ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

টানা চতুর্থ ফাইনালে বার্সিলোনা

প্রকাশিত: ০৬:৩০, ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

টানা চতুর্থ ফাইনালে বার্সিলোনা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ঘটনাবহুল, উত্তেজনাপূর্ণ, নাটকীয়, বিতর্কে ভরা ম্যাচ ড্র করে স্প্যানিশ কোপা ডেল রে ফুটবলের ফাইনালে উঠে গেছে বার্সিলোনা। মঙ্গলবার রাতে সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগের ম্যাচে অতিথি এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করে স্বাগতিক বার্সা। নুক্যাম্পে অনুষ্ঠিত ম্যাচটিতে দু’দলের তিনজন লালকার্ড দেখেন। এরমধ্যে আছেন গোলদাতা লুইস সুয়ারেজও। ড্র করেও দুই লেগ মিলিয়ে ৩-২ গোলে জিতে টানা চতুর্থ ফাইনালের টিকেট পেয়েছে বার্সিলোনা। এর আগে ভিসেন্টে ক্যালডেরনে দু’দলের প্রথম লেগের ম্যাচে বার্সা জিতেছিল ২-১ গোলে। হ্যাটট্রিক শিরোপার সামনে দাঁড়িয়ে থাকা কাতালানরা ফাইনাল ম্যাচে মাঠে নামবে আগামী ২৭ মে। যেখানে প্রতিপক্ষ আলাভেস ও সেল্টা ভিগোর মধ্যকার দ্বিতীয় সেমির বিজয়ী দল। ম্যাচটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ছিল উত্তেজনায় ঠাসা। একটা ম্যাচে যা থাকা দরকার তার সবই ছিল। দু’দলের একটি করে গোল। একটি করে গোল বাতিল হওয়া। এ্যাটলেটিকোর পেনাল্টি মিস। দু’দলেরই লালকার্ড দেখা। লিওনেল মেসির ফ্রিকিক ক্রসবারে লেগে ফিরে আসা। শেষদিকে এ্যাটলেটিকোর মুহুর্মুহু আক্রমণ। এমন উপভোগ্য ম্যাচ ড্র করে বার্সা ফাইনালে গেলেও মন্দ কপাল এ্যাটলেটিকোর। শেষদিকে নয়জনের বার্সার বিরুদ্ধে আরেক গোল পেলেই ম্যাচটি গড়াতো বাড়তি ৩০ মিনিটে। সেটা হতে দেয়নি লুইস এনরিকের শিষ্যরা। এ্যাটলেটিকো পূর্ণশক্তির দল নিয়ে মাঠে নামলেও বার্সা পায়নি তাদের অন্যতম খেলোয়াড় নেইমারকে। গত ম্যাচে পাওয়া হলুদ কার্ডের জন্য এই ম্যাচে খেলতে পারেননি ব্রাজিলিয়ান তারকা। আর ফাইনালে খেলবেন না সুয়ারেজ। কারণ এই ম্যাচে লালকার্ড দেখেছেন উরুগুইয়ান তারকা। ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে শুরুটা দুর্দান্ত করে দিয়েগো সিমিওনের শিষ্যরা। প্রথম ২০ মিনিটে পাঁচবার বার্সার রক্ষণ কাঁপিয়ে দেয় তারা। তবে এই অর্ধে উল্টো গোল খেয়ে বসেন গ্রিজম্যান-টোরেসরা। ৪৩ মিনিটে লিওনেল মেসির দারুণ এক শট রুখে দেন গোলরক্ষক মিগুয়েল ময়া। তবে পুরোপুরি বিপদমুক্ত হয়নি। ফাঁকায় পেয়ে গোল করেন লুইস সুয়ারেজ। এই মৌসুমে সুয়ারেজের এটি ২১তম গোল। পিছিয়ে পড়ে কিছুটা ঝিমিয়ে যায় এ্যাটলেটিকো। দ্বিতীয়ার্ধে আক্রমণাত্মক খেলতে থাকে বার্সা। কেবল খেলতেই নয়, শারীরিক কসরতেও প্রতিপক্ষের চেয়ে এগিয়ে থাকে স্বাগতিকরা। ৫৭ মিনিটে লালকার্ড দেখেন বার্সার স্প্যানিশ মিডফিল্ডার সার্জিও রবার্টো। এর তিন মিনিট পরই গোল করেন এ্যান্টোনিও গ্রিজম্যান। তবে অফসাইডের ফাঁদে পড়ে সমতায় ফেরা হয়নি সফরকারীদের। এরই মধ্যে এ্যাটলেটিকোও ১০ জনের দলে পরিণত হয়। দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখেন ইয়ানিক কারাসকো। কয়েক মিনিট পরই ব্যবধানটা ২-০ করে ফেলতে পারত বার্সা। তবে মেসির শট গোলবারে লেগে ফিরে আসে। ৮০ মিনিটে পেনাল্টি পেয়েও গোল করতে পারেনি এ্যাটলেটিকো। তবে ৮৩ মিনিটে ব্যবধান কমান গামিরো। শেষ পর্যন্ত আর কোন গোল না হওয়ায় ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়ে এ্যাটলেটিকো। আর এই ড্রয়ে ফাইনালের টিকেট পায় বার্সা। এই ম্যাচে বার্সা ক্যারিয়ারে প্রথমবার লালকার্ড দেখেন সুয়ারেজ। ফলে ফাইনালে নিষিদ্ধ হয়েছেন তিনি। তবে উরুগুয়ের এই ফরোয়ার্ডের দাবি, কোন ফাউলই করেননি তিনি। ৯০ মিনিটে পাওয়া দ্বিতীয় হলুদ কার্ডটি নিয়ে ম্যাচ শেষে রেফারিকে ধুয়ে দেন সুয়ারেজ। জানান, রেফারির এই সিদ্ধান্তে হেসেছেন তিনি। সুয়ারেজ বলেন, এটাই রেফারি চাচ্ছিলেন। আমি ক্ষুব্ধ। এমনকি এটা কোন ফাউলও ছিল না। বরাবরের মতো রেফারি আমাকে কোন ব্যাখ্যাও দেননি। সুয়ারেজ আশা করছেন, বার্সিলোনা লালকার্ডের বিরুদ্ধে আপীল করবে। আপীলের পরিকল্পনার কথা ম্যাচ শেষের প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন কোচ লুইস এনরিকেও। তবে অতীত অভিজ্ঞতা থেকে তার হচ্ছে আবেদনে কোনো লাভ হবে না। এ প্রসঙ্গে বার্সা বস এনরিকে বলেন, আমি হতাশ যে আমার দলের খেলোয়াড় ফাইনাল খেলতে পারবে না। এটা এমন কিছু, যা ফুটবলে ঘটে। রেফারি মনে করেছেন, সুয়ারেজ ও রবার্টো দু’জনই দুটি করে হলুদ কার্ড পাওয়ার যোগ্য।
×