ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

ঐতিহাসিক ৭ মার্চ হলো বাঙালি জাতির মূল চালিকা শক্তি, যা আজ বিশ্ব স্বীকৃত

প্রকাশিত: ০০:১৪, ১২ নভেম্বর ২০১৭

ঐতিহাসিক ৭ মার্চ হলো বাঙালি জাতির মূল চালিকা শক্তি, যা আজ বিশ্ব স্বীকৃত

সংসদ রিপোর্টার ॥ প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেছেন, ৭ মার্চ হলো জাতির মূল চালিকা শক্তি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চের ভাষণে গেরিলা যুদ্ধের দিক নির্দেশনাসহ অর্থনৈতিক মুক্তির আহ্বান জানিয়েছিলেন- সেই ভাষণ আজ বিশ্ব স্বীকৃত। সম্প্রতি রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ মানবতার নবদ্বার উম্মোচন করেছে- যা বিশ্বব্যাপী সমাদৃত। রবিবার জাতীয় সংসদ ভবনে দশম জাতীয় সংসদের কার্যোপদেষ্টা কমিটির অষ্টাদশ বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সফলভাবে ৬৩তম সিপিসি সম্মেলন সম্পন্ন করায় সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানান এবং স্পীকারের ভূয়শী প্রশংসা করেন। তিনি এ সকল বিষয়ে এ অধিবেশনে আলোচনা অনুষ্ঠানের পরামর্শ দেন। পরে বিকাল ৪টায় স্পীকারের সভাপতিত্বে সংসদের অধিবেশন শুরু হয়। বৈঠক সূত্র জানায়, আলোচনার পর বৈঠকে ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি, রোহিঙ্গা ইস্যু ও সিপিএ সম্মেলন নিয়ে আলাদাভাবে বিশেষ বিধিতে সাধারণ আলোচনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এদিকে কার্যোপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে দশম জাতীয় সংসদের ১৮তম অধিবেশন ১০ দিন অর্থাৎ আগামী ২৩ নবেম্বর পর্যন্ত চালানোর সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠকে ১০ দিনের এই অধিবেশন প্রতিদিন বিকেল ৪টায় শুরুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এছাড়া অনিষ্পন্ন ১৩টি বিলের মধ্যে পাশের অপেক্ষায় থাকা ৩টি বিল পাশ করা হবে এবং সম্প্রতি প্রাপ্ত ৪টি সরকারি বিল উত্থাপন করা হবে। বৈঠকে কার্যপত্র উপস্থাপন করেন সংসদের সিনিয়র সচিব ড. আবদুর রব হাওলাদার। অধিবেশনকে সামনে রেখে সংসদ ভবন এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা বেষ্টনি গড়ে তোলা হয়। সকাল থেকেই চারপাশে অবস্থান নেয় বিপুল সংখ্যক র্যা ব ও পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। যে কোন ধরণের অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি এড়াতে জলকামান থেকে শুরু করে সব ধরণের ব্যবস্থা রেখেছে প্রশাসন। এমনকি সংসদ ভবনে প্রবেশ নিয়েও ছিলো কঠোর কড়াকড়ি। সাংবিধানিক বাধ্য-বাধকতার কারণে আহ্বান করা এই অধিবেশনে সরকার ও বিরোধী দলীয় সদস্যদের স্বতঃস্ফুর্ত অংশগ্রহণ দেখা গেছে। জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত কার্যউপদেষ্টা কমিটির বৈবঠকে সভাপতিত্ব করেন স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। বৈঠকে সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ, শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, ডেপুটি স্পীকার এ্যাডভোকেট মো. ফজলে রাব্বী মিয়া, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ, বিমানমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, প্রধান হুইপ আ স ম ফিরোজ এবং মইন উদ্দীন খান বাদল উপস্থিত ছিলেন। শোক প্রস্তাব উত্থাপন ॥ অধিবেশনের শুরুতে শোক প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। জাতীয় সংসদে নেওয়া শোক প্রস্তাবে উল্লেখযোগ্যদের মধ্যে ছিলেন- সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুর রহমান বিশ্বাস, সাবেক মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য এম কে আনোয়ার, সাবেক সংসদ সদস্য ও প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য সরদার মোশাররফ হোসেন এবং সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম, মোফাজ্জেল হোসেন ও মো. মর্তুজা হোসেন। এছাড়াও জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের স্ত্রী শিলা ইসলাম, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সচিব এ এম নূরুল ইসলাম, প্রখ্যাত ক্রীড়াবিদ শামসুল আলম মোল্লা, মুক্তিযোদ্ধা নজিবুল হক সরদার, একাত্তরের গেরিলা যোদ্ধা আবুল মাসুদ সাদেক চুল্লু, প্রকৃতিপ্রেমিক লেখক দ্বিজেন শর্মা, বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনের নেতা জসিম উদ্দিন মন্ডল, স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সদস্য অমলেশ সেন এবং বাংলাদেশের বন্ধু ফাদার মারিনো রিগনসহ আরো অনেকের নামে শোক প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। শোক প্রস্তাবে প্রয়াতদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদনের পাশাপাশি শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি আন্তরিক সমবেদনাও জ্ঞাপন করা হয়। এরআগে স্পীকার ও ডেপুটি স্পীকারের অনুপস্থিতিতে সংসদ অধিবেশন পরিচালনার জন্য ৫ সদস্যের প্যানেল চেয়ারম্যান নির্বাচন করা হয়। সদস্যরা হলেন- মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম, মো. তাজুল ইসলাম, আব্দুল মান্নান, জিয়াউল হক মৃধা ও জয়া সেনগুপ্তা। সংসদ অধিবেশনে ‘বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ানস এন্ড সার্জনস বিল-২০১৭’ ও ‘মানদেহে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংযোজন (সংশোধন) বিল-২০১৭’ পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে প্রতিবেদন জমা দেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি শেখ ফজলুল করিম সেলিম।
×