ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

প্রিমিয়ার লীগে জুটি বেঁধে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩১ গোলের রেকর্ড গড়লেন সন-কেন, উল্ভসকে উড়িয়ে দিল লিভারপুল

আর্সেনালকে হারিয়ে শীর্ষে ফিরল টটেনহ্যাম

প্রকাশিত: ২৩:৪২, ৮ ডিসেম্বর ২০২০

আর্সেনালকে হারিয়ে শীর্ষে ফিরল টটেনহ্যাম

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগে দুইবারের চ্যাম্পিয়ন টটেনহ্যাম হটস্পার। ১৯৫০-৫১ মৌসুমে প্রথম আর ১৯৬০-৬১ মৌসুমে দ্বিতীয়। এরপর কেটে গেছে অর্ধশতাব্দীরও বেশি সময়। কিন্তু প্রিমিয়ার লীগের শিরোপা জেতা হলো না আর স্পার্শদের। আক্ষেপ নিয়েই প্রতিটি মৌসুম শেষ করে টটেনহ্যাম হটস্পার। এবার অবশ্য সেই আক্ষেপ ঘুচানোর দারুণ সুযোগ ১৩৮ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত এই ক্লাবটির সামনে। কেননা জোশে মরিনহোর অধীনে যে ২০২০-২১ মৌসুমের সূচনা থেকেই দারুণ খেলছে টটেনহ্যাম হটস্পার। রবিবার ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে আর্সেনালের মুখোমুখি হয়েছিল জোশে মরিনহোর দল। হাইভোল্টেজ এই ম্যাচেও স্পার্শরা ২-০ গোলে বিধ্বস্ত করেছে শক্তিশালী দল আর্সেনালকে। জয়ের নায়ক এবারও যথারীতি দলের সেরা দুই তারকা সন হিউং-মিন আর হ্যারি কেন। স্পার্শদের হয়ে এই দুই তারকাই একটি করে গোল করেন। জয়ের দেখা পেয়েছে প্রিমিয়ার লীগের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন লিভারপুলও। নিজেদের মাঠে জার্গেন ক্লপের দল এদিন ৪-০ গোলে বিধ্বস্ত করেছে উল্ভসকে। বড় জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে ক্রিস্টাল প্যালেসও। এদিন তারা ৫-১ গোলে পরাজয়ের স্বাদ উপহার দিয়েছে ওয়েস্টব্রমউইচকে। দিনের আরেক ম্যাচে লিচেস্টার সিটি ২-১ ব্যবধানে শেফিল্ড ইউনাইটেডকে হারিয়ে পূর্ণ তিন পয়েন্ট নিয়েই মাঠ ছেড়েছে। দীর্ঘ নয়মাস পর ঘরের মাঠ এ্যানফিল্ডে দর্শকদের আতিথ্য দিয়েছে লিভারপুল। আর হাজার দুয়েক দর্শককে হতাশ করেনি রেডরা। উল্ভসের বিপক্ষে ৪-০ গোলের বড় জয় নিয়েই মাঠ ছেড়েছে স্বাগতিকরা। ৩০ বছরের খরা কাটিয়ে গত মৌসুমে প্রথমবারের মতো লীগ শিরোপা জেতার কৃতিত্ব দেখিয়েছিল জার্গেন ক্লপের দল। কিন্তু গত মৌসুমের সেই কৃতিত্ব করোনা মহামারীর কারণে দর্শকরা মাঠে বসে উপভোগ করতে পারেনি। এবারও লীগ শুরু হয়েছিল দর্শকবিহীন স্টেডিয়ামে। কিন্তু করোনার ভয়াবহতা কাটিয়ে ক্রমেই স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে থাকা ইংল্যান্ডে চলতি সপ্তাহ থেকে আবারও দর্শক উপস্থিতির অনুমতি মিলেছে। আর সেই রাতটাকে রাঙিয়ে দিয়েছেন মোহাম্মদ সালাহ, জর্জিনিও উইজনালডাম, জোয়েল ম্যাটিপরা। ম্যাচ শুরুর ২৪ মিনিটে উল্ভস অধিনায়ক কনর কোডির ভুলে লিভারপুলকে প্রথম এগিয়ে দেন মোহাম্মদ সালাহ। ৫৮ মিনিটে দুর্দান্ত কার্লিং ফিনিশিংকে উইজনালডাম ব্যবধান দ্বিগুণ করেন। ৬৭ মিনিটে সালাহর এ্যাসিস্টে ম্যাটিপ খুব কাছে থেকে হেডের সাহায্যে স্বাগতিকদের ৩-০ ব্যবধানে এগিয়ে দেন।। ম্যাচশেষের ১২ মিনিট আগে নেলসন সেমেডোর আত্মঘাতী গোলে বড় জয় নিয়েই বাড়ি ফিরেছে লিভারপুল। এর ফলে লীগে ঘরের মাঠে সর্বশেষ ৩২ ম্যাচের ৩১টিতেই অলরেডরা জয়ী। এই সময় প্রতিপক্ষের জালে গোল দিয়েছে সবমিলিয়ে ৯৩টি। বিনিময়ে হজম করেছে মাত্র ২৫টি। ম্যাচশেষে জয় ছাপিয়ে দর্শকদের ফেরায় আনন্দিত লিভারপুলের কোচ। এ প্রসঙ্গে আবেগঘন কণ্ঠে ক্লপ বলেন, ‘আজকের ম্যাচের অনুভূতিটাই ভিন্ন ছিল। কতদিন পর মনে হচ্ছে স্বাভাবিক একটি পরিবেশে ম্যাচ খেলেছি। দর্শকরা ম্যাচের শুরুতে চিৎকার করে বলেছে ‘তোমরা কখনই একা নও।’ আর কিছুই পাবার নেই। কখনই মনে হয়নি এই ধরনের অনুভূতি আমার কখনও হবে। ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়েছিল এবং প্রতিটিদিনই মনে হয়েছে কবে সব স্বাভাবিক হবে।’ এদিকে আর্সেনাল-টটেনহ্যাম ম্যাচের পুরোটাই ছিল সন আর কেনকে ঘিরে। এই জুটি এবারের মৌসুমে শুরু থেকেই প্রতিপক্ষের রক্ষণভাগকে ভেঙ্গে তছনছ করে এসেছে। রবিবারও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। উত্তর লন্ডনের ডার্বিতে ১৩ মিনিটেই দুর্দান্ত এক গোলে স্বাগতিকদের এগিয়ে দেন দক্ষিণ কোরিয়ান তারকা সন। বামদিক থেকে কেনের এগিয়ে দেয়া পাসে অসাধারণ দূরপাল্লার শটে বল জালে জড়ান সন। বিরতির ঠিক আগেই ব্যবধান দ্বিগুণ করেন হ্যারি কেন। জিওভানি লো সেলসো থেকে সন বল পেয়ে তা এগিয়ে দেন কেনকে। পোস্টের খুব কাছে থেকে গানার্স গোলরক্ষক বার্নার্ড লেনোকে পরাস্ত করতে কোন ভুল করেননি ইংলিশ অধিনায়ক। আর তাতেই জয় নিশ্চিত হয়ে যায় তাদের। সন ও কেন মিলে প্রিমিয়ার লীগে চলতি মৌসুমে ৩১টি গোল করলেন যা যে কোন জুটির জন্য দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। চেলসির দিদিয়ের দ্রগবা আর ফ্র্যাংঙ্ক ল্যাম্পার্ড মিলে করেছিলেন সর্বোচ্চ ৩৬ গোল। এই জয়ের ফলে ১১ ম্যাচ থেকে ২৪ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে উঠে গেছে স্পার্শরা। অন্যদিকে মৌসুমের ষষ্ঠ পরাজয়ে টেবিলের ১৫তে নেমে গেছে গানাররা। পয়েন্ট সমান ২৪ হলেও গোলব্যবধানে পিছিয়ে লীগের দুইয়ে অবস্থান লিভারপুলের।
×