ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

তাহিরের রেকর্ডে প্রোটিয়াদের বিশাল জয়

প্রকাশিত: ০৬:৪৭, ১৭ জুন ২০১৬

তাহিরের রেকর্ডে প্রোটিয়াদের বিশাল জয়

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিংয়ের সময় এবং শেষ হওয়ার পর আলোচনায় ছিলেন হাশিম আমলা। ক্যারিয়ারের ২৩তম সেঞ্চুরি হাঁকান তিনি ক্রিকেট ইতিহাসে সবচেয়ে কম ইনিংস ব্যাট করে। ৪ উইকেটে ৩৪৩ রানের বিশাল সংগ্রহ পায় প্রোটিয়ারা। কিন্তু সেন্ট কিটসের ওয়ার্নার পার্ক তখনও একটি ইতিহাসের সাক্ষী হওয়ার অপেক্ষায় ছিল। বোলিং করতে এসে স্পিন জাদু দেখিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে ওয়ানডে ইতিহাসের সেরা বোলিং করেন লেগস্পিনার ইমরান তাহির। ক্যারিয়ারসেরা বোলিং করে প্রোটিয়া ক্রিকেটে নতুন রেকর্ড গড়ে মাত্র ৪৫ রানে ৭ উইকেট নিয়ে তিনি ক্যারিবীয়দের ৩৮ ওভারে ২০৪ রানে গুটিয়ে দেন। বুধবার রাতে ত্রিদেশীয় সিরিজের ষষ্ঠ ম্যাচে ১৩৯ রানের বিশাল জয় পায় দক্ষিণ আফ্রিকা। নিজেদের চতুর্থ ম্যাচে দ্বিতীয় হারে বেশ চাপের মুখেই পড়ল স্বাগতিক উইন্ডিজ। সেন্ট কিটস আগে থেকেই রানের পাহাড় গড়ার ক্ষেত্রে বেশ সুপরিচিত। এখানে সর্বোচ্চ ৩৭৭ রানের ইনিংসও গড়েছিল অস্ট্রেলিয়া ২০০৭ সালের ২৪ মার্চ দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। এরপরও টস জিতে আগে প্রোটিয়াদের ব্যাটিংয়ে পাঠায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তাদের বিপক্ষে এ মাঠে সর্বাধিক ৮ উইকেটে ৩৪১ রান করেছিল অসিরা ২০০৮ সালের ৬ জুলাই। তবে এদিন শুরুটাই উড়ন্ত গতির হয়েছে প্রোটিয়াদের। আমলা ও কুইন্টন ডি কক ১৮২ রানের জুটি গড়েন ৩৩ ওভারে। আর এতেই বড় সগ্রহের ভিত পেয়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা। দ্রুতগতিতে ক্যারিয়ারের ২৩তম সেঞ্চুরি করেন আমলা। দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে ওয়ানডেতে দ্বিতীয় সর্বাধিক সেঞ্চুরির মালিক আমলা এখন এক ধাপ পিছিয়ে অধিনায়ক এবি ডি ভিলিয়ার্সের চেয়ে। ভিলিয়ার্সের শতক ২৪। এখনও খেলা চালিয়ে যাওয়াদের মধ্যে ভিলিয়ার্স ছাড়া শুধু ভারতের বিরাট কোহলি এগিয়ে আছেন ২৫ শতক হাঁকিয়ে। তবে ২৩ শতক হাঁকানোর ক্ষেত্রে সবচেয়ে দ্রুততম আমলা ১৩২ ইনিংসেই তা করলেন। কোহলির লাগে ১৫৭ ইনিংস! আমলা ৯৯ বলে ১৩ চারে ১১০ রান করার পর কাইর পোলার্ডের বলে সাজঘরে ফেরেন। দ্রুতই দ্বিতীয় সাফল্য পায় ক্যারিবীয়রা। পরের ওভারেই কক ১০৩ বলে ৬ চারে ৭১ রান করার পর জেরেমি টেইলরের বলে বোল্ড হন। কিন্তু এরপরও বড় সংগ্রহ পেতে আটকানো যায়নি প্রোটিয়াদের। আগে ভাগে নেমে ক্রিস মরিস ২৬ বলে ২ চার ও ২ ছক্কায় ৪০ এবং ফাফ ডু প্লেসিস মাত্র ৫০ বলে ৬ চার ও ২ ছক্কায় অপরাজিত ৭৩ রান করার ফলে ৪ উইকেটে ৩৪৩ রান তুলে নেয় প্রোটিয়ারা। পোলার্ড দুটি উইকেট নেন। আন্দ্রে ফ্লেচার ও জনসন চার্লসকে নিয়ে দারুণ জবাব দিতে শুরু করেছিল ক্যারিবীয়রা। ৯ ওভারে ৬৯ রান আসে উদ্বোধনী জুটিতে। তখনই প্রথম আঘাত হানেন তাহির, ফিরিয়ে দেন ফ্লেচারকে (২১)। ৪১ বলে ৭ চার ও ১ ছক্কায় ৪৯ করা চার্লসকে শামসি এবং ডোয়াইন ব্রাভোকে (১১) ওয়েন পারনেল শিকার করে ম্যাচে প্রোটিয়াদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেন। দিনেশ রামদিনকেও (১১) দ্রুতই ফেরান ‘চায়নাম্যান’ শামসি। এরপর ক্যারিবীয়দের আতঙ্কে পরিণত হন তাহির। স্কোরকার্ডে শুধুই এ লেগস্পিনারের নাম! একাই ফিরিয়ে দেন পরের ৬ ব্যাটসম্যানকে। তার ঘূর্ণি ছোবলে শেষ ৫ উইকেট হারায় উইন্ডিজ শিবির ৩৫ রানে। ৩৮ ওভারে মাত্র ২০৪ রানে গুটিয়ে যায় ক্যারিবীয়রা। ৪৫ রানে ৭ উইকেট নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে ওয়ানডের সেরা বোলিং রেকর্ড গড়েন তাহির। ওয়ানডেতে তিনিসহ মোট ১০ বোলার ৭ উইকেট পেয়েছেন। তবে প্রোটিয়া কোন বোলার এই প্রথম। আর তালিকায় তাহির তৃতীয় বোলার। এর আগে পাকিস্তানের শহীদ আফ্রিদি ২০১৩ সালের ১৪ জুলাই প্রভিডেন্সে ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে ১২ রানে ৭ উইকেট নিয়েছিলেন। সেটা ওয়ানডে ইতিহাসের দ্বিতীয় সেরা বোলিং নৈপুণ্য। আর শ্রীলঙ্কার মুত্তিয়া মুরালিধরণ ২০০০ সালের ২৭ অক্টোবর ভারতের বিপক্ষে শারজায় নিয়েছিলেন ৩০ রানে ৭ উইকেট। স্কোর ॥ দক্ষিণ আফ্রিকা ইনিংস- ৩৪৩/৪; ৫০ ওভার (আমলা ১১০, কক ৭১, প্লেসিস ৭৩*, মরিস ৪০, ভিলিয়ার্স ২৭; পোলার্ড ২/৬৪, নারাইন ১/৬৯, টেইলর ১/৭২)। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ইনিংস- ২০৪/১০; ৩৮ ওভার (চার্লস ৪৯, স্যামুয়েলস ২৪, ফ্লেচার ২১, পোলার্ড ২০; তাহির ৭/৪৫, শামসি ২/৪১)। ফল ॥ দক্ষিণ আফ্রিকা ১৩৯ রানে জয়ী। ম্যাচসেরা ॥ ইমরান তাহির (দক্ষিণ আফ্রিকা)।
×