ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

খেলার জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন মুশফিক

প্রকাশিত: ২২:২৭, ২৭ জুলাই ২০২০

খেলার জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন মুশফিক

মোঃ মামুন রশীদ ॥ আগেও অনেকবার এমনটা করেছেন মুশফিকুর রহিম। দলীয় অনুশীলনের কোন সিডিউল না থাকলেও নিজে একাকী মাঠে গিয়ে অনুশীলন করেছেন। তেমনটা করলেন রবিবারেও। ১৯ জুলাই থেকে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) তত্ত্বাবধানে ক্রিকেটারদের নিয়ে একক অনুশীলন শুরু হয়েছে। সূচী মোতাবেক রবিবারই ছিল শেষদিন। আর এদিন ছিল না মুশফিকের নাম। এরপরও তিনি অনুশীলন করতে মাঠে চলে এসেছেন। সবার আগে অনুশীলনে এসে তিনি লম্বা সময় ধরে ব্যাটিং করেছেন ইনডোরে। এই অনুশীলনের ফাঁকে এক ভিডিও বার্তায় মুশফিক আক্ষেপ জানিয়েছেন অনেকগুলো অর্ধশতক ও শতক হাতছাড়া হওয়ার জন্য। করোনাভাইরাসের জন্য বাংলাদেশ জাতীয় দলের বেশকিছু সিরিজ, এশিয়া কাপ স্থগিত হয়েছে সে জন্যই এ উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যানের এমন আক্ষেপ। একক এই অনুশীলনের প্রথম ধাপ আরও ২ দিন চলতে পারে। কারণ বৃষ্টিতে ২ দিন ঠিকভাবে অনুশীলন করতে পারেননি অনেকে। কিন্তু মুশফিক বিরতিহীনভাবে চালিয়ে যাচ্ছেন অনুশীলন যে কোন সময় খেলতে নামার জন্য মানসিক ও শারীরিকভাবে নিজেকে প্রস্তুত রাখতে। অনুশীলনে সবসময়ই মুশফিক অন্য যে কোন বাংলাদেশী ক্রিকেটারের চেয়ে এগিয়ে। করোনাভাইরাসের জন্য দেশের সব ক্রিকেট কর্মকাণ্ড বন্ধ থাকায় ছটফট করেছেন। বিসিবির কাছে একক অনুশীলনের অনুমতি চেয়েও পাননি। শেষ পর্যন্ত ১৯ জুলাই সেই অনুশীলন শুরু হয়েছে। প্রথমদিন থেকে মুশফিক মাঠে নেমে পড়েছেন। ৪ মাস মাঠের অনুশীলন থেকে দূরে থাকার কারণে তা পুষিয়ে নিতে বিরতিহীন অনুশীলন চালিয়ে গেছেন তিনি। এমনকি বিসিবির অনুশীলন পরিকল্পনায় রবিবার তার নাম না থাকলেও মাঠে আসেন। তবে এ বছর হয়তো মাঠেই নামা হবে না। ইতোমধ্যেই বেশকিছু আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা হাতছাড়া হয়েছে মহামারী করোনার দাপটে। এ জন্য মুশফিক বেশ আক্ষেপে পুড়ছেন। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘খেলা দেখলে আফসোস লাগে। সারাদিন বাসায় বসে থাকলে পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানো আর খেলাটাই দেখা হয়। একটু হলেও খারাপ লাগে। অনেকগুলো ৫০ বা ১০০ হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে। তবে চেষ্টা করছি টিভিতে খেলা দেখে নিজেকে কিভাবে মানসিকভাবে প্রস্তুত করা যায়।’ বাংলাদেশ দলের অন্যতম ব্যাটিং স্তম্ভ মুশফিক। নিয়মিতই তার ব্যাট থেকে রান পায় দল। সে জন্য তার এমন আক্ষেপ করাটাই স্বাভাবিক। আর সে জন্যই বিসিবির একক অনুশীলন পরিকল্পনায় শেষদিনে তার নাম না থাকলেও মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এসে ব্যাটিং অনুশীলন করেছেন তিনি। ইনডোরে দীর্ঘ সময় করেছেন ব্যাটিং। বাংলাদেশ দলের সবচেয়ে পরিশ্রমী ক্রিকেটার ও অনুশীলনে সবচেয়ে বেশি সময় ব্যয় করার জন্য ইতোমধ্যেই সবার কাছে দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছেন মুশফিক। সেটা আরেকবার প্রমাণ দিলেন। খেলায় ফেরার দিনক্ষণ চূড়ান্ত না হলেও মুশফিক নেমে পড়েছেন নিজেকে শতভাগ তৈরির মিশনে। ৪ মাস ঘরবন্দী থাকার পর মিঃ ডিপেন্ডেবলখ্যাত এ তারকা গত সপ্তাহ থেকে পাচ্ছেন মাঠের সুবাস। প্রাপ্ত সুযোগের সদ্ব্যবহার করেছেন ব্যাটিং, রানিং, কিপিং, সবগুলোতেই সময় ব্যয় করে। টানা বর্ষণে কখনও ইনডোরে রানিং করতে হয়েছে, কখনও আবার বৃষ্টির মধ্যেই একাডেমি মাঠে দৌড়েছেন মুশফিক। শনিবার স্টেডিয়ামের পুরো মাঠ বিরামহীন ১৪ বার প্রদক্ষিণ করেছেন তিনি। যে কোন মুহূর্তে ম্যাচ খেলতে নামার জন্যই এমন প্রস্তুতি নেয়া তার। তাছাড়া বর্তমানে করোনা পরিস্থিতির জন্য আইসিসি কিছু বিধি-বিধানে পরিবর্তন এনেছে- সেসবেও ধাতস্থ হওয়ার চেষ্টায় আছেন তিনি। মুশফিক এ বিষয়ে বলেন, ‘সব ঠিক থাকলে সামনে আমাদের কি কি খেলা হবে সেসব নিয়ে একটু মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকা। আর কিভাবে নতুন নিয়মে ব্যবহার হচ্ছে এসব খেলা দেখে শেখার চেষ্টা করছি। নতুন নিয়ম যেমন বলে অনেক কিছু ব্যবহার করা যাবে না, ব্যাটসম্যানদেরও একটা কঠিন সময় থাকে। সবকিছু দেখে ওখান থেকেও শিক্ষা নেয়ার চেষ্টা করছি। আমাদের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট যখন পুনরায় শুরু হবে আবার যেন আগের অবস্থায় ফিরে যেতে পারি সেটাই চাই। যে নিয়ম-কানুনগুলো হবে সেগুলো অবশ্যই ভালর জন্য এবং এটা আমাদের মানিয়ে নিতে হবে। আমি মনে করি শুরুতে কিছুটা সমস্যা হলেও অনুশীলনে আসতে আসতে অভ্যাস করে ফেলতে পারলে খুব একটা সমস্যা হবে না।’
×