স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ যাকে নিয়ে বেশি কথা হচ্ছিল, সেই টেস্ট অধিনায়ক এ্যালিস্টার কুক বাংলাদেশ সফরে আসার বিষটি নিশ্চিত করেছেন। এমন কি ইংল্যান্ড সহকারী কোচ পল ফারব্রেসও আসছেন, হার্ডহিটার ব্যাটসম্যান জনি বেয়ারস্টোর মনোভাব ইতিবাচক। বলতে গেলে ইংলিশ গণমাধ্যমের সুরটাই তো বদলে গেছে। অথচ দোটানায় ওয়ানডে অধিনায়ক ইয়ন মরগান, ফলে এখনও দল ঘোষণা করতে পারেনি ইংলিশ এ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি)। এই অবস্থায় আবারও নিজের দ্বিধার কথা জানালেন মরগান, ‘আমি এখনও মনস্থির করিনি। আমার যতটা প্রয়োজন সময় নেব (সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য)। কারণ এটি খুবই কঠিন একটি সিদ্ধান্ত। আশাকরি ইসিবি আমাদের অতিরিক্ত সময় দেবে, যা সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়ক হবে।’ শনিবার স্থানীয় ডেইলি মেইলকে বলেন মরগান।
অথচ রঙিন পোশাকের অধিনায়ক হিসেবে মরগানের সিদ্ধান্তটাই বেশি জরুরী। বাংলাদেশ সফরে ইংলিশরা প্রথমে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে অংশ নেবে। মিরপুরে প্রথম ওয়ানডে ৭ অক্টোবর, ৯ ও ১২ অক্টোবর বাকি দুই ওয়ানডে যথাক্রমে মিরপুর ও চট্টগ্রামে। মরগান মনে করেন না যে তার সিদ্ধান্তহীনতা অন্য খেলোয়াড়দের ওপর প্রাভাব ফেলবে, ‘অবশ্যই নয়। এটা সবার ব্যক্তিগত ব্যাপার। ইসিবি আগেই সেটি বলেছে। কেউ বাংলাদেশে যেতে না চাইলে সবারই উচিত তার পাশে থাকা। এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ।’ ইসিবি যখন সফরের ব্যাপারে চূড়ান্ত ঘোষণা জানিয়ে দেয় মরগান তখনও এভাবেই কথা বলেছিলেন। ওয়ানডে-টি২০ অধিনায়ক আসলে পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করছেন, ‘সন্ত্রাসী হামলার (গুলশানে) মাস দু’য়েকের মধ্যে আপনার সামনে অনেক তথ্য আসবে। সবকিছু হজম করার ব্যাপার থাকে। থিতু হয়ে ক্রিকেটে মন দেয়ার কথা ভাবতে হয়।’ তিনি আরও জানিয়েছেন পাকিস্তানের সঙ্গে (ইংল্যান্ডে) সিরিজ চলছে বলে বাংলাদেশ সফর নিয়ে সেভাবে ভাবার সুযোগ হয়নি। আজই পঞ্চম ও শেষ ওয়ানডে, এরপর রয়েছে একটি টি২০। ৯ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ সফরের দল ঘোষণার নতুন তারিখ। ততদিনে খেলোয়ড়রা ঠা-া মাথায় ভাবতে পারবেন বলে মনে করেন মরগান। তবে মরগানদের সহকারী কোচ ফারব্রেসের সিদ্ধান্তটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ২০০৯ সালে পাকিস্তানের লাহোরে বন্ধুকধারীদের হামলার সময় সহকারী কোচ হিসেবে শ্রীলঙ্কার টিম বাসেই ছিলেন তিনি। ইসিবির নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ রেগ ডিকাসনের ওপর সবার পূর্ণ আস্থা রাখা উচিত বলে মনে করেন ফারব্রেস, ‘আমার সত্যিই কোন সিদ্ধান্ত নেয়ার ছিল না। গত সপ্তাহে লন্ডনে ইসিবির মিটিংয়ে আমি ছিলাম, সবার কথা শুনেছি। সেখানে আমি এমন কিছু শুনিনি, যা বাংলাদেশে যাওয়ার ব্যাপারে আমাকে বিচলিত করতে পারে।’ ডিকাসনের মতো ঝানু নিরাপত্তা বিশ্লেষকের ওপর পূর্ণ আস্থা তার, ‘ডিকাসনকে নিয়ে সন্দেহ থাকার কোন কারণ নেই। লংহাম হোটেলে (মিটিংয়ে) রেগ যা কিছু বলেছেন তাতে মনে করি আমরা সবাই আত্মবিশ্বাসী। তিনি বিশ্বের নেতৃস্থানীয় একজন বিশেষজ্ঞ। বাংলাদেশে যাওয়ার ব্যাপারে আমার কোন দ্বিধা নেই।’ চলতি মাসের শেষদিকে দ্বিতীয় সন্তানের বাবা হতে যাচ্ছেন ইংল্যান্ড টেস্ট অধিনায়ক এ্যালিস্টার কুক। দেশের ক্রিকেটের স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে তিনিও এরই মধ্যে বাংলাদেশে আসার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। অথচ ওয়ানডে অধিনায়ক মরগান সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন। উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান জনি বেয়ারস্টোও পুরোপুরি সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি, তবে তার বক্তব্য ইতিবাচক, ‘এটা ঠিক যে ব্যক্তিগতভাবে আমি এখনও শতভাগ সিদ্ধান্ত নিতে পারিনি। তবে নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ ডিকাসনের ওপর যথেষ্ট আস্থা আছে আমার। তার সঙ্গে অনেক সফরে গিয়েছি। যখন ছোট ছিলাম তখন থেকেই তিনি আমাকে ভালভাবে জানেন। লন্ডনের মিটিংয়ে তাকে অনেক প্রশ্ন করেছি, যা স্বাভাবিক। তবে আমি আত্মবিশ্বাসী, যে সিদ্ধান্তই নেব সেটি ইতিবাচক হবে।’ বাংলাদেশ সফরে ওয়ানডে শেষে দুটি টেস্ট খেলবে কুলিন ইংলিশরা। চট্টগ্রামে প্রথম টেস্ট ২০ অক্টোবর, ঢাকায় দ্বিতীয় ও শেষটি ২৮ অক্টোবর থেকে। মাঝে ফতুল্লা ও চট্টগ্রামে রয়েছে তিনটি প্রস্তুতি ম্যাচ।