ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

‘আমি সবসময় চ্যালেঞ্জ নিতে পছন্দ করি’ ॥ মিরাজ

প্রকাশিত: ০৭:১৭, ১৮ অক্টোবর ২০১৮

‘আমি সবসময় চ্যালেঞ্জ নিতে পছন্দ করি’ ॥ মিরাজ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে সিরিজে সাকিব আল হাসান নেই। স্পেশালিস্ট স্পিনার-ব্যাটসম্যান হিসেবে অলরাউন্ডারের দায়িত্ব তাই মেহেদী হাসান মিরাজকেই পালন করতে হবে। যিনি এশিয়া কাপের ফাইনালে দলের প্রয়োজনে ওপেনারদের ব্যর্থ হওয়ার মিছিলে ওপেনিংয়েও নেমে গিয়েছিলেন। মিরাজ সবসময়ই চ্যালেঞ্জ নেন। চ্যালেঞ্জ নিতে পছন্দও করেন। আর তাই বুধবার মিরাজ বলেই দিয়েছেন, ‘আমি সবসময় চ্যালেঞ্জ নিতে পছন্দ করি।’ তিনদিন পর জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ খেলতে নামবে বাংলাদেশ। প্রথম ওয়ানডে দিয়ে ২১ অক্টোবর তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ শুরু হবে। এ সিরিজেও মিরাজের সামনে চ্যালেঞ্জ থাকছে। মিরাজও প্রস্তুত। তিনি বলেছেন, ‘আমি সবসময় চ্যালেঞ্জ নিতে পছন্দ করি। কঠিন অবস্থার চ্যালেঞ্জ আমি উপভোগ করি। আর পেছন থেকে যখন টিম ম্যানেজমেন্ট সাপোর্ট দেয়, আমাদের সিনিয়র প্লেয়াররা, সবাই যখন ব্যাক আপ করে, তখন নিজের আত্মবিশ্বাসটা অনেক বেড়ে যায়। ফাইনালের আগের রাতে যখন আমাকে বলা হয় ওপেন করতে হবে, তখন মাশরাফি ভাই, রিয়াদ ভাই বলল, ‘করতে পারবি, সমস্যা নাই’। তখন নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাসটা বাড়ল। তখন তারা আরও কিছু কথা বলেছেন, যা শুনে আমি আরও বেশি আত্মবিশ্বাস পেলাম। ওই জিনিসটাই নিজেরও আত্মবিশ্বাস থাকে আর যখন পেছনে ব্যাকআপ পাই সিনিয়র প্লেয়ারদের, তখন আত্মবিশ্বাস আরও বেড়ে যায়। ওইটাই কাজে লেগেছে, ভাল করার পেছনে।’ সাকিব নেই, দলের সেরা বোলার নেই যা আপনার ওপর বাড়তি চাপ ফেলবে, আপনি কি ভাবছেন এই ব্যাপারে? মিরাজ জানান, ‘আসলে এটা আমাদের জন্য দুঃখজনক। সাকিব ভাই আমাদের সঙ্গে নেই। তিনি তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে দলে ফিরবেন। আর এটা চাপ না। এটা আমার কাছে বাড়তি দায়িত্বের মতো। যেহেতু সাকিব ভাই নেই। দায়িত্ব থাকবে বোলিংটা আরেকটু বেশি ভাল করার। পাশাপাশি যারা স্পিনার আছেন তাদের উৎসাহ দিব আরও ভাল করার।’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘সাকিব বিশ্বের সেরা অলরাউন্ডার। আমার এমন কোন অনুভূতি আসে না। সাকিব ভাই যখন খেলে তখন চেষ্টা করি অলরাউন্ডার হিসেবে দলের জন্য ছোট ছোট অবদান রাখার। তিনি অনেক উঁচুমানের ক্রিকেটার। তিনি বাংলাদেশকে অনেকদিন সার্ভিস দিয়ে আসছেন। তিনি দীর্ঘদিন র‌্যাঙ্কিংয়ে নাম্বার ওয়ান অলরাউন্ডার ছিলেন। তার সঙ্গে আসলে আমার তুলনা চলে না (হাসি)।’ ওয়েস্ট ইন্ডিজ থেকে মিরাজের বোলিংয়ের উন্নতি দেখা গেছে। বোলিং নিয়ে কি কাজ করেছেন মিরাজ। নিজেই জানালেন, ‘আমার কাছে মনে হয় আমি পূর্বের চিন্তার তুলনায় এখন একটু ভিন্নভাবে চিন্তা করছি। কিভাবে কি করতে হবে এসব নিয়ে মানসিকভাবে একটু শক্ত হয়েছি। আর বোলিংয়ে কিছু ভেরিয়েশন এনেছি, ওইগুলো হয়তো কাজে দিচ্ছে।’ ভেরিয়েশন সম্পর্কেও বিস্তারিত জানান মিরাজ, ‘ভেরিয়েশন বলতে আমি আগে প্রায় সময় এক গতিতেই বল করতাম। সিমের পজিশন একটু অন্য রকম ছিল আগে। সিমের গতিপথ পরিবর্তন করেছি। আগে ৪৫ ডিগ্রীতে বল করতাম। এখন ৯০ ডিগ্রীতে করছি। একটু মিক্স করে বল করছি। এইগুলোই, গতিপথ পরিবর্তন করে কিছু ভেরিয়েশন এনেছি।’ টেস্টের উইকেট টেকিং বোলার। কিন্তু ওয়ানডেতে রান আটকে বল করছেন কেন? মিরাজ এমন প্রশ্নের উত্তরে জানান, ‘ওয়ানডেতে আমি প্রথমদিকে যখন বল করি, প্রতিপক্ষ দলের ওপেনাররা যখন রান তাড়া করে খেলে তখন আমার দায়িত্ব থাকে রান আটকে বল করা। আমি যদি রান থামিয়ে রাখতে পারি তাহলে আমার যে বোলিং পার্টনার থাকবে সে উইকেট বের করে নিতে পারবে। ওয়ানডেতে সবসময় রোলটা থাকে রান থামিয়ে রাখার। হয়তো আমি উইকেট পাচ্ছি না, হয়তো আমার পার্টনার পাচ্ছে বা আরেকজন পাচ্ছে। দিনশেষে কিন্তু দলের সাহায্য হচ্ছে। এটাই আমি চেষ্টা করি, আমার হয়তো উইকেটের দরকার নেই। আমার পার্টনার যে আছে হয়তো মাশরাফি ভাই, মুস্তাফিজ, সাকিব ভাই বা রুবেল ভাই উইকেট বের করে দিবে, যারাই আছে বোলাররা। আমি রান থামিয়ে রাখতে পারলে দল চাপে পড়বে, আর অন্য বোলাররা উইকেট পাবে। এটাই আমার চেষ্টা, এর মধ্যে যদি ভাগ্য ভাল থাকে তাহলে আমি উইকেট পেয়ে যাব।’ এশিয়া কাপে ওপেন করেছেন, আরেকবার সুযোগ পেলে কী ওপেন করবেন? মিরাজ বলেন, ‘(হাসি) ফাইনাল ম্যাচ ওপেন করেছি, আমিও ভাবিনি আমি ফাইনালে ওপেন করব। মাশরাফি ভাই ম্যাচের আগেরদিন রাতে বলেছেন, সবাই যারা সিনিয়র আছে সবাই অনেক সাপোর্ট দিয়েছেন। এই জন্য অনেক আত্মবিশ্বাস পেয়েছি। এটা থেকে আমি শিক্ষা নিয়েছি, যে কোন মুহূর্তে আমাকে দলের প্রয়োজনে যে কোন জায়গায় নামতে হতে পারে। আমার মানসিকতা থাকবে যে কোন সময় এমন কিছু হতে পারে।’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘চাপ কিন্তু সবসময় থাকে। এশিয়া কাপের ফাইনাল ম্যাচটায় অনেক চাপ ছিল। এটা আমাকে ভবিষ্যতে অনেক কাজে দিবে। বড় বড় ইভেন্টে যখন ফাইনাল ম্যাচ হবে ডু অর ডাই ম্যাচ হবে তখন এই ম্যাচগুলো অনেক কাজে দিবে।’ বিশ্বকাপ ট্রফি বাংলাদেশে এসেছে, আগামী বিশ্বকাপে আপনার প্রথম বিশ্বকাপ, বাংলাদেশের সম্ভাবনা কেমন? মিরাজ ভাল করার সম্ভাবনা দেখছেন, ‘সবার স্বপ্ন থাকে বিশ্বকাপ খেলার। যদি সুস্থ থাকি তাহলে সুযোগ পেলে অবশ্যই ভাল খেলার চেষ্টা করব। বিশ্বকাপের মঞ্চে ভাল খেলার স্বপ্ন তো সবার থাকে। অবশ্যই দলের সবাই চাইবে ভাল করতে। সবাই তো ভাল করার জন্যই অনুশীলন করছে। অনেকে খেলবে, অনেকে খেলবে না। সবাই চেষ্টা করছে।’
×