ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

কিংবদন্তিদের ব্যাটিংই প্রেরণা আকবরের

প্রকাশিত: ০৯:২৬, ২১ এপ্রিল ২০২০

কিংবদন্তিদের ব্যাটিংই প্রেরণা আকবরের

মোঃ মামুন রশীদ ॥ দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে বিশ্বজয়ের বিজয় গাঁথা রচনা করেছিলেন আকবর আলীর নেতৃত্বে বাংলাদেশের যুবা ক্রিকেটাররা। বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথম বিশ^কাপ জিতে আনার সেই অবিস্মরণীয় কীর্তির পর অনুর্ধ-১৯ দলের অধিনায়ককে সবাই মুঘল স¤্রাট ‘আকবর দ্য গ্রেট’ বলেই অভিহিত করে যাচ্ছেন। পেশাদার ক্যারিয়ারে তাদের পরবর্তী চ্যালেঞ্জে সবেমাত্র পথচলা শুরু হয়েছিল। এবার দেশের সবচেয়ে বড় ও জনপ্রিয় ক্রিকেট আসর ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লীগে (ডিপিএল) যুবাদের প্রায় সবাই বড় বড় ক্লাবে জায়গা করে নিয়েছিলেন। আকবর খেলছিলেন গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের হয়ে। কিন্তু এক রাউন্ড হতেই করোনাভাইরাসের দাপটে স্থগিত হয়ে যায় ডিপিএল। থেমে যায় আকবরদের ভবিষ্যতের দিকে অগ্রযাত্রা। এখন তাই ঘরে বসেই ফিটনেস ঠিক রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। এক্ষেত্রে দারুণ ভূমিকা রাখছে যুবদলের ট্রেনার রিচার্ড স্টোনিয়েরের ইনস্টাগ্রাম লাইভ। সেখানে ফিটনেস ট্রেনিংয়ের বিভিন্ন কৌশল দেখান বাংলাদেশ অনুর্ধ-১৯ দলের এ স্ট্রেন্থ এ্যান্ড কন্ডিশনিং কোচ। এর সঙ্গে কিংবদন্তি ব্যাটসম্যানদের পারফর্মেন্স ভিডিও দেখে নিজের ভুলগুলো বের করছেন আকবর। সব ধরনের ক্রিকেটীয় কর্মকা- এই মুহূর্তে রয়েছে বন্ধ। মাঠে গিয়ে অনুশীলন করাটাও ভয়ের। কারণ দারুণ উচ্চপর্যায়ের ছোঁয়াচে রোগ করোনা ছড়াতে পারে অজান্তেই। সে কারণে বাড়ির বাইরে যাওয়া, অন্য মানুষের ৩ ফুটের মধ্যে বা সংস্পর্শে আসার ওপরে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থা। তাই ক্রিকেটাররা ঘরেই বসে থাকছেন। যার ফলে অগ্রযাত্রা হঠাৎ করেই ব্রেক কষে দাঁড়িয়ে গেছে বাংলাদেশ অনুর্ধ-১৯ দলের ক্রিকেটারদের। বিশ^কাপ জিতে আসার পর মাত্র একটাই প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ খেলতে পেরেছেন কয়েকজন। কারণ শুরু হওয়া ডিপিএলে তারা বড় বড় দলে সুযোগ করে নিলেও করোনাভাইরাস সতর্কতায় স্থগিত হয়ে গেছে তা। এখন তাই কঠিন চ্যালেঞ্জ ফিটনেস ধরে রাখা। সেই চ্যালেঞ্জে লড়াই করে যাচ্ছেন আকবররা। গত ১৫ মার্চের পর থেকেই মাঠে যাওয়া হয়নি। বিষয়টি নিয়ে অনুর্ধ-১৯ দলের এ অধিনায়ক বলেন, ‘এ এক বিরক্তিকর, হতাশাজনক এবং অস্বস্তিকর সময়। খেলার সুযোগ পেলে আমাদের দক্ষতাটা ঝালিয়ে নেয়া যেত।’ এমনকি অনুর্ধ-২১ দল গঠন করে এই যুবাদের সেখানে অন্তর্ভুক্ত করে ২ বছরের চুক্তি করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। সেটারও কোন কার্যক্রম শুরু হতে পারেনি। আকবর বলেন, ‘ঈদের পরে আমাদের একটি অনুশীলন ক্যাম্প হওয়ার কথা ছিল। এখন জানি না সেটা ঠিক থাকবে কি না। এ বিষয়ে অবশ্যই বোর্ড সিদ্ধান্ত নেবে।’ মাঠে যাওয়ার সুযোগ নেই তাই এখন ঘরে বসেই শারীরিক ফিটনেস ধরে রাখা জরুরী। বিশেষ করে অখ- অবসরে থাকাকালীন বাড়তি মেদ জমে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। তাই ফিটনেস ট্রেনিং বাদ দিলেই ক্ষতি হবে নিজের। কারণ বাড়তি মেদ বা চর্বি জমে যাওয়ার কারণে শরীরের রিফ্লেক্স কমে গেলে তা মাঠের পারফর্মেন্সে বিরূপ প্রভাব ফেলবে। তাই ফিটনেস ঠিক রাখতে ঘরেই পরিশ্রম করছেন আকবর। যুব দলের ট্রেনাল স্টোনিয়েরের ইনস্টাগ্রাম লাইভ এজন্য দারুণ কাজে আসছে। আকবর বলেন, ‘আমি এখন আমার ফিটনেস নিয়ে কাজ করছি। কারণ লকডাউনের কারণে এছাড়া আর কিছু করার নেই। এ মুহূর্তে কীভাবে ফিট থাকতে পারি তা শেখানোর জন্য আমাদের প্রশিক্ষক রিচার্ড প্রতিদিন ইনস্টাগ্রামে লাইভে আসেন। শুধু আমাদের জন্য নয়, তার লাইভ সেশনটি সবার জন্য উন্মুক্ত। এটি আমাদের অনেক সহায়তা করছে। আমি ঘরে বসেও কিছু ব্যাটিং ড্রিল করছি।’ এছাড়াও কিংবদন্তি ব্যাটসম্যানদের পুরনো ভিডিও দেখছেন নিয়মিত। নিজের ব্যাটিংয়ের ভিডিও দেখে ভুল বের করছেন। আকবর বলেন, ‘ক্রিকেট কিংবদন্তিদের ব্যাটিং পারফর্মেন্সগুলো এবং আমার পুরনো ফুটেজগুলো দেখছি। আমি বিশ্বাস করি এগুলো আমাকে অনপ্রাণিত এবং আত্মবিশ্বাসী হতে উঠতে সহায়তা করবে।’
×