ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

লড়াকু আরামবাগের প্রতিপক্ষ উজ্জীবিত বিজেএমসি

প্রকাশিত: ০৭:০৯, ২৩ জুন ২০১৬

লড়াকু আরামবাগের প্রতিপক্ষ উজ্জীবিত বিজেএমসি

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ দুটি দলই এর আগে ফেডারেশন কাপ ফুটবলের শিরোপা জেতার খুব কাছ থেকে ঘুরে এসেছে। আজ বিকেল পৌনে ৪টায় শুরু হবে জমজমাট সেমির এই দ্বৈরথ, যাতে অংশ নেবে শিরোপার স্বপ্নে বিভোর দুই দল আরামবাগ ক্রীড়া সংঘ বনাম টিম বিজেএমসি। এ পর্যন্ত তারা ম্যাচ খেলেছে তিনটি। গোল তেমন করতে পারেনি। তিন ম্যাচে করেছে মোটে চার গোল। দলের কোন ফুটবলার হ্যাটট্রিক করতে পারেননি। সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকাতেও নেই কারও নাম। তারপরও দলটি তুমুল আলোচনায় এবং শিরোপা জয়ের ক্ষেত্রে অন্যতম ফেবারিটও বটে! আর কেনই বা হবে না? তিন ম্যাচের মধ্যে তারা হারিয়েছে এমন দুটি দলকে, যারা ছিল এই টুর্নামেন্টের হট ফেবারিট। আটবারের চ্যাম্পিয়ন ঢাকা আবাহনী লিমিটেড। অন্যটি এই টুর্নামেন্টের টানা দু’বারেরই চ্যাম্পিয়নÑ শেখ জামাল ধানম-ি ক্লাব লিমিটেড! আরামবাগ ছিল গ্রুপ ‘এ’ তে। নিজেদের প্রথম ম্যাচেই তারা ১-০ গোলে ঢাকা আবাহনীকে হারিয়ে আলোড়ন সৃষ্টি করে। পরের ম্যাচে অবশ্য নিজেদের চেয়ে তুলনামূলক খর্বশক্তির সকার ক্লাব ফেনীকে হারাতে পারেনি। ড্র করে ১-১ গোলে। তাতে অবশ্য গ্রুপসেরা হয়ে আরামবাগের শেষ আটে নাম লেখাতে কোন সমস্যা হয়নি (২ ম্যাচে ১ জয়, ১ ড্রতে ৪ পয়েন্ট)। কোয়ার্টারে গিয়ে তারা সবচেয়ে বড় অঘটনটি ঘটায়। টাইব্রেকারে ৫-৪ (২-২) গোলে পরাভূত করে মোট তিনবারের চ্যাম্পিয়ন শেখ জামাল ধানম-িকে। এই ম্যাচে আরামবাগের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে- তারা দুই গোল হজম করেও দুই গোল শোধ করে এবং ম্যাচ জিতে নেয় টাইব্রেকারে। এবার আসা যাক টিম বিজেএমসির প্রসঙ্গে। ‘ডি’ গ্রুপের দল বিজেএমসির গ্রুপ পর্বের লড়াইটা অনেকটা আরামবাগের মতোই। তারাও হয় গ্রুপ সেরা (২ ম্যাচে ১ জয়, ১ ড্রতে ৪ পয়েন্ট)। প্রথম ম্যাচে তারা ১-১ গোলে ড্র করে রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস সোসাইটির সঙ্গে। পরের ম্যাচেই তারা চমক দেখায় এ আসরে মোট ১০ বারের চ্যাম্পিয়ন ঢাকা মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব লিমিটেডকে ২-১ গোলে হারিয়ে! কোয়ার্টার ফাইনালে তারা হারায় গত টানা দুইবারের রানার্সআপ (চ্যাম্পিয়ন তিন বার) বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্রকে। এর আগে ফেডারেশন কাপে দু’বার ফাইনাল খেলেছে আরামবাগ। প্রথমবার ১৯৯৭ সালে। সেবার তারা হারে আবাহনীর কাছে। এর পুনরাবৃত্তি হয় ২০০১ সালে। সেবার তাদের ‘হন্তারক’ ছিল মুক্তিযোদ্ধা। পক্ষান্তরে বিজেএমসি এর আগে একবারই ফেডারেশন কাপের ফাইনাল খেলে। ২০১১ সালে সেবার তাদের হারিয়ে শিরোপাবঞ্চিত করেছিল শেখ জামাল ধানম-ি। আরামবাগের সবচেয়ে বড় শক্তি তাদের কোচ সাইফুল বারী টিটু। জাতীয় দলেও যার রয়েছে কোচিং-অভিজ্ঞতা, সেই টিটু দলের দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই যেন দলের খোলনলচে পাল্টে গেছে। এক্ষেত্রে কোচের রণকৌশলের পাশাপাশি উল্লেখ করতে হবে দলের নতুন বিদেশী এবং স্থানীয় ফুটবলারদের কুশলতার কথা। ডিফেন্সে ঘানার ইসা ইউনুফ, মিডফিল্ডে ব্রাজিলের থিয়াগো টইসন, ক্যামেরুনের ইয়োকো স্যামনিক ফরোয়ার্ডে নাইজিরিয়ান কেস্টার এ্যাকন ... এদের নিপুণ দক্ষতাতেই এতদূর এসেছে দলটি। পক্ষান্তরে আগে ততটা না হলেও দলকে শেষ চারে উঠিয়ে আলোচিত হচ্ছেন বিজেএমসির কোচ সাইদুল ইসলাম। এই দ্রোণাচার্য্যরে পরীক্ষিত শিষ্যরা হচ্ছেনÑ গোলরক্ষণে আরিফুজ্জামান হিমেল, রক্ষণভাগে খান মোঃ তারা, ক্যামেরুনের বাইবেক এসাই, মধ্যমাঠে আবদুল্লাহ্ আল পারভেজ, নাইজিরিয়ার স্যামসন ইলিয়াসু, আক্রমণভাগে নাইজিরিয়ার এলেটা কিংসলে এবং মেহেদী হাসান তপু। তপু তো তিন গোল করে এখন পর্যন্ত এই আসরের সর্বোচ্চ গোলদাতা (যৌথভাবে শেখ জামালের ল্যান্ডিং ডার্বোয়ের সঙ্গে)। আরামবাগের তৃতীয়, না বিজেএমসির দ্বিতীয়? এখন দেখার বিষয়, আজকের দ্বৈরথে বিজয়ী হয়ে এটা কততম ফাইনাল হয় দুই দলের।
×