ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০১ মে ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

সিরিজ বাঁচানোর লড়াই পাকিস্তানের

প্রকাশিত: ০৪:৩৩, ১২ জানুয়ারি ২০১৮

সিরিজ বাঁচানোর লড়াই পাকিস্তানের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ সফরের শুরুটা দারুণ জয় দিয়ে হয়েছিল পাকিস্তান ক্রিকেট দলের। তবে সেটা আনঅফিসিয়াল ম্যাচ ছিল। অনুশীলন ম্যাচের সেই ফলটাকে উজ্জীবনী শক্তি হিসেবে কাজে লাগাতে পারেনি পাকরা মূল লড়াইয়ে। স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের কাছে প্রথম দুই ওয়ানডেতেই হেরে ৫ ম্যাচের সিরিজে ২-০ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়েছে। ব্যাটিং কিংবা বোলিং কোনটাই যুতসই না হওয়ার কারণেই পরাজয় দেখতে হয়েছে। কিন্তু এবার ঘুরে দাঁড়াতেই হবে। ডানেডিনের ইউনিভার্সিটি ওভালে শনিবার বাংলাদেশ সময় ভোর ৪টায় তৃতীয় ওয়ানডে জিতলে তবেই সিরিজে টিকে থাকতে পারবে সরফরাজ আহমেদের দল। তবে কিউইরা এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে আগেভাগেই সিরিজ জয় নিশ্চিত করার লক্ষ্যেই নামবে। স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের জন্য যা পয়মন্ত হয়ে এসেছে, ঠিক সেটাই যেন অপয়া হয়ে এসেছে পাকিস্তান দলের জন্য। বৃষ্টির কারণে দুই ম্যাচেই পুরোটা সময় লড়তে পারেনি তারা। বৃষ্টির সুফল ভোগ করে জিতে গেছে নিউজিল্যান্ড। আর তাছাড়া নিউজিল্যান্ডের ভেন্যুগুলোতে সবচেয়ে সমস্যার কারণ তীব্র বাতাসের ঝাপটা, এর সঙ্গে গতিময় উইকেট- সবমিলিয়ে সফরকারীরা বেশ সংগ্রামের মধ্যে পড়েছে নিজেদের মানিয়ে নিতে। তবে মূলত ব্যাটিংটা নিয়েই বেশি চিন্তিত সফরকারীরা। বিশেষ করে অভিজ্ঞরা নিজেদের মেলে ধরতে পারছেন না বলে আরও সমস্যা বেড়েছে দলটির। দুই ম্যাচে আজহার আলী, মোহাম্মদ হাফিজ, শোয়েব মালিক ও সরফরাজরা আহামরি কোন নৈপুণ্য দেখাতে পারেননি। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে হাফিজ ৬০ ও মালিক ২৭ রানের ইনিংস অবশ্য উপহার দিয়েছেন। কিন্তু দলের প্রয়োজনে তারা নিজেদের ইনিংসটাকে বড় করতে পারেননি। ফলে খুব বড় হয়নি দলের ইনিংসটা। উভয় ম্যাচেই ব্যর্থ হয়েছেন আজহার ও সরফরাজ। দুই ম্যাচেই লোয়ার অর্ডারদের ব্যাটিং ছিল উল্লেখযোগ্য। বোলিংয়ে অন্যতম দুই স্তম্ভ মোহাম্মদ আমির ও হাসান আলী তাদের ধারাবাহিকতা দেখাতে পারেননি। দুই ম্যাচেই ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতিতে জয় তুলে নিয়েছে কিউইরা। প্রথম ম্যাচে আগে ব্যাটিং করে আর দ্বিতীয় ম্যাচে পরে ব্যাটিং করে জয় পায় তারা। ফলে সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচ হতেই চাপে পড়ে গেছে সফরকারীরা। সেই চাপটা সিরিজ হারানোর। ঐতিহাসিকভাবেই নিউজিল্যান্ডের মাটিতে পাকিস্তানের রেকর্ডটা তেমন সুবিধাজনক নয়। মাত্র দুই সিরিজ জিতেছে তারা এখন পর্যন্ত কিউই ভূমিতে। ২০০০-০১ মৌসুম থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত ৫ ওয়ানডে সিরিজ সেখানে খেলেছে পাকরা, এর মধ্যে একবারই মাত্র সিরিজ জিততে পেরেছে। সবমিলিয়ে নিউজিল্যান্ডে গিয়ে স্বাগতিকদের বিরুদ্ধে ৪৪ ম্যাচ খেলে মাত্র ১৫ জয় দেখেছে পাকিস্তান। সেসব স্মৃতি আবার বর্তমান হয়ে দেখা দিয়েছে। অথচ দারুণ রেকর্ড নিয়ে এবার বেশ আত্মবিশ্বাসী হয়েই সরফরাজের দল এসেছিল। কারণ টানা ৯ ম্যাচ জেতা এবং গত বছর আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জেতার মতো দারুণ ব্যাপার তাদের সঙ্গী হিসেবে ছিল। তবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির পর থেকে খুব বেশি ক্রিকেটের মধ্যে না থাকাটাই হয়তো হিতে বিপরীত হয়েছে পাকদের জন্য। এমন কঠিন একটি সফরের আগে দীর্ঘদিন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেরই বাইরে ছিল তারা। শুধু শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে একটি দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলেছে এবং সেই সিরিজে প্রতিপক্ষকে হোয়াইটওয়াশ করেছে তারা। আর নিউজিল্যান্ড পাকদের জন্য যেন অপেক্ষাই করে ছিল। ঘরের মাটিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে নাকানি-চুবানি খাওয়ানোর পর ফুরফুরে মেজাজেই মুখোমুখি হয়েছে পাকিস্তানের। আর টানা দুই ম্যাচ জেতার পর এখন তাদের আত্মবিশ্বাস তুঙ্গে। এবার পাকিস্তানের বিরুদ্ধেও সিরিজ জয় নিশ্চিত করতে চায় কেন উইলিয়ামসনের দল। তিন পেসার টিম সাউদি, ট্রেন্ট বোল্ট ও লোকি ফার্গুসন বেশ ঝামেলায় ফেলেছেন সফরকারী ব্যাটসম্যানদের। তাদের দিয়েই প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করছে কিউইরা। ডানেডিনেও শনিবার একই কৌশলে মাঠে নামবে তারা। এবার জিততে পারলেই তারা ৩-০ ব্যবধানে এগিয়ে যাবে এবং দুই ম্যাচ হাতে রেখেই নিশ্চিত করবে ৫ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ জয়।
×