ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ ওয়ানডে সিরিজ শুরু আজ

এবার মাশরাফির পালা

প্রকাশিত: ০৬:২৮, ২২ জুলাই ২০১৮

এবার মাশরাফির পালা

মিথুন আশরাফ ॥ ব্যাটসম্যান ক্রিস গেইল, এভিন লুইস, সিমরন হেটমেয়ার ও আন্দ্রে রাসেলদের রানের গতি থামাতে পারলে; জেসন হোল্ডার, আলজারি জোসেফ, রাসেলদের বোলিং গতিতে বেসামাল না হলে আর কী লাগে? জয়তো বাংলাদেশের মুঠোতেই চলে আসার কথা। তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহীম, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, লিটন কুমার দাস, নাজমুল হোসেন শান্তরা নিজেদের মেলে ধরতে পারলেই হয়ে যায়। সঙ্গে মাশরাফি বিন মর্তুজা, মুস্তাফিজুর রহমান, রুবেল হোসেনের গতি আর সাকিব, মেহেদী হাসান মিরাজ অথবা মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের ঘূর্ণি জাদু মিললেই হয়ে যায়। গায়ানার প্রোভিডেন্স স্টেডিয়ামে আজ প্রথম ওয়ানডে দিয়ে যে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ শুরু হবে তাতে শুভ সূচনা বাংলাদেশেরই হয়ে যায়। সিরিজেও এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। ম্যাচটি বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে সাতটায় শুরু হবে। পারবে বাংলাদেশ দল জয় তুলে নিতে? দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে লজ্জা মিলেছে। সেই ধকল এখনও আছে। আত্মবিশ্বাসেও ঘাটতি পড়েছে। তবে প্রস্তুতি ম্যাচটিতে জেতায় আত্মবিশ্বাস কিছুটা হলেও ফিরেছে। সেই সঙ্গে জয় মেলায় মানসিকতা চাঙ্গাও হওয়ার কথা। আর মাশরাফিতো ক্রিকেটারদের চাঙ্গা করতে চেষ্টা করেছেনই। মাশরাফি বিন মর্তুজার নেতৃত্বেই এই সিরিজে ঘুরে দাঁড়ানোর পালা বাংলাদেশের। আজ প্রথম ওয়ানডের পর গায়নাতেই ২৬ জুলাই দ্বিতীয় ও সেন্ট কিটসে ২৮ জুলাই তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম ও তৃতীয় ওয়ানডে বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে সাতটায় ও দ্বিতীয় ওয়ানডে রাত সাড়ে ১২টায় শুরু হবে। এ সিরিজে ঘুরে দাঁড়াতে চায় বাংলাদেশ। টেস্ট সিরিজের দুঃসহ স্মৃতি ভুলে ওয়ানডে সিরিজে নিজেদের মেলে ধরতে চায় বাংলাদেশ। টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হওয়ার পর সাকিব আল হাসানই যেমন বলেছেন, ‘অবশ্যই সিরিজটি ছিল হতাশার। আগেও বলেছি যে আমরা জানতাম সিরিজটি কঠিন হবে। তবে আমাদের আশা ছিল, আমরা আরও ভাল খেলব। সেটি হয়নি। এখন আমাদের সাদা বলের ক্রিকেটে তাকাতে হবে। সাদা বলে আমরা খুব ভাল করছি। এখানেও আশা করছি ভাল কিছুর।’ ওয়ানডে দলের ক্রিকেটাররা এখন ওয়ানডে সিরিজের জন্য প্রস্তুত। মাশরাফি বিন মর্তুজা, সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, এনামুল হক বিজয়, লিটন কুমার দাস, মুশফিকুর রহীম, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, সাব্বির রহমান, মেহেদী হাসান মিরাজ, নাজমুল হোসেন শান্ত, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, নাজমুল ইসলাম অপু, মুস্তাফিজুর রহমান, রুবেল হোসেন, আবু জায়েদ রাহী ও আবু হায়দার রনি পুরোদমে অনুশীলনও করেছেন। নিজেদের প্রস্তুত করে তুলেছেন। বাংলাদেশ সর্বশেষ ওয়ানডে খেলে এ বছর জানুয়ারিতে। দেশের মাটিতে বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা ও জিম্বাবুইয়েকে নিয়ে হয় ত্রিদেশীয় সিরিজ। সিরিজে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে একটি ও জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে দুটি ম্যাচ জিতে। কিন্তু শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আরেকটি ম্যাচে হারে। ফাইনালেও হার হয়। এর আগে গত বছর অক্টোবরে দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রোটিয়াদের সঙ্গে টানা তিন ম্যাচেই হারে বাংলাদেশ। জুনে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে সেমিফাইনাল খেলে বাংলাদেশ। আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজেও নিউজিল্যান্ডকে একটি ম্যাচে হারায়। গত বছর মার্চে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজে এক ম্যাচ জিতে। আরেক ম্যাচ হারে। ওয়ানডেতে হার-জিতের মধ্য দিয়েই চলছে। এবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে কী করবে দল? অধিনায়ক মাশরাফি বলেছেন, ‘প্রস্তুতি ছাড়া কেউ মাঠে খেলতে যায় না। আমি মনে করি, তারা তাদের সর্বোচ্চটা দিয়ে চেষ্টা করেছে। তবে তাদের ঠিকঠাক নক হয়নি মাত্র। এমনভাবে দল হারলে সকলের মানসিক অবস্থা খুব দুর্বল থাকে এটা সত্য। আমার প্রাথমিক কাজ হচ্ছে দলের সকলকে মানসিকভাবে চাঙ্গা করা। কিভাবে ওটা কাটিয়ে ওঠা যায় তা নিয়ে আমি চিন্তা করছি। কারণ আমরা ওয়ানডে সিরিজে তাদের বিপক্ষে ঘুরে দাঁড়াতে চাই। আমি মনে করি না যে, আমাদের ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে ভাল ব্যাট করার সামর্থ্য নেই। কিন্তু আমাদের সেটা করে দেখাতে হবে। মানসিকভাবে আমাদের শক্ত হতে হবে। এছাড়া আমাদের সবকিছু ইতিবাচকভাবে ভাবতে হবে।’ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে এখন পর্যন্ত ২৮টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলে ৭টিতে জিতে বাংলাদেশ। হারে ১৯টি ম্যাচে। দুটি ম্যাচের রেজাল্ট হয়নি। দুই দল পরস্পরের বিপক্ষে সর্বশেষ ২০১৪ সালে ওয়ানডে খেলে। প্রায় চার বছর হয়ে গেছে। সর্বশেষ সিরিজটি ওয়েস্ট ইন্ডিজে হয়েছিল। তিন ম্যাচের সিরিজের সবকটি ম্যাচে হেরেছিল বাংলাদেশ। দুই দল যখন আবার মুখোমুখি হচ্ছে সেই সিরিজটিও ওয়েস্ট ইন্ডিজেই হচ্ছে। টেস্ট সিরিজের বাজে অভিজ্ঞতা ওয়ানডে সিরিজে এখন কাটিয়ে ওঠা গেলেই হলো।
×