্বয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী এবং সচিবের সভাপতিত্বে মতবিনিয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। তিনি জানান, এসব সভায় নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের আন্তর্জাতিক বাজার পরিস্থিতি, দেশের চাহিদা নির্ণয়, স্থানীয় উৎপাদন, মজুদ পরিস্থিতি, আমদানীর পরিমাণ ইত্যাদি ধারাবাহিকভাবে পর্যালোচনা করা হয় এবং সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করা হয়ে থাকে। তিনি আরও জানান, নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের আমদানি ও সরবরাহ অবস্থা পর্যবেক্ষণের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের এলসির তথ্য সংগ্রহ করা হয়। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড হতেও আমদানি তথ্য সংগ্রহ করা হয়। এসব তথ্য বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশন ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক পর্যালোচনা করে পণ্যভিত্তিক প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়। সরকার দলীয় সংসদ সদস্য রহিম উল্লাহ’র প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী জানান, বিগত ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ঔষধ রফতানি করে বাংলাদেশ ৮৯ দশমিক ১৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করেছে। চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ঔষধ রফতানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে একশ’ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
×