ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

নিউজিল্যান্ড একাদশের বিপক্ষে একদিনের প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে আজ বাংলাদেশ

নিউজিল্যান্ডে মাঠের লড়াই শুরু মাশরাফিদের

প্রকাশিত: ০৬:১৫, ২২ ডিসেম্বর ২০১৬

নিউজিল্যান্ডে মাঠের লড়াই শুরু মাশরাফিদের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ আজই বোঝা হয়ে যাবে, বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে কেমন করতে পারবেন। আজ যে নিউজিল্যান্ড একাদশের বিপক্ষে বাংলাদেশ দলের একদিনের প্রস্তুতি ম্যাচ রয়েছে। যে প্রস্তুতি ম্যাচ দিয়েই নিউজিল্যান্ডে মাঠের লড়াইয়ে নামবেন মাশরাফিরা। ম্যাচটি বাংলাদেশ সময় ভোর ৪টায় ওয়াঙ্গারেইয়ের কোবাম ওভালে শুরু হবে। এ ম্যাচটি শেষ হতেই সবার ধারণা হয়ে যাবে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে কতটা ভাল পারফর্মেন্স দেখাতে পারবেন ক্রিকেটাররা। ম্যাচটিতে আবার নেই বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের জন্য ঘোষিত নিউজিল্যান্ডের কোন ক্রিকেটার। নিউজিল্যান্ড জাতীয় দলের কোন ক্রিকেটারই খেলবেন না এই ম্যাচে। ঘরোয়া লীগের সব ক্রিকেটার খেলবেন ৫০ ওভারের এ প্রস্তুতি ম্যাচে। এ ম্যাচটি দিয়েই নিউজিল্যান্ডে মাঠের লড়াই শুরু হয়ে যাবে বাংলাদেশের। ম্যাচটিতে আবার টি২০ বিশ্বকাপের পর জাতীয় দলের হয়ে খেলতে নামবেন মুস্তাফিজুর রহমান। প্রথম ওয়ানডের দলে আছেন মুস্তাফিজ। প্রথম ওয়ানডেতে কতটা ভাল করতে পারবেন মুস্তাফিজ সেটিও এই ম্যাচের মধ্য দিয়েই দেখা যাবে। পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়ায় ৯দিনের প্রস্তুতি ক্যাম্পে হওয়া দুটি প্রস্তুতি ম্যাচে খেলেননি দলের দুই নির্ভরযোগ্য ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবালও। এ দুই ক্রিকেটারের পারফর্মেন্সও কেমন হয় পুরো সিরিজজুড়ে আজকের প্রস্তুতি ম্যাচটির মাধ্যমে তাও বোঝা যাবে। এ ম্যাচটির জন্য নিউজিল্যান্ডে গিয়ে খুব বেশিদিন অবশ্য প্রস্তুত হওয়ার সুযোগ পাননি বাংলাদেশ ক্রিকেটাররা। মঙ্গলবার ও বুধবার অনুশীলন করেছেন। কোবমা ওভালেই প্রস্তুত হয়েছেন। একই মাঠে আজ প্রস্তুতি ম্যাচে খেলতে নামবেন। এতদিন নিজেদের মধ্যে বল-ব্যাটের অনুশীলন হলেও এবার নিউজিল্যান্ডের ঘরোয়া লীগের ক্রিকেটারদের বিপক্ষে খেলবেন মাশরাফি, মুশফিক, সাকিব, তামিমরা। এ ম্যাচটি শেষে শুক্রবার ক্রাইস্টচার্চে চলে যাবে বাংলাদেশ দল। ক্রাইস্টচার্চে ২৬ ডিসেম্বর বক্সিং ডে’তে প্রথম ওয়ানডে দিয়ে তিন ম্যাচের ওয়ানডে, তিন ম্যাচের টি২০ ও দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ শুরু হবে। ২৬, ২৯ ও ৩১ ডিসেম্বর যথাক্রমে ক্রাইস্টচার্চে প্রথম, নেলসনে দ্বিতীয় ও তৃতীয় ওয়ানডে অনুষ্ঠিত হবে। এরপর ৩, ৬ ও ৮ জানুয়ারি যথাক্রমে নেপিয়ারে প্রথম, মাউন্ট ম্যাঙ্গানুইয়ে দ্বিতীয় ও তৃতীয় টি২০ ম্যাচ হবে। সবশেষে ১২ জানুয়ারি ওয়েলিংটনে প্রথম ও ২০ জানুয়ারি ক্রাইস্টচার্চে দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট ম্যাচটি শুরু হবে। ক্রাইস্টচার্চে খেলা দিয়ে মূল সিরিজের লড়াই শুরু করবে বাংলাদেশ দল। সেই ক্রাইস্টচার্চেই হবে সিরিজের শেষ ম্যাচটিও। এই সিরিজে খেলতে নামার আগে আজ নিউজিল্যান্ডে একমাত্র প্রস্তুতি ম্যাচটি খেলবে বাংলাদেশ দল। প্রস্তুতি ম্যাচে দল যেমনই করুক, ম্যাচটির মাধ্যমে বাংলাদেশ ক্রিকেটাররা কিভাবে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে খেলতে হবে তার আগাম ধারণা পাবে। এটিই প্রস্তুতি ম্যাচের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিক হয়ে দাঁড়াবে। যেটি বাংলাদেশ দলের অনেক উপকারও করে দিতে পারে। মূল সিরিজে এ প্রস্তুতি ম্যাচের শিক্ষা কাজে দিতে পারে। বিদেশের মাটিতে দুই বছর পর সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ। সেই সিরিজটি খেলবে আবার নিউজিল্যান্ডের মতো কঠিন কন্ডিশনে। যে কন্ডিশনে বোলাররা সুবিধা করতে পারলেও ব্যাটসম্যানরা হাবুডুবু খান। এমন কন্ডিশনে ভাল কিছু করে দেখাতে পারলেইতো দেশের মাটিতে টানা ভাল অর্জনের ফল মিলবে। বিদেশের মাটিতে ধারাবাহিকভাবে ভাল করার ইঙ্গিতও মিলবে। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে আবার ২০১০ সালের পর দ্বিপক্ষীয় সিরিজে খেলবে বাংলাদেশ। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে এখন পর্যন্ত টেস্ট (৫টি), ওয়ানডে (৬টি) ও টি২০ (১টি) মিলিয়ে ১২ ম্যাচ খেলে বাংলাদেশ। সবকটিতে হারে। তবে এবার বাংলাদেশ দলটি নিয়ে বেশিই আশা আছে। দলটি যে এখন ভিন্ন দল। আগের চেয়ে অনেক উন্নত দলও। সাফল্যের ধারাবাহিকতাতেও আছে। নিউজিল্যান্ডকে দেশের মাটিতে হোয়াইটওয়াশ করার ইতিহাসও আছে। এবার নিউজিল্যান্ডকে তাদের মাটিতে হারানোর পালা। নিউজিল্যান্ড কোচ মাইক হেসন অবশ্য বাংলাদেশের দুই ক্রিকেটারকে নিয়ে যেন শঙ্কায় আছেন। সেই দুইজন হচ্ছেন বাংলাদেশ অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান ও ‘কাটার মাস্টার’ মুস্তাফিজুর রহমান। এ দুইজন খেলার ফল ঘুরিয়ে দেয়ার ক্ষমতা রাখেন। সাকিব হচ্ছে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারদের একজন। আর মুস্তাফিজতো পুরো বোলিং সুবিধাই ভোগ করবে। নিউজিল্যান্ডের কন্ডিশন মুস্তাফিজের বোলিংয়ের জন্য আদর্শ। আরও ভয়ঙ্কর হয়ে ধরা দিতে পারেন মুস্তাফিজ। হেসন তাই এ দুই ক্রিকেটারকে নিয়ে ভাবনাতে আছেন। নিজেই কয়েকদিন আগে বলেছিলেন, ‘এ বছর মুস্তাফিজ আইপিএলে ঝড় তুলেছে আর ভবিষ্যতে সে ক্রিকেট বিশ্বের বড় তারকা। সে এখন?ই ইনজুরি থেকে ফিরেছে। মাঠের খেলায় কেমন করবে সেটিই দেখা বিষয়। সাকিব বর্তমানে বিশ্বের দুই নম্বর সেরা ?অলরাউন্ডার। তার বাঁহাতি স্পিন ও মিডল অর্ডারে ব্যাটিং খুবই ভয়ানক।’ হেসন বাংলাদেশ দলটিকে নিয়ে বলেন, ‘ঘরের মাঠে বাংলাদেশ দলটি দুর্দান্ত। আর দেশের বাইরে গত বিশ্বকাপেও ভাল করেছে দলটি। ওদের বিপক্ষে সর্বশক্তি দিয়ে মাঠে না খেললে যে কোন দলকেই হারাতে পারবে এবং তা গত ৩-৪ বছরে দেখে আসছি।’
×